জ্বর থেকে মুক্তির জন্যে যে দোয়া শিখিয়েছেন নবীজি

শরীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে জ্বর বলা হয়। মানুষের জন্য এটি একটি স্বাভাবিক অসুস্থতা।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জ্বর দীর্ঘস্থায়ী ও প্রাণঘাতীও হতে পারে। আর এখন আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়। এ সময়গুলোতে শরীরে জ্বর, ঠাণ্ডা ইত্যাদি বিষয়ে সাবধানতার পাশাপাশি দোয়া পাঠ করার শিক্ষা দেয় ইসলাম।

হাদিসে বর্ণিত জ্বর থেকে মুক্তিলাভের দোয়াটি হচ্ছে- بِسْمِ اللَّهِ الْكَبِيرِ أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ مِنْ شَرِّ عِرْقٍ نَعَّارٍ وَمِنْ شَرِّ حَرِّ النَّارِ ‘বিসমিল্লাহিল কাবির, আউজুবিল্লাহিল আজিমি মিন শাররি ইরকিন না’আর, ওয়া মিন শাররি হাররিন নার।’ অর্থ: মহান আল্লাহর নামে, আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি; প্রবল প্রবহমান রক্তচাপের আক্রমণ থেকে এবং জাহান্নামের উত্তপ্ত আগুনের অনিষ্ট থেকে।’ (তিরমিজি: ২০৭৫; নাসায়ি; মকবুল দোয়া: ১৬৩)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘জ্বর ও অন্যান্য ব্যথায় আল্লাহর রাসুল (স.) আমাদের এই দোয়াটি পড়ার শিক্ষা দেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সব ধরনের অসুস্থতা থেকে মুক্ত রাখুন। আমিন।




দেশ গঠনে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন শেখ হাসিনা: স্পিকার

অসংখ্য ঘাত-প্রতিঘাত ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করা সত্যিই বিরল ও অনন্য।

সেই কাজটিই করেছেন শেখ হাসিনা। দেশ ও জনগণের কল্যাণই যার প্রধান লক্ষ্য। তিনি লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়েছেন।

গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি রচিত ‘বিশ্বে বিরল অনন্য শেখ হাসিনা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্ততা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি।

আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কবি ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম প্রমূখ।




নেত্রকোনায় চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অসিত সরকার সজল জয়ী

আব্দুর রহমান ঈশান,নেত্রকোণা প্রতিনিধি :

নেত্রকোণায় জেলা পরিষদের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট অসীত সরকার সজল (আনারস) প্রতীকে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৯৩৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী জাতীয় পার্টি মনোনীত কেন্দ্রীয় জাতীয় কৃষক পার্টির কার্যকরি কমিটির সদস্য আসমা সুলতানা আশরাফ (প্রজাপতি) প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ২১১ ভোট। অপর প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সহ সভাপতি আবু সাইদ খান জ্যোতি (ঘোড়া) প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ৪৫ ভোট।

এদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন নেত্রকোনা সদরে সৈয়দ বজলুর রশীদ, মদনে এস এম মনিরুল হাসান টিটু, আটপাড়ায় ছানোয়ার উদ্দিন ছানু, পূর্বধলায় আফতাব উদ্দিন, দুর্গাপুরে সুরমী আক্তার সুমী, কেন্দুয়ায় মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া বিপুল, বারহাট্টায় মোঃ লুৎফর রহমান চঞ্চল, মোহনগঞ্জে সোহেল রানা, খালিয়াজুরীতে মাহ্জার কিবরিয়া পরশ ও কলমাকান্দায় এস এম আলমগীর গোলাপ।

সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে (পূর্বধলা-দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) উপজেলা থেকে শাহানাজ পারভীন, (নেত্রকোনা সদর-বারহাট্টা-আটপাড়া) উপজেলা থেকে শিল্পী আক্তার শিলা ও (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী-কেন্দুয়া) উপজেলা থেকে ফরিদা ইয়াসমিন বেসরকারি ফলাফলে নির্বাচিত হয়েছেন।




অসময়ে ব্রহ্মপুত্র-সোনাভরি পানি,তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ফসল

 সাব্বির মামুন,(কুড়িগ্রাম)সংবাদদাতা-

অসময়ে ভারী বর্ষনে ফলে পাহাড়ি ঢল ব্রহ্মপুত্র -সোনাভরি নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুড়িগ্রামে রাজিবপুর উপজেলায় শত শত একর বাদাম, মাষ কলাই,সুল্টি কলাই,ধান,মরিচ ও শীত কালিন শাক-সবজির টালসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে।রোপণ করা বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লোকসানে পড়েছেন কৃষকরা। ফসল পরিপক্ক না হওয়ায় পানির নিচেই পচে নষ্ট হতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েক দিনে রাজিবপুর সদর, ২নং কোদালকাটি ও মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের নিচু এলাকায় ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দিশেহারা হয়ে পরেছে কৃষকরা।

ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান,প্রতিবছর এভাবেই পাহাড়ি ঢলে শত শত একরের ফসল নষ্ট হয়ে যায়।

আমার প্রায় ১০ বিঘা জমির ধান ,কলই ,বাদাম তলিয়ে গেছে।

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ইউপি সদস্য মোঃ আলম বলেন, আমার এলাকার প্রায় ২ শতাধিক জমির ধান, কলই, বাদাম তলিয়ে গেছে। ক্ষতি সাধিত কৃষকদের সরকারি অনুদান দেওয়ার দরকার বলে মন্তব্য করছি

উল্লেখ্য বিষয়ে রাজিবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রহ্মপুত্র-সোনাভরি পানি যদি অতিসত্বর কমিয়া যায় তাহলে তেমন একটা ক্ষতি হবে না। পশাপাশি আমি অফিসিয়াল ভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জরালো ভাবে দাবি জানাবো, যাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা সরকারের কোষাগার হতে অর্থিক সহযোগিতা পায়।




ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি –

ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহাদাৎ হোসেন। এ নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. ফারুক হোসেন ৫৪০ পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। এর মধ্যে সাহাদাৎ হোসেন -চশমা প্রতীক নিয়ে, ফরিদপুর সদর-৬৩, মধুখালী-৬০, বোয়ালমারী -৬৬, আলফাডাঙ্গা-৩২, ভাঙ্গা-১৩০, সালথা-৭৩, নগরকান্দা -৮৬, সদরপুর-৬৮ ভোটসহ মোট ৬২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন।

অপরদিকে ফারুক হোসেন-আনারস প্রতীক নিয়ে ফরিদপুর সদর-১২৯, মধুখালী-৯৮, বোয়ালমারী ৭৯, আলফাডাঙ্গা ৬১, ভাঙ্গা-৪০, সালথা-৩০,নগরকান্দা-৪৬, সদরপুর-৩৮ভোটসহ মোট ৫৪০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সোমবার (১৭ অক্টোবর) শাহাদাৎ হোসেনকে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় মো. শাহাদাৎ হোসেনকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এদিকে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলার ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে মোট ভোটার ছিলেন ১১৮১ জন। ভোট কাস্ট হয় ১১৬৭ টি। বিপরীতে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, সদস্য পদে ৩৭ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল অতুল সরকার জানান, নির্বাচনকে ঘিরে র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও বিজিবির চার স্তরের নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহ জুডিশিয়াল স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করে। কোথাও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবী প্রশাসনের এ কর্মকর্তার।




নোয়াখালীতে আবদুল মালেক উকিলের ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে

মোঃ বদিউজ্জামান ( তুহিন) নোয়াখালী থেকে ঃ
সাবেক স্পীকার সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আ-লীগ এর সাবেক সভাপতি বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিলের ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী  জন্ম স্হান সদর উপজেলার বাঁধের হাট আবদুল মালেক উকিল ডিগ্রি (অনার্স) কলেজে ১৭অক্টোবর দুপুর ১২টায় দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে  অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আবদুল মালেক উকিল ডিগ্রি  (অনার্স) কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাবেক সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী জেলা আ-লীগের যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মরহুম আবদুল মালেক উকিলের সুযোগ্য সন্তান আবদুল মালেক উকিল  ডিগ্রি (অনার্স) কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও জেলা আ-লীগের সিনিয়র সদস্য  গোলাম মহি উদ্দিন (লাতু) উপস্থিত ছিলেন ২নং দাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শিপন সাবেক এওজবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আবদুল মালেক উকিল ডিগ্রি (অনার্স) কলেজের বিদ্যুোৎসাহী সদস্য আবদুজ্জাহের বিদ্যোৎসাহী সদস্য কলেজ পরিচালনা পর্ষদ মোঃ ফারুক হোসেন  বিদ্যুৎসাহী  সদস্য কলেজ পরিচালনা পর্ষদ জাফর আহম্মেদ জুয়েল। অভিভাবক সদস্য  কলেজ পরিচালনা পর্ষদ জাকিউল ইসলাম( দুলাল) হিতৈষী সদস্য আবদুল মতিন ডাঃ সাইফ উদ্দিন (সাইফ)আবদুল মালেক উকিল ডিগ্রি(অনার্স)কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ এনামুল হক  অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক উকিল ডিগ্রী  (অনার্স)কলেজ। অনুষ্ঠান শেষে কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।



শিশুদের অনুপ্রেরণা হোক শেখ রাসেল

১৯৬৪ সাল। সময়টা ছিল লড়াই আর যুদ্ধের উত্তেজনায় মুখর। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ঘটে চলেছে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

ওই সময় পাকিস্তান জুড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডামাডোল। একদিকে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, অন্যদিকে সম্মিলিতবিরোধী দলের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বোন ফাতেমা জিন্নাহ। অনিশ্চয়তা আর অন্ধকারের মধ্যেও এ অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে। যিনি এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে বাঙালি জাতিকে এনে দেবেন মুক্তির স্বাদ, বাঙালির সেই অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘর আলো করে জন্ম নিল এক শিশু।১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়িতে শেখ রাসেলের জন্ম। রাসেলের যেদিন জন্ম হয় বঙ্গবন্ধু সেদিন ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে প্রচারে অংশগ্রহণের জন্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন। জন্মের সময় বাবা কাছে না থাকলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পিতা-পুত্রের চিরপ্রস্থান ঘটেছে একসঙ্গেই।

ছোট ছেলের রাসেল নামটি রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই। তার প্রিয় লেখক ছিলেন পৃথিবী বিখ্যাত ব্রিটিশ দার্শনিক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বার্ট্রান্ড রাসেল। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম রাখা হলো রাসেল। শেখ রাসেল। এই নামটিকে ঘিরে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধুর মহৎ কোনো স্বপ্ন বা আকাক্সক্ষা ছিল।শিশু রাসেলের ভুবন ছিল তার পিতা-মাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামালকে ঘিরে। তাদের সবার ভালোবাসার ধন ছিল ছোট্ট রাসেল। রাসেলের জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কেটেছে বাবা মুজিবের সান্নিধ্য ছাড়া। কারণ, বাবা মুজিব বন্দি হয়ে কারাগারে ছিলেন দিনের পর দিন। শেখ রাসেল বেশ কয়েকবারই কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেছে। তবে তার প্রথম কারাগার দেখা ১৯৬৬ সালের ৮ মে। পিতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর।

কারাগারে দেখা করার সময় রাসেল কিছুতেই তার বাবাকে রেখে আসতে চাইত না। এ কারণে তার মন খারাপ থাকত। কারাগারের রোজনামচায় ১৯৬৬ সালের ১৫ জুন দিনলিপিতে রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘১৮ মাসের রাসেল জেল অফিসে এসে একটুও হাসে না- যে পর্যন্ত আমাকে না দেখে। দেখলাম দূর থেকে পূর্বের মতোই আব্বা আব্বা বলে চিৎকার করছে।

জেল গেট দিয়ে একটা মালবোঝাই ট্রাক ঢুকেছিল। আমি তাই জানালায় দাঁড়াইয়া ওকে আদর করলাম। একটু পরেই ভেতরে যেতেই রাসেল আমার গলা ধরে হেসে দিল। ওরা বলল আমি না আসা পর্যন্ত শুধু জানালার দিকে চেয়ে থাকে, বলে আব্বার বাড়ি। এখন ধারণা হয়েছে এটা ওর আব্বার বাড়ি। যাওয়ার সময় হলে ওকে ফাঁকি দিতে হয়।’

শিশু রাসেল ছিল অভিমানী। এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু নিজেই লিখেছেন কারাগারের রোজনামচায়। ১৯৬৭ সালের ১৪-১৫ এপ্রিল অন্যান্য প্রসঙ্গ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু রাসেলকে নিয়ে লিখেছেন, ‘জেল গেটে যখন উপস্থিত হলাম ছোট ছেলেটা আজ আর বাইরে এসে দাঁড়াইয়া নাই দেখে আশ্চর্যই হলাম। আমি যখন রুমের ভেতর যেয়ে ওকে কোলে করলাম আমার গলা ধরে আব্বা আব্বা করে কয়েকবার ডাক দিয়ে ওর মার কোলে যেয়ে আব্বা আব্বা করে ডাকতে শুরু করল। ওর মাকে আব্বা বলে।’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ব্যাপার কী? ওর মা বলল, ‘বাড়িতে আব্বা আব্বা করে কাঁদে তাই ওকে বলেছি আমাকে আব্বা বলে ডাকতে। রাসেল আব্বা আব্বা বলে ডাকতে লাগল। যেই আমি জবাব দিই সেই ওর মার গলা ধরে বলে, তুমি আমার আব্বা। আমার ওপর অভিমান করেছে বলে মনে হয়। এখন আর বিদায়ের সময় আমাকে নিয়ে যেতে চায় না।’

শিশু রাসেলকেও কাটাতে হয় বন্দিজীবন। অত্যন্ত কষ্টকর ছিল তার দিনগুলো। তার বন্দিত্ব সম্পর্কে বোন শেখ হাসিনা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ নিবন্ধে লিখেছেন, ‘ছোট্ট রাসেলও বন্দি জীবনযাপন শুরু করে। ঠিকমতো খাবার-দাবার নেই। কোনো খেলনা নেই, বইপত্র নেই, কী কষ্টের দিন যে ওর জন্য শুরু হলো। বন্দিখানায় থাকতে আব্বার কোনো খবর আমরা জানি না। কোথায় আছেন, কেমন আছেন, কিছুই জানি না। প্রথমদিকে রাসেল আব্বার জন্য খুব কান্নাকাটি করত। তার ওপর আদরের কামাল ভাইকে পাচ্ছে না, সেটাও ওর জন্য কষ্টকর।’ (ইতিহাসের মহানায়ক, পৃষ্ঠা ২১)।ছোট থেকে বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে কারাগারে দেখতে দেখতে বড় হওয়া রাসেল অজান্তেই চাপা স্বভাবের হয়ে উঠেছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে বিষয়ে বক্তৃতায় বলেন, ‘খুব চাপা স্বভাবের ছিল। সহজে নিজের কিছু বলত না। তার চোখে যখন পানি, চোখে পানি কেন জানতে চাইলে বলত, চোখে যেন কী পড়েছে। ওইটুকু ছোট বাচ্চা, নিজের মনের ব্যথাটা পর্যন্ত কীভাবে লুকিয়ে রাখতে হয় শিখেছিল।’

শেখ রাসেল ছিল বন্ধুবৎসল, গরিবদের জন্য ছিল তার দরদ, মমতা। জাতির পিতার গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় যখন সে যেত তখন গ্রামের ছেলেদের জন্য সে জামা নিয়ে যেত। তাদের উপহার দিত। আজ শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে দেশ একজন মানবদরদি মানুষ পেত।

শেখ রাসেলের এই ছোট্ট জীবন আমাদের জন্য অনেক শিক্ষণীয়। প্রথমত, আমাদের শিশুরা যদি শেখ রাসেলকে আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করে তার মতো বেড়ে ওঠে, তাহলে আমরা আদর্শ শিশু পাব। যাদের হাত ধরে বিনির্মিত হবে আগামী দিনের চেতনার নাগরিক। শিশুদের তাই শেখ রাসেলের ছোট্ট জীবনটা জানাতে হবে। যাতে শিশুরা অনাবিল সুন্দরের সৌন্দর্যে বেড়ে ওঠে, হাসতে পারে, খেলতে পারে, দুষ্টুমি করতে পারে, বন্ধুত্ব করতে পারে, গরিব মানুষকে ভালোবাসতে পারে। এভাবে যদি প্রতিটি শিশু বেড়ে ওঠে তাহলে এই শিশুরা বড় হয়ে আলোকিত মানুষ হতে পারে। এ কারণেই শেখ রাসেলের জীবন আমাদের জানাটা অত্যন্ত জরুরি।শেখ রাসেল নিজেকে কীভাবে গড়ে তুলত, তা বলার উপায় নেই। তবে পারিবারিক ঐতিহ্য, আদর্শের উত্তরাধিকার তার চরিত্র গঠনে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত, তাতে সন্দেহ নেই। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অন্তত এই দেশ, দেশের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধ থাকত তার অন্তর ও চেতনাজুড়ে। পরিণত হয়ে উঠত দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য। তার আগ্রহের বিষয়গুলো আয়ত্ত করে সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারত। সেটিই স্বাভাবিক ছিল তার জন্য। আজ রাসেল থাকলে একজন মেধাবী মানুষ বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রামে থাকত প্রথম সারিতে।

দুর্ভাগ্য এই যে জীবনের পথ, ইতিহাসের গতিধারা সব সময় স্বাভাবিক সূত্র ধরে এগোয় না। অনভিপ্রেত বহু ঘটনা এসে সেই যাত্রাপথ বিপৎসংকুল করে তোলে, বাঁক ঘুরিয়ে দেয়, ভিন্ন খাতে নিয়ে যায়। তখন আবার সঠিক পথে ফিরতে প্রয়োজন হয় কঠিন সংগ্রামের। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ভেতর দিয়ে এমনি এক ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করা হয়েছিল এই দেশকে। এরই নির্মম শিকার হয়েছিল শিশু শেখ রাসেল। ফলে তার জন্মদিনটি আনন্দ নয় বরং বেদনাই বয়ে আনে বিবেকবান মানুষের কাছে।

শেখ রাসেলের জন্মদিন ১৮ অক্টোবর ‘জাতীয় দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ শেখ রাসেল দিবস পালনের প্রস্তাব এবং যৌক্তিকতা মন্ত্রিসভায় পেশ করে। ২৩ আগস্ট ২০২১, মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ রাসেল দিবস ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে পালনের বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর জন্য আমরা আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।শিশু শেখ রাসেলের অকালপ্রয়াণের শোক-দুঃখ কোনো দিনই শেষ হওয়ার নয়। শেখ রাসেলের জন্মদিনে আমাদের কামনা শুধু আমাদের দেশ নয়, সারা পৃথিবীই শিশুদের জন্য নিরাপদ হয়ে উঠুক। হানাহানির অবসান হোক, প্রতিষ্ঠিত হোক চিরকাক্সিক্ষত শান্তি।

লেখক : বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ প্রতিমন্ত্রী




মাসুম আজিজের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

অভিনয়শিল্পী ও নাট্যকার মাসুম আজিজের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অভিনয়ের মাধ্যমেই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই গুণী শিল্পী।

এসময় প্রধানমন্ত্রী মাসুম আজিজের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।




সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নতুন অভিজ্ঞতা : সিইসি

সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকে নতুন অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামীতে এ অভিজ্ঞতা আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দেবে। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ভোটাররা এখন সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) জেলা পরিষদ নির্বাচন শেষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সিইসি একথা বলেন।




বাংলাদেশে আসা হচ্ছে না নোরা ফাতেহির

আগামী ১৮ নভেম্বর ‘গ্লোবাল অ্যাচিভার অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসার কথা ছিল বলিউড অভিনেত্রী নোরা ফাতেহির। তবে তাকে এই আয়োজনে অংশগ্রহন করার জন্য অনুমতি দেয়নি সরকার।

আজ সোমবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ খালেদ হোসেন স্বাক্ষরিত পরিপত্রে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘বৈশ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত সুসংহত রাখার লক্ষ্যে উইমেন লিডারশিপ করপোরেশন ঢাকার ব্যবস্থাপনায় আগামী ১৮ নভেম্বর ২০২২ তারিখে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গ্লোবাল অ্যাচিভার অনুষ্ঠানে ভারতীয় অভিনেত্রী নোরা ফাতেহিকে অংশগ্রহণের অনুমতি প্রদান করা যাচ্ছে না। ’