শেরপা কামি রিতা। প্রতি বছরই যেন শৃঙ্গজয়ের এক নিরবচ্ছিন্ন অধ্যায় রচনা করে চলেছেন এই নেপালি। ১৯৯৪ সালে প্রথম এভারেস্ট জয় করেছিলেন। যারা পর্বতারোহণকে কেবল ক্রীড়া নয়, জীবনদর্শন মনে করেন- কামি রিতা তাদের কাছে এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা।
আবারও নিজের গড়া নজির ভাঙলেন কিংবদন্তি শেরপা কামি রিতা। ৫৫ বছর বয়সি নেপালের এই পর্বতারোহী ৩১ বার বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণ করলেন।
মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দলের পথপ্রদর্শক শেরপা কামি রিতা ৮৮৪৯ মিটার (২৯০৩২ ফুট) উঁচু এভারেস্ট শীর্ষ স্পর্শ করেছেন। এভারেস্টজয়ীদের ইতিহাসে এটা এক অনন্য নজির।
নেপালের সলুখুম্বু জেলার থামি গ্রামে কামি রিতার জন্ম। হিমালয়ের কোলে তিনি বেড়ে উঠেছেন। শৈশব থেকেই তার পরিবার শেরপা গাইড হিসেবে কাজ করত। আর তিনিও বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পেশাদার শেরপা হয়ে ওঠেন। তার এই দীর্ঘ পর্বতারোহণ-জীবনে শুধু এভারেস্টই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য উচ্চতম পর্বত যেমন চো ইয়ু, লোৎসে, কাঞ্চনজঙ্ঘা ইত্যাদিতেও সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন। ১৯৫৩ সালে এ পথ ধরেই প্রথম এভারেস্টে আরোহণ করেছিলেন তেনজিং নোরগে এবং এডমন্ড হিলারি।
এভারেস্ট অভিযান সংগঠক সেভেন সামিট ট্রেকস এক বিবৃতিতে বলেছে, শেরপা কামি রিতার পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। তিনি শুধু নেপালের পর্বতারোহণের নায়ক নন, বরং এভারেস্টের বৈশ্বিক প্রতীক।
কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনোজ যোশীর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অ্যাডভেঞ্চার উইং এভারেস্ট অভিযানের একটি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন শেরপা কামি রিতা।
অন্যদিকে সেভেন সামিট ট্রেকসের চেয়ারম্যান মিংমা শেরপা জানিয়েছেন, এই নতুন কীর্তি বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্বত আরোহণের রেকর্ডধারী হিসেবে শেরপা কামি রিতার মর্যাদাকে আরও দৃঢ় করে তুলবে-এটি এমন একটি রেকর্ড; যা অন্য কেউ ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি।
তিনি জানান, কামি রিতা চূড়ায় আরোহণের পর নিরাপদ এবং স্থিতিশীল আছেন। এবার তিনি বেস ক্যাম্পে ফিরে যাচ্ছেন। সব সময়ের মতো কামি পর্বতে তার অতুলনীয় দক্ষতা এবং পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করেছেন। আমরা তার কৃতিত্বের জন্য অত্যন্ত গর্বিত।