৩১ বার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়, কে এই শেরপা কামি রিতা

শেরপা কামি রিতা। প্রতি বছরই যেন শৃঙ্গজয়ের এক নিরবচ্ছিন্ন অধ্যায় রচনা করে চলেছেন এই নেপালি। ১৯৯৪ সালে প্রথম এভারেস্ট জয় করেছিলেন। যারা পর্বতারোহণকে কেবল ক্রীড়া নয়, জীবনদর্শন মনে করেন- কামি রিতা তাদের কাছে এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা।

আবারও নিজের গড়া নজির ভাঙলেন কিংবদন্তি শেরপা কামি রিতা। ৫৫ বছর বয়সি নেপালের এই পর্বতারোহী ৩১ বার বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণ করলেন।

মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দলের পথপ্রদর্শক শেরপা কামি রিতা ৮৮৪৯ মিটার (২৯০৩২ ফুট) উঁচু এভারেস্ট শীর্ষ স্পর্শ করেছেন। এভারেস্টজয়ীদের ইতিহাসে এটা এক অনন্য নজির।

নেপালের সলুখুম্বু জেলার থামি গ্রামে কামি রিতার জন্ম। হিমালয়ের কোলে তিনি বেড়ে উঠেছেন। শৈশব থেকেই তার পরিবার শেরপা গাইড হিসেবে কাজ করত। আর তিনিও বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পেশাদার শেরপা হয়ে ওঠেন। তার এই দীর্ঘ পর্বতারোহণ-জীবনে শুধু এভারেস্টই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য উচ্চতম পর্বত যেমন চো ইয়ু, লোৎসে, কাঞ্চনজঙ্ঘা ইত্যাদিতেও সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন। ১৯৫৩ সালে এ পথ ধরেই প্রথম এভারেস্টে আরোহণ করেছিলেন তেনজিং নোরগে এবং এডমন্ড হিলারি।

এভারেস্ট অভিযান সংগঠক সেভেন সামিট ট্রেকস এক বিবৃতিতে বলেছে, শেরপা কামি রিতার পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। তিনি শুধু নেপালের পর্বতারোহণের নায়ক নন, বরং এভারেস্টের বৈশ্বিক প্রতীক।

কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনোজ যোশীর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অ্যাডভেঞ্চার উইং এভারেস্ট অভিযানের একটি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন শেরপা কামি রিতা।

অন্যদিকে সেভেন সামিট ট্রেকসের চেয়ারম্যান মিংমা শেরপা জানিয়েছেন, এই নতুন কীর্তি বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্বত আরোহণের রেকর্ডধারী হিসেবে শেরপা কামি রিতার মর্যাদাকে আরও দৃঢ় করে তুলবে-এটি এমন একটি রেকর্ড; যা অন্য কেউ ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি।

তিনি জানান, কামি রিতা চূড়ায় আরোহণের পর নিরাপদ এবং স্থিতিশীল আছেন। এবার তিনি বেস ক্যাম্পে ফিরে যাচ্ছেন। সব সময়ের মতো কামি পর্বতে তার অতুলনীয় দক্ষতা এবং পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করেছেন। আমরা তার কৃতিত্বের জন্য অত্যন্ত গর্বিত।




আমেরিকা প্রবাসীর তিন বিয়ে করা স্ত্রী শ্রীঘরে

সিলেটে আমেরিকা প্রবাসীর তিন বিয়ে করা স্ত্রীকে গ্রেফতার করে শ্রীঘরে পাঠিয়েছে বেরসিক পুলিশ। গ্রেফতার ফাহিমা আক্তার সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নারী কর্মচারী।

 

টাকা আত্মসাৎ মামলায় মহানগরের দরগাহ গেট এলাকা থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

 

সোমবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

 

সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি মো. জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

জানা গেছে, ফাহিমা আক্তার সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের অফিস সহায়ক (টিকা দানকারী)। ফাহিমার বাবার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। তিনি এ পর্যন্ত তিনটি বিয়ে করেছেন। দুই স্বামীকে ছেড়ে এখন ঘর করছেন এক আমেরিকা প্রবাসীর। প্রবাসীর বাড়ি সিলেট নগরীর কদমতলি এলাকায়।




সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ৮২ জনকে পুশইন

সিলেট ও সুনামগঞ্জের চারটি সীমান্ত দিয়ে ৮২ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বাংলাদেশে প্রবেশের পর পরেই ৮২ জনকেই আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ভোর পর্যন্ত তাদের পুশইন করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ, ২৭ জন নারী ও ৩২ জন শিশু রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৬৯ জন কুড়িগ্রাম জেলার, ৯ জন যশোর জেলার ও চারজন বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা বলে জানয়েছে বিজিবি।

বিজিবি-৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হক জানান, রাত সাড়ে তিনটার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি সীমান্ত দিয়ে পাঁচ পরিবারের ৩২ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। এদের মধ্যে সাতজন পুরুষ, ১০ জন নারী ও ১৫ জন শিশু রয়েছে। যাদের মধ্যে ১৯ জন কুড়িগ্রাম জেলার, যশোরের ৯ জন এবং বাগেরহাটের চারজন।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর একই উপজেলার ঝিংগাবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ছয় পরিবারের আরও ২০ জনকে পুশইন করা হয়। এর মধ্যে ছয়জন পুরুষ, সাতজন করে নারী ও শিশু রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাদের সবার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায় বলে জানা গেছে।

এদিকে, বুধবার ভোর ৬টার দিকে জৈন্তাপুরের কদমখাল এলাকা দিয়ে ১৪ জনকে পুশইন করা হয় বলে জানিয়েছেন বিজিবি-১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল জুবায়ের আনোয়র। তিনি জানান, কদমখাল দিয়ে বাংলাদেশে আসাদের মধ্যে পাঁচজন করে পুরুষ ও নারী এবং চারজন শিশু রয়েছে। তারা সকলেই কুড়িগ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, সুনামগঞ্জের নয়াকোট বিওপি এলাকায় ছনবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পাঁচ পরিবারের আরও ১৬ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। এর মধ্যে পাঁচজন করে পুরুষ ও নারী এবং ছয়জন শিশু রয়েছে। তারাও  কুড়িগ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

বিজিবি বলছে, আটককৃতদের পরিচয় যাচাই-বাছাই চলছে এবং পরবর্তীতে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে গত ১৪ ও ২৪ মে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে যথাক্রমে ১৬ ও ২১ জন এবং ২৫ মে বিয়ানীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়।




জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে জামায়াত

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।  এতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

এর আগে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ জামায়াত আমির। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাকিদের বলেন, ‘আমাদের সবার দাবি ছিল অর্থবহ একটি সংস্কার হবে। এই সংস্কার ও বিচারের মধ্য দিয়েই একটা অর্থবহ নির্বাচন হবে।’

তিনি সেদিন বলেন, ‘আমরা বলেছি দুটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। গ্রহণযোগ্য সংস্কার হতে হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। আমরা মনে করি সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপের ঘোষণা হলে অনেকটাই সংশয় কেটে যাবে।’




ভারত হামলা চালিয়ে যেভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বাড়িয়ে দিল

২০২৩ সালের ৯ মে পাকিস্তানের বড় বড় শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তাঁরা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা পর্যন্ত করেছিলেন।

লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ছিল রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর, লাহোরে একজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডারের বাসভবন (যেটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়) এবং আরও কিছু স্থাপনা ও স্মৃতিস্তম্ভ।

ওই বিক্ষোভকারীরা মূলত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থক ছিলেন। তাঁরা তাঁদের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন।

ইমরান খানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে দুর্নীতির অভিযোগে আটক করা হয়েছিল।

ইমরান খানকে ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ে মুক্তি দেওয়া হলেও ওই বিক্ষোভগুলোকে সেনাবাহিনীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে একটি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়।

পাকিস্তানে সেনাবাহিনীকে দীর্ঘদিন ধরে সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যারা প্রায় সব ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব বজায় রেখে আসছে।

এর ঠিক দুই বছর পর, ২০২৫ সালের ১১ মে, হাজার হাজার মানুষ আবার রাস্তায় নামেন। কিন্তু এবার তাঁরা মাঠে নামেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের প্রশংসা করতে ও তাদের সমর্থন জানাতে।

গত সপ্তাহে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র সামরিক সংঘর্ষ হয়। উভয় পক্ষই একে অপরের স্থাপনাগুলোয় আক্রমণ চালায়।

১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে এত বড় সংঘাত আর দেখা যায়নি।

প্রায় যুদ্ধের পর্যায়ে পড়া এই সংঘাতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ প্রভাব স্পষ্ট। সেটি হলো সেনাবাহিনীর প্রতি জনসমর্থন তীব্রভাবে বেড়েছে। সেনাবাহিনীকে ভারতীয় আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষাকারী শক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গ্যালাপ পাকিস্তানের একটি জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের ১১ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ৫০০ জনের বেশি উত্তরদাতার মধ্যে ৯৬ শতাংশ মনে করেন, পাকিস্তান এই সংঘর্ষে জয়ী হয়েছে।

আল–জাজিরাকে দেওয়া প্রাথমিক তথ্য ও জরিপের প্রবণতা অনুযায়ী, ৮২ শতাংশ মানুষ সেনাবাহিনীর কার্যক্রমকে ‘অত্যন্ত ভালো’ বলে মূল্যায়ন করেছেন। আর মাত্র ১ শতাংশের কম মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ৯২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, এই সংঘর্ষের কারণে তাঁদের সেনাবাহিনীর প্রতি ধারণা আরও ইতিবাচক হয়েছে।

‘কালো দিবস’ থেকে ‘ন্যায্য যুদ্ধের দিন’-এ রূপান্তর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরের দিন, ১১ মে পাকিস্তানের শহরগুলোয় মানুষ গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।

তাঁরা জাতীয় পতাকা ওড়ান এবং সেনাবাহিনী, বিশেষ করে সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরের প্রশংসা করে পোস্টার বহন করেন। বাতাসে ছিল উল্লাস আর স্বস্তির আবেশ।

এর আগের চার দিন ধরে পাকিস্তান তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে এক উত্তেজনাপূর্ণ সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে ছিল।

৭ মে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলাকারীদের হাতে ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর ভারত এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

এতে কমপক্ষে ৫১ জন নিহত হন, যাঁদের মধ্যে ১১ জন সেনাসদস্য ও বেশ কয়েকটি শিশু ছিল।

পরের তিন দিন ধরে এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ একে অপরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও আর্টিলারি নিক্ষেপ করে। এটি উপমহাদেশের ১৬০ কোটি মানুষকে সর্বাত্মক যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে যায়।




কুতুবদিয়ায় প্যারাবন গড়ে তোলা হোক

কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার সুরক্ষাপ্রাচীর প্যারাবন (ম্যানগ্রোভ) না থাকায় দ্বীপটির বিশাল অংশ সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ দ্বীপে কয়েক দশক আগেও অন্তত ১ হাজার ২০০ একর প্যারাবন ছিল। তৎকালীন সময়ে ১০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপের সুরক্ষাপ্রাচীর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল প্যারাবনকে। কিন্তু গত তিন দশকে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছে দ্বীপের সুরক্ষাপ্রাচীর।

প্যারাবন ধ্বংসের কারণে সমুদ্রের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি এবং ভিটেমাটি। প্রায় ৯০০ একর প্যারাবন ধ্বংস হয়েছে লবণ মাঠ তৈরির জন্য। টিকে থাকা বাকি ৩০০ একর প্যারাবনও হুমকিতে পড়েছে আগ্রাসী লবণ চাষের কারণে। এ ছাড়া এ দ্বীপে নেই কোনো টেকসই বেড়িবাঁধ। তাই প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে প্রবল ঝড়, বন্যা ও প্লাবনের কারণে কুতুবদিয়ার অধিকাংশ সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়।

এক দশক আগেও কুতুবদিয়া দ্বীপের আয়তন ছিল ২০ বর্গকিলোমিটারের চেয়ে বেশি। এখন ভাঙনের কারণে কুতুবদিয়া দ্বীপের আয়তন ১৮ বর্গকিলোমিটারের চেয়েও কমে গেছে।

তাই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ, কুতুবদিয়া দ্বীপকে রক্ষার্থে দ্রুত সময়ের মধ্যে দ্বীপের সুরক্ষাপ্রাচীর হিসেবে প্যারাবন (ম্যানগ্রোভ) লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। সেই সঙ্গে প্যারাবন টিকিয়ে রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক। কুতুবদিয়া দ্বীপকে বাঁচাতে পারলে বেঁচে যাবে দেড় লক্ষাধিক বাসিন্দার জনজীবন।

 




শিল্পকারখানায় ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে মূল্য দিতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘শিল্পকারখানায় ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। জলাধার ও নদীদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং শিল্পকারখানার ব্যবহৃত পানি রিইউজ (পুনর্ব্যবহার) করতে বাধ্য করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আজ শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর শহরের পিটিআই মিলনায়তনে ‘নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়াম ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ঢাকার চারটি নদী দখল-দূষণমুক্ত করার চুক্তি করে কর্মপরিকল্পনা দিয়ে যাব। কারণ, এগুলো আমাদের সময়ে করতে পারব না। তবে আমাদের সময়ের মধ্যেই তুরাগ নদের পুনরুদ্ধার শুরু হবে।’

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই নদী নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, গাজীপুরের ওপর দিয়ে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, বানার, চিলাই, লবণদহ, শালদহ, গোয়ালী, তুরাগ, বংশী, বালু, গোয়াল্লার, পারুলীসহ আরও কয়েকটি ছোট নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে। রয়েছে অনিন্দ্যসুন্দর বোলাই, মকশ বিলসহ কয়েকটি স্বাদুপানির জলাধার। দখল-দূষণে বিপর্যস্ত থাকা সত্ত্বেও এখনো এসব নদী-নদী ও জলাধার নিজ জেলা তো বটেই, আশপাশের অঞ্চলগুলোর সমাজ-সংস্কৃতিতে প্রভাব রেখে চলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই জেলার পানির গুণগত মান কমছে। কোথাও কোথাও পানিতে দ্রবণীয় অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্যের ঘরেও চলে যাচ্ছে। এর জন্য নদীদূষণ সর্বাংশে দায়ী। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নদী ও জলাভূমিকে রক্ষা করার পথ খুঁজতে আজকের এই আয়োজনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়াম থেকে ১৬টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেটির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান, গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার চৌধুরী মো. যাবের সাদেক প্রমুখ।

 




আপনি আমাদের দিলারা আপা, আপনিই নায়িকা’

লালগালিচায় একটু মন খারাপ করেই পা রাখলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী দিলারা জামান। ছবি তোলার কথা বলতেই কিছুটা নিচু স্বরে বললেন, ‘আর কি আসা হবে তোমাদের অনুষ্ঠানে। আমার বয়স এখন ৮৩ বছর। বয়স তো কম হলো না।’ সঙ্গে সঙ্গে পাশ থেকে বেশ কয়েকজন বলে উঠলেন, ‘আপনি আমাদের মাঝে সব সময় আছেন। আপনি আমাদের দিলারা আপা, আপনিই নায়িকা।’

লালগালিচায় পা রাখতেই বিদ্যা সিনহা মিমকে ঘিরে ধরলেন আলোকচিত্রীরা। একের পর এক ছবির জন্য পোজ দিতে দিতে কাকে যেন খুঁজছিলেন মিম। পাশ থেকে একজনকে ডেকে নিয়ে ফটোসাংবাদিকদের উদ্দেশে বললেন, ‘এবার মায়ের সঙ্গে একটা।’ পরে মাকে নিয়েই লালগালিচায় হাঁটলেন এই অভিনেত্রী।

লালগালিচার এক পাশে একাই দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রযোজক সারা আফরীন। লালগালিচায় হাঁটার অনুরোধ আসতেই হেসে সারা বলেন, ‘আমি একা যাব না। আপনাদের “ড্রাইভার ভাই” আসুক, তার পর যাব।’ পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন গিয়েছিলেন গাড়ি পার্ক করতে। তিনি আসার পরই তাঁরা একসঙ্গে লালগালিচায় পা রাখেন।

‘ভাই, আপনাদের ভাবি

চিত্রনায়ক মামনুন ইমন যখন লালগালিচায় হাঁটছিলেন, তখন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এক নারী। পরে তাঁকে ডেকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন, ‘এটা আপনাদের ভাবি। আমাদের একসঙ্গে ছবি তোলেন।’ সবশেষে বললেন, ‘ভাই, বউয়ের সঙ্গে ছবিগুলো দিয়েন।




হতে চেয়েছিলেন ফুটবলার, হয়ে গেলেন জেমস বন্ড

‘বন্ড, জেমস বন্ড।’

ইয়ান ফ্লেমিংয়ের কালজয়ী চরিত্রের কালজয়ী সংলাপ। সিনেমার পর্দায় বেশ কয়েকজন অভিনেতাকে দেখা গেছে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের এই বিশ্বখ্যাত এজেন্টের চরিত্রে। কিন্তু আজ আমরা যে ভদ্রলোকের কথা বলব, তিনি বাকি সবার চেয়ে একটু আলাদা।

সিনেমার ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় এই সংলাপ প্রথম শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। লম্বায় ৬ ফুট ২, জাতে স্কটিশ। জেমস বন্ড সিনেমার যাঁরা ভক্ত, তাঁরা এরই মধ্যে চিনে ফেলেছেন ভদ্রলোককে

যাঁরা চেনেননি আরও একটু জেনে নিন, দ্য আনটাচেবলস ছবিতে অভিনয়ের জন্য ইনি চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার অস্কার জিতেছিলেন ১৯৮৭ সালে। পিপল ম্যাগাজিনের জরিপে ৬৯ বছর বয়সেও হয়েছিলেন শতাব্দীর সবচেয়ে আবেদনময়ী পুরুষ!

৯০ বছর বয়সে ২০২০ সালে পরপারে চলে যাওয়ার আগেই জেমস বন্ডের সাতটা সিনেমা ছাড়াও তিনি উপহার দিয়েছেন দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর (১৯৯০), দ্য রাশা হাউস (১৯৯০), দ্য রক (১৯৯৬) ও এনট্রাপমেন্ট (১৯৯৯)-এর মতো বক্স অফিস কাঁপানো অনেক ছবি। এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভদ্রলোকের চেহারাটা ভেসে উঠেছে চোখের সামনে? শন কনারি।

অস্কারজয়ী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ একবার বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে শুধু সাতজন সুপারস্টার অভিনেতা আছেন। শন কনারি তাঁদের একজন।’ এই কথার পর কনারিকে নিয়ে আর কিছু বলার থাকে না। কিন্তু তাহলে আর হঠাৎ তাঁকে নিয়ে গল্প ফাঁদা কেন! তার মানে কিছু কথা আছে।

ধরুন যদি বলি, অভিনেতা নয়; আসলে কনারির হওয়ার কথা ছিল দুর্দান্ত ফুটবলার! বিশ্বাস করবেন না জানি। তাহলে বাসবিকে সাক্ষী আনতে হবে। বাসবিকে চিনেছেন তো? ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ইউরোপিয়ান কাপ (এখনকার চ্যাম্পিয়নস লিগ) জেতানো কিংবদন্তি কোচ স্যার ম্যাট বাসবি। ইনিও স্কটিশ।

যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, কনারির বয়স তখন ২২–২৩। ‘বনিরিগ রোজ’ নামে স্কটল্যান্ডের স্থানীয় ক্লাবে রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেলেন। কিন্তু শখ অভিনয় করা। একটা ব্রেক খুঁজছেন সিনেমায়।

বাসবি ইউনাইটেডে বেশ কয়েকটা মৌসুম কাটিয়েছেন। তাঁর দলটা প্রথমবার ইংলিশ প্রথম বিভাগ লিগ (এখনকার প্রিমিয়ার লিগ) জেতে ১৯৫১-৫২ মৌসুমে। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম শুরুর আগে দলবল নিয়ে বাসবি প্রাক্‌মৌসুম সফরে গেলেন স্কটল্যান্ডে। সেই সফরেই মাঝেমধ্যে বাসবি বিকেলে বের হতেন স্থানীয় বিভিন্ন ক্লাবের খেলা দেখতে। উদ্দেশ্য, যদি হঠাৎ কাউকে চোখে লেগে যায়।




সর্বকালের সেরা ১০ ফুটবলার: কারা আছেন আইএফএফএইচএসের তালিকায়

ফুটবলে সর্বকালের সেরা কে—এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই। এ নিয়ে বিতর্কও চলে আসছে যুগের পর যুগ। পেলে, ম্যারাডোনা, মেসি নাকি রোনালদো? যুক্তি, তর্ক ও বিশ্লেষণের পর বিশ্লেষণ করেও শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তরে সর্বসম্মতিক্রমে কাউকে বেছে নেওয়ার উপায় নেই। পাল্টা যুক্তি ওঠেই।