রাষ্ট্রকে নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ করছিল শেখ হাসিনা: নয়ন

যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেছেন, বিগত ১৬ বছরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বিরোধী দলের ওপরে জুলুম নিপীড়ন চালিয়ে গুম খুনের ইতিহাস রচনা করে রাষ্ট্রকে নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ করছিল।

রোববার (০৩ নভেম্বর) দিনব্যাপী সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাস ইউনিয়ন বাজার, সদর ধানগড়া বাজার, সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন চত্বর, এসএস রোড কাজীপুর উপজেলায় আলমপুর মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ‘ধানের শীষ’ সম্বলিত লিফলেট এবং রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগকালে ও পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, তারেক রহমান নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। আমাদের রাজনীতি হবে সাম্যের ও মানবিকতার। মনে রাখবেন, গত ১৬ বছর হাসিনাসরকারের কর্মকাণ্ডে মানুষ ক্ষিপ্ত ছিল। ফলে ফ্যাসিস্ট হাসিনাসরকারের পতন হয়েছে। সেটি আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। আগামীতে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে কাজ করতে হবে। কাজেই এখন থেকেই আপনারা নিজেদের সেভাবে প্রস্তুত করুন।

নয়ন আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের পর দেশে বিএনপির মিছিল-মিটিংয়ে শতশত মানুষের উপস্থিতি হয়। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, যাতে আওয়ামী লীগের কোনো চিহ্নিত দালাল, চাঁদাবাজ এবং দুর্বৃত্ত মিছিলে ঢুকতে না পারে। গত ১৬ বছর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করেছেন। কিন্তু নতুনদের ভিড়ে সেই নেতারা যাতে হারিয়ে না যায়, সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

আগামীতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সাম্যের ও মানবিকতার সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত সবাইকে মাঠে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

পথসভার আগে নুরুল ইসলাম নয়ন জনগণের মধ্যে তারেক রহমান ঘোষিত বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন। এসময় তার সঙ্গে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




নিজেদের অনৈক্যের সুযোগে স্বৈরাচার যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে: তারেক রহমান

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনাসহ অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের দোসর-প্রেতাত্মারা এখনো সর্বত্র বসে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা সময়-সুযোগ বুঝে ফের জাতির ঘাড়ে চেপে বসতে পারে।

মনে রাখতে হবে, নিজেদের বিশৃঙ্খলা বা অনৈক্যের সুযোগে ফের স্বৈরাচার যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে না পারে।

 

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে যশোর শহরের মুন্শি মেহেরুল্লাহ ময়দানে (টাউন হল মাঠ) বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপি আয়োজিত স্মরণসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তারেক এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্র-জনতার মহাবিপ্লবের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে উৎখাত করেছি। হাসিনাসহ অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। কিন্তু তাদের দোসর-প্রেতাত্মারা এখনো সর্বত্র বসে আছে। তারা প্রশাসনকে অস্থিতিশীল করে নিজেদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। মনে রাখতে হবে এসব পতিত স্বৈরাচারের দোসররা সময় সুযোগ বুঝে ফের জাতির ঘাড়ে চেপে বসতে পারে।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের পরিণতি কী হতে পারে তা দেশের মানুষ ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে উপলব্ধি করেছে। তাই আগামীর বাংলাদেশ হতে হবে শোষণ, নির্যাতন ও বৈষম্যমুক্ত। মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও গণবিপ্লবের সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

যারা জাতীয়তাবাদের আদর্শ বুকে লালন করেন, তাদের বজ্রকঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, সব রকম ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে দেশকে সত্যিকারের গণতন্ত্রের পথে নিতে হবে। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কেবল সংবিধানে কয়েকটি শব্দ যোজন-বিয়োজন করলেই সংস্কার হবে না। সংস্কার করতে হলে প্রথমেই মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে বিএনপি ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরেছে। সেই দাবি বাস্তবায়নে বিএনপি কাজ করে যাচ্ছে। আপনাদের সেই দাবি পূরণে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, নিজেদের বিশৃঙ্খলা বা অনৈক্যের সুযোগে ফের স্বৈরাচার যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে না পারে।

‘তরিকুল ইসলাম কখনো প্রাচুর্য ও সম্পদের পেছনে ছোটেননি’
প্রয়াত তরিকুল ইসলাম আমৃত্যু মা, মাটি ও মানুষের মুক্তির সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, তিনি কখনো প্রাচুর্য ও সম্পদের পেছনে ছোটেননি।  আজকের নতুন প্রজন্মকে তরিকুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবন ও তার শিষ্ঠাচার থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। ব্যক্তিগত লাভালাভ বা অর্থ-উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে যিনি বা যারা রাজনীতি করেন ও করেছেন; তাদের পরিণতি দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে।

বেলা ৩টায় স্মরণসভা শুরু হলেও তার অনেক আগে থেকেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলে দলে স্মরণসভার স্থান মুন্শি মেহেরুল্লাহ ময়দানে জড়ো হতে থাকেন। টাউন হল মাঠ ছাড়িয়ে জনসমাগম ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের রাস্তায়।

লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আজকের এই স্মরণসভায় হাজারো মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে প্রয়াত তরিকুল ইসলাম কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। তরিকুল ইসলাম সারাজীবনই আদর্শের সঙ্গে কোনো আপস করেননি। স্বৈরাচার এরশাদ আমলে এবং ফ্যাসিস্ট ও পতিত স্বৈরাচার হাসিনার আমলে, ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে তরিকুল ইসলাম বারবার কারাবরণ, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু তিনি কখনো তার আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হননি। মরহুম তরিকুল ইসলামের সঙ্গে আমার কাজ করার বেশি অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও যতটুকু সময় পেয়েছি ততটুকু সময়ে আমি তার কাছ থেকে মানুষের জন্য রাজনীতি করা শিখেছি।

তারেক রহমান বলেন, তিনি বহুবার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তারপরও তিনি শেকড়ের কথা ভোলেননি। তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। আমিও মরহুম তরিকুল ইসলামের এই গুণ থেকে শিক্ষা নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছি। কারণ, মানুষের ভালোবাসা অর্জনের জন্য এই যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই।

বক্তব্যের আগে প্রয়াত তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন তারেক রহমান। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।

তরিকুল ইসলামের বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, ডা. হারুন অর রশীদ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, অধ্যাপক আয়ুব হোসেন, তন্ময় সাহা, এজেড এম সালেক, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন, মোশারফ হোসেন, মাওলানা বেলায়েত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর প্রমুখ।

স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগম, দুই সন্তান শান্তুনু ইসলাম সুমিত ও অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান খান, গোলাম রেজা দুলু, সাবেক পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম মারুফ, একেএম শরফুদ্দৌলাহ ছটলু, মাহাতাব নাসির পলাশ, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাডভোকেট জাফর সাদিক, মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরে নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক , যুবদলের জেলা সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল প্রমুখ। এ ছাড়া স্মরণসভায় খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।




তরুণদের সমর্থন চাইলেন কমলা হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় সোমবার নির্বাচনি প্রচারণার শেষ ভাষণটি দিয়েছেন কমলা হ্যারিস।

জনসমক্ষে ভাষণের শেষ পর্যায়ে তিনি বলেন, এ প্রচারণা আমেরিকার সব কোণের সব শ্রেণির মানুষকে এক জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য বড়- আমরা শক্তি, আশাবাদ ও আনন্দ নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করেছিলাম। ঠিক সেভাবেই শেখ করছি এখন।

তিনি তরুণ ও নতুন ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের আমি বিশেষভাবে বলছি, আমি তোমাদের শক্তি দেখি এবং আমি তোমাদেরকে নিয়ে গর্বিত।

আমেরিকার বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট জানেন যে এবারের নির্বাচনে জয়ী হতে হলে তাকে তরুণ ভোটারদের সমর্থন পেতে হবে।

শেষ প্রচারণায় সংগীতশিল্পী ক্যাটি পেরি ও লেডি গাগা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হ্যারিসের আগমনের আগে উপস্থিত জনতাকে গান গেয়ে উজ্জীবিত করেন।

অন্যদিকে মিশিগানে ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বনির্ধারিত ভাষণ। রিপাবলিকান দলের সমর্থকরা তার নির্বাচনী প্রচারণার এই সর্বশেষ ভাষণ শোনার জন্য কয়েক ঘণ্টা ধরে জড়ো হন।

দুই প্রার্থীই তাদের সমাপ্তি টানেন দেশটির বড় রাজ্যগুলোতে। দেশটির প্রেসিডেন্ট কে হবেন, তা নির্ধারণ করতে এই রাজ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।




ট্রাম্প-কমলা: কে জিতলে বাংলাদেশের কী হবে?

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। জাতীয় এ ভোট পরবর্তী প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি প্রতিনিধি সভা ও সিনেট গঠনও নির্ধারণ করবে।

এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

 

গত কয়েক সপ্তাহের জরিপে দুজনেরই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা গেছে। ভোটের ফল যা-ই হোক না কেন, তা আগামী চার বছরের জন্য মার্কিন রাজনীতি এবং পররাষ্ট্রসহ বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ করবে। আমেরিকার পূর্ব উপকূলে ভারমন্টে স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কানেকটিকাট, ইন্ডিয়ানা, কেনটাকি, মেইন, নিউজার্সি, নিউইয়র্ক এবং ভার্জিনিয়ার ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

ট্রাম্প বা কমলা, মার্কিন মসনদে যিনিই বসুন, বাংলাদেশের কী হবে? দক্ষিণ এশীয় দেশটির বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটিও বড় প্রশ্ন। তাছাড়া ভারতই বা এখানে কতটা ফ্যাক্টর হতে পারে? কিংবা বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন রাজনীতিদের সম্পর্ক কি কোনো ভূমিকা রাখবে?

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। বিশেষ করে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি টুইটকে ঘিরে সেই আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অতীতে মার্কিন রাজনীতিকদের, বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট নেতাদের ভালো সম্পর্ক দেখা গেছে।

বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলোয় জোর দেয় ডেমোক্র্যাট প্রশাসন। কমলা হ্যারিস বা ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলে ব্যবসা-বাণিজ্য, সহযোগিতার জায়গাগুলো বাংলাদেশের জন্য সহজ থাকার সুযোগটা বেশি বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও লেখক মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, কমলা হ্যারিস জয়ী হলে বর্তমান সম্পর্কের ধারাবাহিকতা ও সামঞ্জস্য বজায় থাকবে। কিন্তু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।

তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দেশ যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে।

মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, আমার মনে হয় না ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমান সম্পর্কের কাঠামোকে সমর্থন করবেন। যেখানে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির উন্নয়ন, সংস্কার ও অন্যান্য সহায়তা বা সমর্থন করছে। ট্রাম্প ও তার প্রশাসন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রদানের ওপর জোর দেওয়ার মতো সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির মনে করেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বিশ্বজুড়েই আমেরিকার মানবিক সহযোগিতার জায়গা কমে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য অনিশ্চয়তার জায়গা হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যুও বড় বিষয়। কারণ জাতিসংঘের মাধ্যমে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য আসা সহায়তার বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রথাগত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখা যায়নি। তিনি যেভাবে বৈদেশিক নীতির জায়গাগুলো বিবেচনা করেন, সেটি ঘিরে অনিশ্চয়তাও থাকে। সাধারণত প্রেসিডেন্ট বদল হলেও বৈদেশিক নীতিতে খুব বড় পরিবর্তন হয় না। এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা বা কাঠামোগুলোর একটা শক্তিশালী ভূমিকা থাকে।

তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পকে আমরা দেখেছি কিছু প্রচারণায় ইনস্টিটিউশনকে বদলে দেওয়ার কথা বলছেন। সেটা হলে একটা বড় পরিবর্তন হতে পারে। যদিও বিষয়টি আদৌ কতদূর সম্ভব হবে বা পররাষ্ট্র নীতির জায়গায় প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত একটি টুইট আলোচনা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশে। তবে বিশ্লেষকেরা এটিকে ভবিষ্যৎ নীতির চেয়ে নির্বাচনে আমেরিকার হিন্দু ভোটার টানার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই দেখছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জায়গা থেকে তারা ধারণা করছেন, কিছু লবি গ্রুপ হয়তো বা এটাকে ইনফ্লুয়েন্স করতে চেয়েছে এবং সেই আলোকেই তার এই স্টেটমেন্টটা এসেছে।

লবি গ্রুপ বলতে আওয়ামী লীগ অথবা ভারতকে বোঝানো হয়েছে, এমন আলোচনাও রয়েছে।

বাংলাদেশে বিগত নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে শক্ত অবস্থানে থাকলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের সরকারের প্রতি ভারতের সমর্থনই একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছেন যে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট, দুই পার্টির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভালো সম্পর্ক থাকায় এবং দুই শিবিরেই তার বন্ধু থাকায় এই নির্বাচনের ফলাফলে দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না।

সরকারের তরফ থেকে বাংলাদেশ-আমেরিকার সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না বলা হলেও, ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে বাস্তবতা ভিন্ন হতে পারে বলে মনে করেন মাইকেল কুগেলম্যান। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে যখন ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েছিলেন তার সমালোচনা করেছিলেন ইউনূস। তাদের রাজনৈতিক আদর্শ বা মতাদর্শের জায়গাও ভিন্ন।

ফ্রান্সের এইচইসি প্যারিস নামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে বক্তব্য দেওয়ার সময় ড. ইউনূস ট্র্যাম্পের জয়কে ‘সূর্যগ্রহণ’ বা অন্ধকার সময় হিসেবে বর্ণনা করেছেন বলে হেকের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সেসময় আরেকটি অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে তিনি কী বলতে চাইবেন জিজ্ঞেস করা হলে, তখন ‘দেয়াল’ তৈরি না করে ‘সেতু’ নির্মাণ করে দৃষ্টিভঙ্গি উদার করার কথা এনবিসি নিউজকে বলেছিলেন ড. ইউনূস।

মি. কুগেলম্যানের মতে, কমলা হ্যারিস জিতলে ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্কের জন্য একটা সম্পদ হবেন। কারণ, বাইডেন প্রশাসনের মতো কমলার ক্ষেত্রেও একটা স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা থাকবে। তবে ট্রাম্প জয়ী হলে সে সম্পর্ক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন বলেন, কমলা বা ট্রাম্প, যেই প্রেসিডেন্ট হোক না কেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে একটা নির্ভরযোগ্যতার জায়গা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সামনের নির্বাচন দেরিতে হলেও কবে হবে, কীভাবে হবে, ধাপগুলো কী হবে, অর্থাৎ একটা রোডম্যাপ তুলে ধরতে হবে। এটা বর্তমান সরকারের বৈধতার ইমেজ এবং সমর্থনের জায়গা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।

অবশ্য বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমেরিকার জন্য বাংলাদেশ নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামানোর সুযোগ হবে বলেও মনে করেন হুমায়ুন কবির ও মেহনাজ মোমেন।

ব্যবসা বাণিজ্য, কৌশলগত, ভূরাজনৈতিক, এমন নানা দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা সম্পর্কে আগ্রহের জায়গা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেদেরকে বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে। সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে এই অঞ্চলে মনোযোগটা বাড়াচ্ছে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেখানে বাংলাদেশ কিন্তু একটা বড় জনগোষ্ঠীর দেশ যারা বেশ সক্রিয়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে এশিয়ার সংযোগস্থল এবং বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে থাকায় সেখানে ভূরাজনৈতিক একটা আগ্রহ থাকে। সম্প্রতি সামরিক দিক থেকেও কিন্তু ডাইভার্সিফিকেশনের চিন্তা আমরা করছি। সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র-শস্ত্র বিক্রি করতে আগ্রহী হবে।

বাংলাদেশকে ‘উঠতি বাজার’ বিবেচনায় ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের জায়গা রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জাম, বোয়িং বিমান, গ্যাস বা এলএনজির কথা উল্লেখ করেন এম হুমায়ুন কবির।

এছাড়া বাংলাদেশের বহু মানুষ আমেরিকায় বসবাস করেন, পড়াশোনা করতে যান। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুত্বের জায়গা রয়েছে। প্রযুক্তিগত দিক দিয়েও ক্রেডিট কার্ড বা কম্পিউটার ব্যবহার করতে গেলেও তাতে কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্র লাভবান হয়।

বৈদেশিক নীতিতে সাধারণত বিশ্বের অন্যান্য দেশ বা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে স্বার্থের সমীকরণ গুরুত্ব রাখে। তবে আমেরিকার জন্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এবার নতুন সমীকরণের জায়গা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সম্পর্ক। এসব নানাবিধ ফ্যাক্টর মিলেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কটা নির্ধারণ হবে।




প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করেছেন।

নেতানিয়াহু বলেছেন, তাদের মধ্যে ‘বিশ্বাসের সংকট’ দেখা দিয়েছিলো।

খবর বিবিসি

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাটজকে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের কথা জানিয়ে নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, গ্যালান্টের উপর তার আস্থা সাম্প্রতিক সময়ে ‘ক্ষয়’ হয়েছে।

বরখাস্ত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে গ্যালান্ট লিখেছেন, ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল এবং থাকবে।

নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত বছর ধরে ইসরায়েলের যুদ্ধ কৌশল নিয়ে দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের খবর পাওয়া যায়।

গ্যালান্ট গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে হামাসের সঙ্গে একটি জিম্মি মুক্তির চুক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে চেয়েছিলেন,
যা নেতানিয়াহু  প্রত্যাখ্যান করেন। তাছাড়া গ্যালান্ট ইসরায়েলের আল্ট্রা অথ্রোডক্স নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পরিকল্পনায়ও অসন্তুষ্ট ছিলেন।

গ্যালান্টকে বরখাস্ত করাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই তেল আবিবের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে এবং নেতানিয়াহু রাজনৈতিক বিরোধীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।




ট্রাম্প আসলে কতটা শান্তিবাদী

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বে শান্তি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি আসলে শান্তিবাদী কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এ জন্য প্রশ্ন উঠেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত বিশ্বে ট্রাম্প কী শান্তি ফেরাতে পারবেন।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি ক্ষমতায় এসে প্রথমেই ইয়েমেনে গণহত্যার জন্য সৌদি বহুজাতিক বাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে সৌদি আরব ও আমিরাতে বোমা ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কয়েকবার পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি তৈরি করেছিলেন। ইরানের সঙ্গে মার্কিন বিরোধ চরমে উঠেছিল। ভিনেজুয়েলায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। বলকান ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে মার্কিন সামরিক ব্যয় বাড়ানো হয়েছিল।

ট্রাম্প বিদেশে যুদ্ধ-সহিংসতায় সবসময় উৎসাহ দিতেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ তিনি উদযাপন করেছিলেন। তাছাড়া ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজা ও লেবাননে হামলা করতে ইন্ধন যুগিয়েছিলেন। সেই ট্রাম্প গত শুক্রবার এক নির্বাচনী সমাবেশে ঘোষণা দেন, ‘আমরা পৃথিবীতে শান্তি চাই’।
ট্রাম্প প্রায়ই অভিযোগ করেন, তার প্রতিপক্ষ নেতারা যুদ্ধবাজ। তিনি কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে বিশ্বে হত্যাকাণ্ড বাড়বে। এমনকি কমলা বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি নিয়ে যাবেন।

অ্যাডভোকেসি গ্রুপ উইন উইদাউট ওয়ারের নির্বাহী পরিচালক সারা হাগদুস্তি মনে করেন, ট্রাম্প নিজেকে শান্তিবাদী প্রার্থী হিসেবে জাহির করেছেন, যা একেবারেই অযৌক্তিক। হাগদুস্তি বলেন, ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি ছিন্ন করেন ও বেপরোয়াভাবে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করেন। এতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে যায়।

এদিকে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে রাশিয়া ইউরোপের দিকে আক্রমণাত্মক হাত প্রসারিত করতে পারে। এতে বিশ্বশান্তি চরম হুমকিতে পড়বে। খবর হাফপোস্টের।




ধর্মনিন্দার জন্য ব্লগারের বিরুদ্ধে মৃত্যু স্লোগান

বাংলাদেশে ইসলাম ও ধর্মীয় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার পোস্ট করার জন্য অভিযুক্ত একজন ব্লগার কামরান হোসেনের ছবি পোড়ানোর ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের সদস্যসহ বিক্ষোভকারীরা ব্লগারকে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছে।

প্রতিবাদকারীদের মতে, ব্লগার তার ওয়েবসাইট www.search70.com-এ অভিযোগ করেছেন যে সে শিশুকালে ধর্ষনের শিকার হয়েছিলেন তার জামায়াত-ই-ইসলামী কুরআন শিক্ষকের দ্বারা। তারা দাবি করে যে তার ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশের ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে ছেলেদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রবন্ধে ভরা। বিশেষ করে, প্রতিবাদকারীরা নিবন্ধগুলি তুলে ধরে যেখানে তিনি যুক্তি দেন যে, যেহেতু কুরআন এবং নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ছেলেদের যৌন নির্যাতনকে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করেনি, তাই ধর্মগুরুরা তাদের যত্নে ছোট বাচ্চাদের ধর্ষণ করছে। এমনকি তিনি দাবি করেন যে আজকের মানদণ্ড অনুসারে, ইসলামের নবীকে বিবেচনা করা হবে একজন পেডোফাইল হিসাবে

 

 

প্রতিবাদকারীরা যুক্তি দেয় যে এই বিবৃতিগুলি, তার নিবন্ধগুলিতে অন্যান্য দাবিগুলি ধর্মনিন্দার সামিল। উলামা এবং আলেমরা প্রকাশ্যে ব্লগারকে হত্যার আহ্বান জানিয়েছেন।




প্রাক্তনের কথা ভেবে কান্না পাচ্ছে? নিজেকে সামলাবেন যেভাবে

একসঙ্গে চলতে চলতে কখনো যদি সঙ্গী হাত ছেড়ে দেয়, যদি সম্পর্কের সুতোটা মাঝপথে ছিড়ে যায়, তাহলে এর কষ্ট মেনে নেওয়া অনেক কঠিন। সম্পর্ক ভাঙলে যতোটা না খারাপ লাগে, তার চেয়ে বেশি খারাপ লাগে তার অনুপস্থিতি, তার সঙ্গে যোগাযোগ না থাকা। অনেক দিনের অভ্যাসে পরিবর্তন আসায় মাঝরাতে বুকটা হাহাকার করে ওঠে। মনে হয় তাকে ছাড়া পুরো পৃথিবীটা শূন্য। কিন্তু আপনি তো সম্পর্কে নেই। সঙ্গী আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে। এটাই বাস্তব।

বাস্তব যতো কঠিন হোক, তাকে মেনে নিতেই হবে। অনেক সময় এমনও হয়, আপনার প্রিয় মানুষটা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে। কিন্তু আপনি এখনো সেই একই জায়গায় পড়ে আছেন। তাকে ভেবে কান্না করছেন, বার বার তাকে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ফলো করছেন। এবার থামতে হবে। মুভ অন করতেই হবে। আপনাকেও জীবনে এগিয়ে যেতে হবে।

প্রাক্তনকে ভুলে নিজেকে সামলাতে যা করবেন 

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ব্লক করুন
ব্রেকআপ হওয়ার পর ঘন ঘন প্রাক্তনকে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টক করা, তার প্রতিটি পোস্ট ফলো করা, তার পোস্টে কে কে লাইক-কমেন্ট করছে তা দেখা বন্ধ করুন। তার সঙ্গে আপনার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। সুতরাং তাকে ফলো না করে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ব্লক করে দিন।

ক্ষমা করতে শিখুন
মানুষ মাত্রই ভুল। সম্পর্কে থাকাকালীন আপনারা দুজনই কিছু না কিছু ভুল করেছেন। সব ভুল ক্ষমা করে দিন। যদি প্রাক্তনের ভুল ক্ষমা করে দিতে পারেন, আপনিই সুখী থাকবেন। এতে জীবনে চলার পথে আঘাত কম পাবেন। যদি প্রাক্তন ফিরতে চায়, তাহলে নিজেই বুঝতে পারবেন কোনটা আপনার জন্য ভালো আর কোনটা নয়।

ভালোবাসা ভুল নয়
আপনি তাকে এখনো ভালোবাসেন। কিন্তু তিনি ভালোবাসেন না। এতে কোনো  ক্ষতি নেই। বরং, এই ভালোবাসাটাকে সম্মান করতে শিখুন। এক তরফা ভালোবাসায় কষ্ট আছে ঠিকই, কিন্তু কোনো ভুল নেই। আপনি যদি কাউকে ভালোবাসেন, তা হলে গর্ববোধ করুন। ভালোবেসে কষ্ট পাবেন না।

বাস্তবকে স্বীকার করুন
সম্পর্কে বিচ্ছেদ হতে পারে। দুজন মানুষের মধ্যে মনোমালিন্য হতেই পারে। যে মানুষটা কাল সারাক্ষণ আপনার খবর নিতো, সে আজ খোঁজও নেয় না। এমন হওয়াও স্বাভাবিক। শুধু আপনাকে বাস্তবটা গ্রহণ করতে হবে। সত্যিকে এড়িয়ে গিয়ে লাভ হবে না। বরং, বাস্তবকে মেনে নিলে জীবনে সামনে এগিয়ে যেতে সুবিধা হবে।

নিজেকে ভালোবাসতে ভুলবেন না
সঙ্গী ছেড়ে গেছে বলে আপনি নিজেকে ভালোবাসতে ভুলে যাবেন, তা যেন না হয়। বরং নিজেকে ভালো রাখুন। আপনার যা করতে ভালো লাগে, যেসব কাজ আপনাকে আনন্দ দেয় সেগুলো করুন। নিজের জন্য বাঁচতে শিখুন।




আওয়ামী লীগের সহিংস মহিলা গ্যাংস্টার এবং তার ছেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে

সতর্ক বিচার গোষ্ঠীগুলি মোছা: আকলিমা খাতুন এর জন্য তাদের অনুসন্ধান জোরদার করছে যিনি “আকলিমা বেগম” নামেও পরিচিত, আওয়ামী লীগের একজন কুখ্যাত সমর্থক এবং তার ছেলে মোঃ হুমাইয়ূন কবীর, উভয়েই শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধী কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত। আকলিমা বেগম ছিলেন আওয়ামী লীগের ভিন্নমত দমনের অন্যতম প্রধান কর্মী। তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা শেখ হাসিনার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে হিংসাত্মক বিক্ষোভ সংগঠিত করা এবং নিরপরাধ বিরোধী ব্যক্তিদের উপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং পরবর্তীকালে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন কোটা আন্দোলনের প্রতিবাদের মধ্যে ভারতে তার পালিয়ে যাওয়ার পর, যারা সহিংসতাকে ইন্দন দিয়েছিলো তাদের অনুসন্ধান আরও তীব্র হয়েছে। আকলিমা বেগম যশোরে লুকিয়ে আছেন এবং তার ছেলে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেন যে খাতুন সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর বেশ কিছু নৃশংস দমন অভিযানের সমন্বয় করেছিলেন, তার ছেলে অনেক হিংস্র কর্মীকে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়ার খবর রয়েছে। ছাত্ররা এখন তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে, জনসাধারণকে এই পলাতকদের সনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে এমন কোনও তথ্য নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।




ডিএসএ ২০১৮-এর অধীনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন সম্পাদক

আওয়ামী লীগ বিরোধী অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য www.provatbangla.com এর সম্পাদক ইয়েসমিন রুকায়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশ এখন নিশ্চিত করেছে যে তারা ইয়েসমিন রুকায়ার ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য থেকে তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে এবং যশোরে তার আবাসিক ঠিকানা পরিদর্শন করেছে পুলিশ। পুলিশের মতে, ইয়েসমিন রুকায়া বর্তমানে দেশের বাইরে, তবে সাইবার সিকিউরিটি আইন ২০২৩ এর অধীনে অপরাধের জন্য বাংলাদেশে ফিরলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে, যা পুলিশকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই কাউকে গ্রেপ্তার করার অনুমতি দেয়।

আমাদের কাছে আরও তথ্য আসলে আমরা এই বিভাগটি আপডেট করব।