যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক না থাকলে বিপদে পড়বে ক্ষুদ্র ব্যবসা

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) মার্কিন সিনেটে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করার জন্য বিল পাস হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিলটিতে স্বাক্ষর করেন, ফলে এটি আইনে পরিণত হয়। এই আইনের কারণে টিকটকের মূল সংস্থা বাইটড্যান্সকে চীনের বাইরের অর্থাৎ অন্য কোনো দেশের কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির কাছে অ্যাপটি বিক্রি করতে হবে। নতুবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক বন্ধ করতে হবে। টিকটক অবশ্য এই আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে।

আগামী বছর নাগাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের অনেক ভক্ত অনুরাগী তাদের প্রিয় অবসর কাটানোর একটি মাধ্যমকে হারাতে পারেন। তবে টিকটক না থাকলে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে টিকটকের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এবং এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে আয় করা ছোট ছোট ব্যবসাগুলো।

২০২৪ সালের মার্চের তথ্য অনুযায়ী, ৭০ লাখের বেশি মার্কিন ক্ষুদ্র ব্যবসা টিকটক ব্যবহার করে। টিকটক জানিয়েছে, ২০২৩ সালে এই ব্যবসায় উদ্যোগগুলোর জন্য তারা ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে।

টিকটক বর্তমানে একটি অন্যতম বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠেছে। টিকটকের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে গড়ে উঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোগ জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস এবং বেলজিয়ামের জিডিপিতে ৪.৮ বিলিয়ন ইউরো বা ৫.১৪ মার্কিন ডলার অবদান রাখছে।

টিকটক বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় মার্কিন উদ্যোক্তারা তাদের আয় হ্রাসের আশঙ্কা করছেন। একইভাবে বিশ্বব্যাপী ব্যবসাগুলোও পণ্যের মার্কেটিংয়ে মার্কিন ক্রেতাদের টার্গেট করে থাকে। কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদেরও শীর্ষ টার্গেট মার্কিন অডিয়েন্স। তাই বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্ম নির্ভর করে গড়ে উঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটররাও চিন্তিত। তাদের জন্য এখন টিকটকের বিকল্প খোঁজা বড় চ্যালেঞ্জ।

ক্রমবর্ধমান অডিয়েন্স ও ভোক্তার সন্ধান

২৭ বছর বয়সী শিরা টিকটকে একজন ফুলটাইম কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। টিকটকে তার ফলোয়ার পাঁচ লাখের বেশি। অস্ট্রেলিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরে ২০২১ সালে টিকটকে একাউন্ট খুলেছিলেন তিনি। শুরুর দিকে তিনি অন্যান্য কন্টেন্টের উপর প্রতিক্রিয়া ভিডিও তৈরি করতেন। সেইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অভিজ্ঞতা নিয়েও কন্টেন্ট বানাতেন তিনি। নয় মাসের মধ্যে তার ফলোয়ার সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়।

আয়ের জন্য শিরা টিকটকের পার্টনারশিপের উপর নির্ভর করেন। স্ন্যাপচ্যাট ও ইউটিউবেও অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার, কিন্তু তার মতে, ধারাবাহিকভাবে সবচেয়ে বেশি আয়ের প্লাটফর্ম হলো টিকটক। তিনি বিবিসিকে বলেন, টিকটকে সত্যিকারের নিবেদিতপ্রাণ অডিয়েন্স বাড়াতে আমি কয়েক বছর সময় দিয়েছি। অনেক লাইভ স্ট্রিম করেছি, বহু কন্টেন্ট দিয়েছি। টিকটক থেকে অর্থ উপার্জনের যাত্রা ছিল কঠিন। কিন্তু এখন আমি যে জায়গায় পৌঁছেছি তাতে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।

শিরা এই নিষেধাজ্ঞাকে বিধ্বংসী বলে বর্ণনা করেছেন। তার নিজের ব্যবসার বাইরেও তিনি বলেছেন, সম্ভাব্য কয়েক হাজার চাকরি যাবে এই নিষেধাজ্ঞার কারণে। এর আগে গত মার্চে টিকটক জানিয়েছিল, অ্যাপটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে দুই লাখ ২৪ হাজার চাকরি তৈরি করেছে। শিরা বলেন, টিকটক নিষিদ্ধ হলে এই লোকরা কী করবে তা আমি নিশ্চিত নই।

৩০ বছর বয়সী ইলিয়ানা জাস্টিনের টিকটক অ্যাকাউন্টে ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় দুই লাখ। তিনিও শিরার মতো একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২০২১ সালে তিনি এবং তার স্বামী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে তাদের আসন্ন বিয়েতে অতিথিদের মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে টিকটকে পোস্ট করেন। এর মাধ্যমে তিনি তার টিকটক অ্যাকাউন্টে কন্টেন্ট প্রকাশ শুরু করেন। এর পর থেকেই তিনি বিতর্কিত বিষয়বস্তুর কন্টেন্ট নির্মাতাদের জগতে প্রবেশ করেন। তিনি মূলত লাইফস্টাইল, রাজনৈতিক বিষয়াবলী নিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করেন। তার কন্টেন্টের বিষয়ের মধ্যে রয়েছে সবেতন পারিবারিক ছুটি, গর্ভপাত এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়।

তবে শিরার মতো ফুলটাইম কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নন ইলিয়ানা। কিন্তু প্লাটফর্মটিতে অনেক সময় দেন তিনি। তার নিজের অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশের বাইরেও তিনি অন্যদের জন্য উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে যারা টাকা আয়ের জন্য পুরোপুরি টিকটকে তাদের সাফল্যের উপর নির্ভরশীল তাদের নিয়ে চিন্তিত তিনি। ইলিয়ানা বলেন, প্লাটফর্মটি ছোট ব্যবসায়ীদের পণ্য মার্কেটিং এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বড় করার সুযোগ দেয়। টিকটক ব্যবহার করে ব্যবসাকে সম্পূর্ণভাবে রূপান্তরিত করা যায়। আমার অনেক বন্ধু আছে যারা তাদের ব্যবসাকে টিকটকের কারণে ফুলটাইমে চাকরিতে পরিণত করতে পেরেছে।

বিকল্পের সন্ধান

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকটক নিষিদ্ধ হলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর নাও হতে পারে। কিন্তু তাদের অবশ্যই কোনো বিকল্প খুঁজে পাওয়া ও তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাধ্য করবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারডু ইউনিভার্সিটি ড্যানিয়েলস স্কুল অব বিজনেসের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ রহমান বলেন, আমরা একটি ডিজিটাল অর্থনীতিতে বাস করছি। আমরা মূলত সব ধরনের যোগাযোগ এবং তথ্যের জন্য প্রযুক্তির উপর নির্ভর করছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসার আগে কিভাবে ব্যবসা হতো সেদিকে ফিরে যাওয়ার ধারণাটি সম্ভবত আর কাজ করবে না। কারণ আমরা কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করব, কিভাবে আমরা কী কিনব সে বিষয়ে ভোক্তারা বিশ্বজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে প্রভাবিত হয়।

যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে ফেসবুকের মতো বিকল্প রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও আসতে পারে। ব্যবসার জন্য তাদের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো বের করার জন্য হাতে রয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন টিকটক নিষিদ্ধ বা বিক্রির আইনটিতে স্বাক্ষরের পর বাইটড্যান্সের হাতে ২৭০ দিন সময় আছে। তবে বাইটড্যান্স আইনি লড়াই করলে এই সময় আরও বাড়তে পারে।

দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির মার্শাল বিজনেস স্কুলের ক্লিনিকাল বিপণনের সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টেন শিয়েলি মনে করেন, টিকটক বন্ধ হলে ব্যবহারকারীরা কোনো প্লাটফর্মে স্থানান্তরিত হবে তা এখনই বলা কঠিন। আসলে জেন জেডরা টিকটকে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করে। অন্য প্লাটফর্মগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে জেন জেডের কাছে পৌঁছান।

আমেরিকান টিকটক ব্যবহারকারীরা শুধু দেশীয় ব্যবসায়িক শক্তিই নন, বরং বিশ্বব্যাপী তাদের প্রভাব রয়েছে। অন্যান্য দেশের উদ্যোক্তারা টিকটকে মার্কিন অডিয়েন্স হারাবেন। যুক্তরাজ্য ও কানাডার কেউ কেউ ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত মার্চে কানাডায় টিকটকের মুখপাত্র গ্লোবাল নিউজকে ইমেইলের মাধ্যমে বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ হলে কানাডিয়ান কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোর জন্য তা ধ্বংসাত্মক ব্যাপার হবে। কানাডার ক্ষুদ্র ব্যবসা ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের বড় অংশের মূল লক্ষ্যই থাকে আমেরিকানদের কাছে পৌঁছানো।

শিয়েলি বলেন, কোরিয়া ও চীন থেকে প্রচুর কসমেটিক ও ত্বকের যত্নের ব্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রে আসছে। কোরিয়া ও চীনের সৌন্দর্যবর্ধন ও ত্বকের যত্নের পণ্যগুলোর মান দুর্দান্ত। এই মুহূর্তে টিকটকে এগুলোর ব্যবসা অনেক বড়। তাদেরও টিকটক ছাড়া মার্কিন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষেও মার্কিন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হবে। শিয়েলির আশা, অনেকেই মানিয়ে নিতে পারবে, কিন্তু তার উদ্বেগের যায়গাটি হলো, বড় কোম্পানি ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের দাপটে ছোট অনেক উদ্যোগ হারিয়ে যাবে।




আইসিটি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কর অব্যাহতির ঘোষণা এখনই দেওয়া উচিত

দেশের আইসিটি খাতের যাত্রা শুরু গত শতকের আশির দশকের শেষ ভাগে। পরে নব্বইয়ের দশকে আমরা সফটওয়্যার নিয়ে কাজ শুরু করি। বেসিসের শুরুটাও তখনই, ২৭ বছর আগে। এই সময়ে আমরা অনেক কিছুতে এগিয়েছি। আবার হওয়ার মতো এমন অনেক কিছু ছিল, যা হয়নি। আমরা এখন দেড় বিলিয়ন ডলারের মতো রফতানি করছি। স্থানীয় বাজারও প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলারের মতো, যদিও অনেক বিদেশি সফটওয়্যার আসছে। রফতানি বা দেশীয় বাজার আরও বড় হওয়ার কথা ছিল। কয়েকটি কারণে হয়নি। এর প্রধান কারণ, দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি। আমাদের প্রযুক্তি জ্ঞানসমৃদ্ধ লোকজন হয়তো নেতৃত্বে নেই। সত্যিকার অর্থে প্রযুক্তি জেনেবুঝে কাজ করেন, এমন মানুষ হয়তো নেতৃত্বে আসছে না। ফলে আমরা যে গতিতে এগুতে চাইছি, সেটি পারছি না।

এর আরেকটি কারণ, আমাদের দক্ষ জনবল নেই। এটি তৈরির জন্য যে আমরা পদক্ষেপ নেব, সেটিও কিন্তু আমরা করিনি। শুধু আইসিটির ক্ষেত্রে যে এমন, তা নয়। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। জাতীয় পর্যায়েও দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে আমরা পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিইনি। এটি আরও ২০ বছর আগে করা উচিত ছিল। ২০ বছর আগে যদি আমরা করতাম, তার সুফল এখন আমরা নিতে পারতাম। ভারত সেটা করেছে। ষাটের দশকে তারা আইআইটি করেছে। তার সুফল তারা ২০০০ সালে নিয়েছে। এই কাজগুলো আমরা করতে পারিনি। কোনো সময় নষ্ট না করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সেই পদক্ষেপ যদি এখনো নিতে না পারি, তাহলে কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারব না।

ফটোশুট ও ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে, নানা রকম প্রমোশনাল ভিডিও হচ্ছে। যেহেতু প্রযুক্তি এখন খুব সুলভ, এগুলো করাটা সহজ হয়ে গেছে। ১০/১৫ বছর আগে আমরা যখন নির্বাচন করেছি, তখন আমরা ফটোশুট করেছি। কিন্তু এত ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারিনি। প্রযুক্তি এত হাতে হাতে ছিল না। এখন প্রযুক্তি সুলভ বলেই সেগুলো হচ্ছে।

তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্যানেল। ব্যক্তিগতভাবে আমি প্যানেল পদ্ধতির বিপক্ষে। আমি এটা পছন্দ করি না। তার প্রধান কারণ, যখনই প্যানেল হয়ে যায়, দেখা যায় দুটি বা তিনটি প্যানেল— যে ভেদাভেদ বা রেষারেষি হয়, সেটা নির্বাচনের পরেও রয়ে যায়। মুখে যতই বলি না কেন নির্বাচনের পরে সবাই এক, প্রকৃতপক্ষে সেটি হয় না। মনের মধ্যে দলাদলির ব্যাপারটা রয়ে যায়। এ কারণে প্যানেল পদ্ধতির বিপক্ষে আমি।

এমন যদি হতো, সভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালক পদে আলাদা আলাদা নির্বাচন, তাহলে হয়তো প্যানেল হতো না। আবার প্যানেলের পক্ষেও কিন্তু যুক্তি আছে। আমি যদি একই রকম মানুষদের সঙ্গে বোর্ড গঠন করতে না পারি, তাহলে সেই বোর্ড রান করবে না। কারণ আমার চিন্তাধারা একরকম, আরেকজনের চিন্তাধারা আরেকরকম। তারপরও আমার মনে হয়, এই যে দলাদলি-রেষারেষি, প্যানেল পদ্ধতিতে এটি আরও বেড়ে যায়।

যে বা যারা নেতৃত্বে থাকবে, তাদের কিন্তু এই খাতের লোক হতে হবে। এই শিল্পে প্রত্যক্ষ সংযোগ থঅকতে হবে। না হলে কিন্তু তিনি সমস্যাগুলো বুঝতে পারবেন না, অনুভব করতে পারবেন না। সমস্যা যাদের হচ্ছে, তাদের যে কষ্ট হচ্ছে, কষ্টটা অনুভব করতে পারবেন না। তাই সেই নেতৃত্ব প্রয়োজন, যে নেতৃত্ব এই খাতকে ভেতর থেকে জানে। আমাদের প্রযুক্তি জানা মানুষ যেমন প্রয়োজন, তেমনি ভালো ব্যবস্থাপনা বুঝে নেতৃত্ব দিতে পারে, তেমন মানুষও প্রয়োজন। বেসিসে সামনে যারা আসবে, ভবিষ্যতে যারা আসবে তারা এভাবেই চিন্তাভাবনা করবে, এটাই প্রত্যাশা। ভোটাররাও যাদের ভোট দেবেন, তারা নেতৃত্বের গুণাবলি চিন্তাভাবনা করে যেন ভোট দেন।




নীরব ঘাতক স্মার্টফোন!

রাবিশ্ব মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯ সালের মধ্যেই সারা বিশ্বে প্রায় ২শ ৭০ কোটি মানুষ স্মার্টফোন ডিভাইস ব্যবহার করবে। একই সঙ্গে মোবাইল ফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৪শত ৬৮ কোটি মানুষ, যা বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ৬৭ শতাংশ।

জিএসএমএ ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত বৈশ্বিক তথ্যানুযায়ী, সারাবিশ্বে মোবাইল ব্যবহারকারীদের মোট পরিসংখ্যান ইতোমধ্যে পাঁচ বিলিয়নের মাইলফলকে পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৫ কোটি ৮৪ লাখ ৩৮ হাজার মোবাইল নম্বর নিবন্ধিত হয়েছে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৯৭.২৩ শতাংশ।

অবশ্যই মোবাইল ফোন, বিশেষত স্মার্টফোনগুলোতে পরিবার ও কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে তাত্ক্ষণিক যোগাযোগ, নেটওয়ার্ক তৈরি, বিনোদন, ক্যামেরা, জিপিএস, শিক্ষা, ডাটা সংরক্ষণ, গোপনীয়তা, বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ইত্যাদির অবিশ্বাস্য সুবিধা রয়েছে। তবে মানুষজন নানা ধরনের অ্যাপনির্ভর স্মার্টফোনগুলোতে দিন দিন প্রচণ্ড পরিমাণে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা তাদের স্বাস্থ্যের ওপর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
আসুন, জেনে নেই কিভাবে আপনার স্মার্টফোন আপনাকে নীরবে ঘাতকের ভূমিকায় রয়েছে-

• চোখের ওপর চাপ

টাইপ অথবা কিছু পড়ার সময় লোকজন প্রায়ই স্মার্টফোনের ছোট পর্দার ফন্টের দিকে দীর্ঘসময় ধরে তাকিয়ে থাকে, যা চোখের জন্য ক্ষতিকারক। যদি এরকম নিয়মিতভাবে করতে থাকে, তবে এর কারণে চোখে ঝাপসা দেখা, চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া, চোখের ওপর চাপ, মাথা ঘোরানো ইত্যাদি হতে পারে।

চোখের ওপর ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে মুখ থেকে ন্যূনতম ১৬ ইঞ্চি দূরত্বে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় প্রতি ২০ মিনিটের পর কিছুটা বিরতি নেয়ার চেষ্টা করুন এবং মোবাইলস্ক্রিন থেকে আপনার দৃষ্টি কোনো দূরের স্থানে স্থানান্তর করুন। চোখে কোনো ধরনের চাপ অনুভব করলে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

• ব্রেইন ক্যান্সারের ঝুঁকি

আপনি হয়তো জানেন যে, মোবাইল ফোনে ক্ষতিকর ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন রয়েছে। ক্যান্সার বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মাইক্রো ওয়েভ রেডিয়েশনের প্রভাবের অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের ব্রেইন টিউমার বা ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য ব্রেইন টিউমার বা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে দীর্ঘসময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিৎ নয়।

• ঘাড় ও পিঠে ব্যথা

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাদের স্ক্রিনে টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজ করতে থাকে। এসময় দীর্ঘক্ষণ একইরকমভাবে বসে বা শুয়ে থাকার কারণে ঘাড় ও পিঠের পেশীতে টান পড়তে পারে। ঘাড় ও পিঠে ব্যথার ঝুঁকি থেকে মুক্তি পেতে স্মার্টফোন ব্যবহার করার সময় আপনার শরীর ও মেরুদণ্ড সঠিকভাবে রাখুন।

• ঘুমের ব্যাঘাত

অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের প্রভাবে আরেকটি নেতিবাচক প্রভাব হচ্ছে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা। লোকজন প্রায়শই বিছানায় শুয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজ করতে ব্যস্ত থাকে, যার ফলে দেরিতে ঘুমায়। আবার ঘুমানোর পর মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ, ইমেইলসহ বিভিন্ন নোটিফিকেশনের শব্দও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

এই বদভ্যাস ঘুমের ব্যাঘাত ঘটনার সাথে সাথে অনিদ্রা বা ইনসোমোনিয়োর মতো ঝুঁকির দিকেও মানুষকে নিয়ে যায়। অনেকে আবার অ্যালার্ম সেট করে রাতে ফোনটি মাথার কাছে রাখে। ফোনের মাইক্রো-ওয়েভ রেডিয়েশনের মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে ক্যান্সার বা টিউমার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও নিয়মিত ঘুমের ব্যাঘাত, মাথা ঘোরা, হতাশা, মেজাজ খারাপ হওয়া, উদ্বেগ এবং আরও অনেক শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুম ভালো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অন্যতম প্রধান প্রয়োজন। তাই বিছানায় যাওয়ার পর আপনার স্মার্টফোনে ওয়েব ব্রাউজিং বা ভিডিও এবং সিনেমা দেখা বন্ধ করা উচিৎ। ঘুমের সময় মোবাইল ফোনটি শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে দূরে রাখতে ভুলবেন না।

• পুরুষের বন্ধ্যাত্ব

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোন পকেটে রাখলে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়। মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন শুক্রাণুর পরিমাণ, সংখ্যা ও ঘনত্ব হ্রাস করতে পারে। তবে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নারীদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের বিষয়ে কোনো শক্ত প্রমাণ পাওয়া যায় নি। সুতরাং পুরুষদের সারাক্ষণ পকেটে স্মার্টফোন রাখার বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিৎ।

• জীবাণু আক্রমণের ঝুঁকি

একটি মোবাইল ফোনের স্ক্রিন টয়লেটের চেয়েও বেশি জীবাণু ধারণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে ই. কোলির মতো ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যার কারণে ডায়রিয়া, জ্বর, সংক্রমণ, বমি ইত্যাদি হতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা মুখ স্মার্টফোনের স্ক্রিন চুষতে থাকে, যার মাধ্যমে তাদের শরীরে জীবাণু প্রবেম করতে পারে। বিভিন্ন রোগও ছড়াতে পারে। সুতরাং, আপনার বাচ্চাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখা উচিৎ। নিয়মিত মোবাইল ফোনের স্ক্রিনটি পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।

সর্বোপরি বলা হয়, বিশ্বব্যাপী মানুষ খুব দ্রুত গতিতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা চালিয়ে গেলে শিগগিরই মানুষের চেয়ে মোবাইল ফোনের সংখ্যা বেড় যাবে। এটাও সত্য যে, বর্তমান বিশ্বে মোবাইল ফোনের বিভিন্ন সুবিধার কথা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে কাজ, পড়াশোনা, বিনোদন বা সামাজিকীকরণের চেয়েও স্বাস্থ্য অত্যন্ত মূল্যবান। সুস্থ শরীর ও মন বজায় রাখার জন্য ভালো ঘুমের বিকল্প নেই। এজন্য মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এর পরিবর্তে আমরা পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারি এবং পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটাতে পারি।- ইউএনবি




আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হোক

 শিক্ষাক্রমে ২০০ নম্বরের ঐচ্ছিক কম্পিউটার শিক্ষার পরিবর্তে ১০০ নম্বরের আবশ্যিক ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ ছয়টি শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য

সরকারের এ উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেছিলেন তৎকালীন শিক্ষাসংশ্লিষ্ট একাধিক বিশেষজ্ঞ। এতে করে শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে আরো বেশি স্বাবলম্বী হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মূল যে হাতিয়ার তা হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করার জন্য দরকার দক্ষ আইসিটি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য দরকার ব্যবহারিকসহ উপযুক্ত কম্পিউটার শিক্ষা। কিন্তু কম্পিউটার শিক্ষায় ব্যবহারিক বাদ দিয়ে আইসিটির প্রয়োগ সম্ভব নয়। শুরু থেকে আবশ্যিক হওয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ব্যবহারিক এবং নম্বর বণ্টন বিষয়ে কোনো দিক নির্দেশনা না থাকলেও এনসিটিবিতে লেখকদের নিয়ে দফায় দফায় মিটিংয়ে এ বিষয়ে অবশ্যই প্র্যাকটিক্যাল থাকবে এবং এর জন্য নম্বর বরাদ্দ হলো ২৫, যা মৌখিকভাবে জানানো হলে লেখকরা তাঁদের বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরি করে এনসিটিবি থেকে অনুমোদন নিয়ে প্রকাশ করেছেন। প্রায় দুই ডজন বই অনুমোদন, পরিপত্র, অফিস নোটিশ ইত্যাদি আরো কত কিছু।

২০১৬ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আইসিটি বিষয়টি সৃজনশীল পরীক্ষার আওতায় আসে। গত বছরের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় আইসিটি বিষয় থেকে প্রশ্ন হয়েছে, শুধু তাই নয় যে কোনো চাকরির ইন্টারভিউ, বিসিএস পরীক্ষায় আইসিটি বিষয় থেকে প্রশ্ন আসে এবং এই ধারা অব্যাহত। চলমান এই বিষয়টি যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গেই চলছিল, হঠাৎ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষা হবে না বা বাতিল করা হয়েছে—ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও হাল ছেড়ে দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে পরীক্ষা হয় না সেই বিষয়ে ক্লাসও করতে চায় না; ফলে আইসিটির মতো বিশাল জ্ঞান থেকে পিছিয়ে পড়বে তারা।

অধিকাংশ স্কুল-কলেজে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যা আইসিটি শিক্ষা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে আইসিটি প্রয়োগের জন্য অন্যতম সহায়ক ভূমিকা রাখবে। কিন্তু আইসিটি পরীক্ষা না হলে আগ্রহ হারাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। সরকারি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত ল্যাবে ল্যাপটপ ও যন্ত্রপাতি অবহেলায় অযত্নে নষ্ট হবে।

২০২০ সালে মুজিব শতবর্ষ পালন উপলক্ষে এনসিটিবি কর্তৃক উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির আইসিটি বিষয়ে বই প্রকাশিত হয়। যা মুজিববর্ষের একটি উপহার। এই বছর শিক্ষার্থীরা ঐ বই পড়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করে প্রচার করা হচ্ছে আইসিটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে না। তাহলে কি মুজিব শতবর্ষে প্রকাশিত আইসিটির বোর্ড বইয়ের আলোকে প্রথমবারের মতো আইসিটি পরীক্ষা হবে না? বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

আইসিটি বিষয়ে পাশ পাওয়া অত্যন্ত সহজ এবং জিপিএ উন্নয়নের সহায়ক। সেখানে প্রচার করা হচ্ছে আইসিটি বিষয়টি ছাত্রছাত্রীদের জন্য কঠিন। ব্যবহারিক নম্বর ২৫ থাকায় এ+ নম্বর পাওয়া অত্যন্ত সহজ। কিন্তু মিথ্যা প্রচারণার কারণে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আজ হুমকির মুখে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ‘এসএসসি ও এইচএসসি-তে আইসিটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে না’ এমনটা এখনো প্রস্তাবিত আকারে আছে। যদি তাই হয় তবে প্রস্তাবনা বাতিল করে, পরীক্ষা বাতিল না করে, আইসিটির সংক্ষিপ্ত সিলেবাসকে আরো সংক্ষিপ্ত করে হলেও, মুজিব শতবর্ষের উপহার এনসিটিবির আইসিটি বইয়ের আলোকে প্রথমবারের পরীক্ষাটি, সব বিষয়ের মতো করেই অনুষ্ঠিত হবে—এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।




বরিশালের বাকেরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু

বরিশালের বাকেরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ঢালমারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, সোনিয়া আক্তার (৩২), তার মেয়ে সাবরিনা (৯) ও ছেলে সালমান। তার বয়স সাড়ে চার বছর। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবজাল হোসেন।
ওসি জানান, খেলার সময় শিশু সালমান বাড়ির পাশেই একটি লেবু গাছে হাত দেয়। ওই লেবু গাছের ওপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। সালমান হাত দেয়ার পর তাকে উদ্ধার করতে যায় বোন সাবরিনা। এসময় সেও বিদ্যুতায়িত হয়। পরে দুই সন্তানকে উদ্ধার করতে গিয়ে উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায় মা সোনিয়া আক্তারও।



গাজীপুরে বাংলাদেশ স্কাউটস এর উদ্যোগে তিন দিনব্যপী স্কিল ডেভেলপমেন্টে কোর্স শুরু

গাজীপুরে বাংলাদেশ স্কাউটস এর উদ্যোগে লিডার ট্রেনার ও সহকারী লিডার ট্রেনারদের জন্য ৩দিনব্যপী স্কিল ডেভেলপমেন্টে কোর্স শুরু হয়েছে।
জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মৌচাকে এ উপলক্ষে প্রধান অতিথী হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার(সংগঠন)ইউসুফ হারুন। বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার(এ্যাডাল্টস ইন স্কাউটিংভেল)ফেরদৌস আহমেদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ও বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার(জনসংযোগ ও মার্কেটিং)এম এম ফজলুল হক।
প্রধান অতিথীর বক্তব্যে ইউসুফ হারুন বলেন বাংলাদেশ স্কাউটস এখন ২৪ লাখ শিশু-কিশোর-যুবকদের বিশাল সংগঠন। এই বিশাল সংখ্যক সদস্যদের স্কিল ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে দেশ গঠনে নিয়োজিত করতে হবে।
ওয়ার্কশপে সারাদেশ থেকে বাছাইকৃত ৮০জন স্কাউট কর্মকর্তা যোগদান করেন।



কেরানীগঞ্জে কোনাখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

ঢাকার কেরানীগঞ্জে কোনাখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর  মোঃ ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে কেরানীগঞ্জ  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু রিয়াদের অফিসে এই অভিযোগ দায়ের করেন কোনাখোলা সিএনজি অটোরিকশার ড্রাইভারগন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,প্রতিদিন কোনা খোলা সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি অটো রক্সা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তিগত কাজে ঘোরাফেরা করেন। তার কাছে সিএনজির গ্যাস এবং ভাড়া চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সিএনজি ড্রাইভারকে মারধর করেন এবং তার সিএনজিটিও ভাঙচুর করেন। এভাবে তিনি ৮থেকে ১০ জন ড্রাইভারকে মারধর করেছেন এবং একাধিক সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করেছেন। সিএনজি অটো রিক্সার ড্রাইভারগন  ইন্সপেক্টর ফজলুর রহমানের  এসব কাজের প্রতিবাদ করলে তিনি তাদেরকে মামলার ভয় দেখান।
সিএনজি অটো রিক্সার ড্রাইভার মোঃ সেলিম সেলিম জানান, কোনাখোলা স্ট্যান্ড থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আটি বাজার, আব্দুল্লাহপুর ও কদমতলী গোলচত্তর এলাকায় প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে থাকে। এই সিএনজি অটো রিক্সা চালিয়ে তারা কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু প্রতিদিন এই সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে ইন্সপেক্টর ফজলুর রহমান নানা অজুহাতে ২/৩টি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। ভাড়া বাবদ  কোন টাকা পয়সা দেন না এমনকি গাড়ির গ্যাস পর্যন্ত তিনি দেন না। প্রতিবাদ করলে তিনি মারধর করেন গাড়ি ভাঙচুর করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। গাড়ি নিয়ে তিনি এই অবস্থা করলে আমরা তাহলে কি করে খাব।
মোঃ শওকত আলী নামে অপর এক সিএনজি অটো রিক্সার ড্রাইভার জানান, সরকারি কাজে প্রতিদিন আমরা একটি করে সিএনজি তার অফিসে দিয়ে থাকি। এতে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু তিনি  ব্যক্তিগত কাজে আমাদের কাছ থেকে জোর করে সিএনজি অটো রিক্সা নিয়ে ভাড়া না দিয়ে সারাদিন খাটায়। আমরা তার এই নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে চাই।
এ ব্যাপারে কোনাখোলা পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ  ফজলুর রহমান জানান, আমি কোন ব্যক্তিগত কাজে সিএনজি অটো রিক্সা  নেইনি। শুধু সরকারি কাজের জন্যই তাদের কাছ থেকে রিকুজেশন করে সিএনজি অটোরিকশা নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে সিএনজি অটো রিক্সা ড্রাইভার দের করা অভিযোগ সঠিক নয়।



শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে আইনি সহায়তা দিবে লিগ্যাল এইড: রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ

মাজহারুল ইসলাম চপল ব্যুরোচীফ: কুচকাওয়াজের মুহু মুহু শব্দ ও মনোমুগ্ধকর আয়োজনের মধ্যদিয়ে রাজশাহীতে পালিত হয়েছে জাতীয় আইন সহায়তা দিবস ২০২৪।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৯ টায় রাজশাহী আদালত চত্বরে দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকে নানা আয়োজনে পরিপূর্ণ ছিল। শুরুতে শান্তির প্রতীক পায়রা ও ফেস্টুন উড়িয়ে শুভ উদ্বোধন করেন রাজশাহী আদালতের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জনাব শেখ মফিজুর রহমান। উদ্বোধন শেষে র‌্যালিতে অংশগ্রহন করেন তিনি। র‌্যালিটি জেলা ও দায়রা জজ চত্বর থেকে বের হয়ে নগরীর ভেঁড়িপাড়া (ডিআইজি রেঞ্জ কার্যালয়) মোড় হয়ে আবারও ফিরে আসে আদালত চত্বরে।
র‌্যালি শেষে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী ও লিগ্যাল এইডের মেলা পরিদর্শন করেন এবং ফিতা কেটে স্টলগুলোর উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় স্টলের আয়োজকরা আইনি সহায়তা নিয়ে নানা উদ্যোগ এবং কিভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে আইনি সহায়তা পৌছানো যায় তা তুলে ধরেন।
সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায়, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ আল্লাম ও জেলা যুগ্ন জজ লুনা ফেরদৌস এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান, জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল বাহার, বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহ মোঃ জাকির হোসেন, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো: সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ও স্মার্ট বক্তব্য দিয়ে সকলকে আকর্ষিত করেন বিজ্ঞ মহানগর দায়রা জজ জনাব আল আসাদ মোঃ আসিফুজ্জামান। এমময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের (জেলা ও দায়রা জজ) বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও অন্যান্য বিচারকবৃন্দ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও সদস্যবৃন্দ, প্যানেল আইনজীবী, লিগ্যাল এইড ক্লায়েন্ট, লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্যবৃন্দ, কোর্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ, মহানগর পুলিশ, বিভিন্ন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ব্লাস্ট, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক, সচেতন, এইড কুমিল্লা, এসিডি, ওলার, পরিবর্তন, দিনের আলো হিজড়া সংঘ, অনগ্রসর সমাজ উন্নয়ন সংস্থা এবং অন্যান্য সকল স্তরের জনসাধারণ। আলোচনা সভায় দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা ও সেরা প্যানেল আইনজীবীদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে লিগ্যাল এইড দিবসের তাৎপর্য নিয়ে মুক্ত আলোচনা ও আইন সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারি জজ আরিফুল ইসলাম ।
সভাপতির সমাপণী বক্তব্যে জেলা আইনগত সহায়তা প্রদান কমিটির চেয়ারম্যান সম্মানিত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জনাব শেখ মফিজুর রহমান সরকারি আইনগত সহায়তা বিষয়ে বর্তমান সরকারের ভূমিকা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “স্মাট লিগ্যাল এইড স্মাট দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ”। আর্থিক অসচ্ছলতা ও অন্যান্য কারণে যাঁরা বিচার পেতে অসমর্থ বা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন, তাঁদের জন্য বিচারের পথ সুগম করতেই আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০ প্রণীত হয়েছিল। এটি একটি যুগান্তকারী ও জনবান্ধব আইন। দরিদ্র জনগণের প্রতি বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে সরকার সকল জেলায় লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করেছেন। দরিদ্র জনগণের আইন সহায়তা প্রাপ্তি সহজ করার লক্ষ্যে সরকার লিগ্যাল এইড অফিসার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, বেঞ্চ সহকারী ও পিয়নের পদ সৃষ্টি করেছেন। লিগ্যাল এইড কার্যক্রমে সকলের অংশগ্রহণ জরুরী বলে জানান এবং দরিদ্র মানুষের আইনগত অধিকার প্রাপ্তিতে সকলকে সাহায্য করার আহবান জানান। চলমান মামলার জট নিরসনে আপোষ-মিমাংসার মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি (এডিআর) এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন রাজশাহী জেলা লিগ্যাল এইড অফিস হতে এপ্রিল, ২০২৪ পর্যন্ত ১৪,৯৮২ টি মামলায় সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে মামলা নিস্পত্তি হয়েছে- ১১,৬৫১ টি, মামলা চলমান আছে- ৩,৩৩১ টি। ২০১৭ সাল হতে এপ্রিল, ২০২৪ পর্যন্ত ৩,০৩৫ জন আইনি পরামর্শ গ্রহণ করেছে। ২০১৬ সাল হতে এপ্রিল, ২০২৪ পর্যন্ত বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য (এডিআর) আবেদন করেছেন- ১৬৪৮ জন। যার মধ্যে নিস্পত্তি হয়েছে- ১৫২৯ টি, চলমান রয়েছে- ১১৯ টি এবং এডিআর এর মাধ্যমে টাকা আদায় করা হয়েছে- ১,৮৪,০৩,৮১১/- (এক কোটি চুরাশি লক্ষ তিন হাজার আটশত এগার) টাকা। আইনগত সহায়তা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি খুব দ্রুত রাজশাহী শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে লিগ্যাল এইড আইনি সহায়তা পৌছে যাবে।
পরে ২০২৩ সালের সেরা প্যানেল আইনজীবীকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। এ বছর সেরা প্যানেল আইনজীবী নির্বাচিত হয়েছেন এড. নীলিমা বিশ্বাস। সর্বশেষ তিনি সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

 




সারা দেশে আজ বিঘ্নিত হবে ইন্টারনেট সেবা

সাবমেরিন ক্যাবলের রক্ষণাবেক্ষণের কারণে আজ শনিবার (২ মার্চ) দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। সাবমেরিন ক্যাবল (সি-এমই-ডব্লিউই-৪) সিস্টেমের সিঙ্গাপুর প্রান্তে আজ রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলবে। এ কারণে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে।
বিষয়টি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)-এর পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গত বুধবার নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবমেরিন ক্যাবল (সি-এমই-ডব্লিউই-৪) সিস্টেমের সিঙ্গাপুর প্রান্তে কনসোর্টিয়াম কর্তৃক গৃহীত রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করার জন্য ২ মার্চ সকাল ৭টা হতে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা এই ক্যাবলের মাধ্যমে সংযুক্ত সার্কিটগুলো আংশিক বন্ধ থাকবে।
তবে কুয়াকাটায় স্থাপিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন (সি-এমই-ডব্লিউই-৫) ক্যাবলের মাধ্যমে সংযুক্ত সার্কিটগুলো যথারীতি চালু থাকবে বলেও জানানো হয়।
এ বিষয়ে গ্রাহকদের আগাম তথ্য জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে এবং মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে অপারেটর কোম্পানিগুলো। এসব বার্তায় বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সারাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিস ব্যবহারে অসুবিধা হতে পারে।



কারো মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের কী করতে হয়?

বিশ্বের কয়েকশ কোটি মানুষ সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। দিনের অনেকটা সময় কাটায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম স্ক্রোল করে। নিয়মিত ছবি, ভিডিও পোস্ট করে। সেগুলোর আবার লাইক, শেয়ার চেক করা হয়। এছাড়াও বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করা হয় সারাক্ষণ। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন আসে মৃত্যুর পর তার অনলাইনে উপস্থিতির কী হবে। অনেক সময় অ্যাকাউন্টের কী হবে তা ব্যবহারকারী নিজেই ঠিক করতে পারেন। কিন্তু বিষয়টি অনেকেই হয়তো জানেন না। এছাড়া স্বজন সামাজিক মাধ্যমকে ব্যক্তির মৃত্যু সম্পর্কে কিছু না জানানো পর্যন্ত তার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় থাকে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মৃত্যুর খবর জানালে কিছু সামাজিক মাধ্যম প্রোফাইল বন্ধ করে দেয়ার সুযোগ দেয়। আবার কিছু সামাজিক মাধ্যম দেয় ভিন্ন বিকল্প। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মেটার মালিকানাধীন ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে ব্যক্তির মৃত্যু সনদপত্র দিলে হয় অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করে দেয়া হয় অথবা মেমোরিয়ালাইজড করে দেয়া হয়। অর্থাৎ অ্যাকাউন্টটি একটি সময়ে আটকে যাবে এবং ব্যবহারকারীকে স্মরণ করবে। এ সময় অন্যরা অ্যাকাউন্টটিতে ছবি ও স্মৃতি পোস্ট করতে পারবে। মৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্টের নামের পাশে ‘ইন মেমোরিয়াম’ বা ‘স্মরণে’ লেখা থাকবে। কেউই ওই অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে বা চালাতে পারবে না, যদি না ব্যবহারকারী মৃত্যুর আগে কোনো ‘লিগ্যাসি কন্টাক্ট’ দিয়ে যায়।
সাধারণত পরিবারের কোনো সদস্য বা বন্ধুকে ‘লিগ্যাসি কন্টাক্ট’ হিসেবে দেয়া যায়। তারা মৃত ব্যক্তির একাউন্টের কন্টেন্ট পরিচালনা কিংবা ডিএক্টিভেটের (নিষ্ক্রিয়) অনুরোধ করতে পারে।  ফেসবুকে ‘পিপল ইউ মে নো’ বা ‘যাদের হয়তো আপনি চেনেন’ তালিকায় সম্ভাব্য ভার্চুয়াল বন্ধুদের কাছে মেমোরিয়ালাইজড অ্যাকাউন্ট দেখানো হয় না। আর মৃত ব্যক্তির বন্ধুদের কাছে তার জন্মদিনের কোনো নোটিফিকেশনও যায় না।
যেভাবে লিগ্যাসি কন্টাক্টের ফিচারের সুবিধা নিবেন
ফেসবুকের এ ফিচারটির সুবিধা পেতে হলে আপনাকে প্রথমে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তারপর অ্যাপ থেকে ফেসবুকে গিয়ে ঠিক ডানদিনে প্রোফাইল পিকচারের ছবিটিতে ক্লিক করতে হবে। এরপর একদম নিচে প্রাইভেসি অ্যান্ড সেটিংস অপশনে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে সেটিংস অপশনে ক্লিক করতে হবে।
সেখানে ক্লিক করার পর সেখানে বেশকিছু অপশন আসবে। সেখান থেকে অ্যাক্সেস অ্যান্ড কন্ট্রোল অপশনে ক্লিক করতে হবে। তারপর মেমোরিয়ালাইজেশন সেটিংসে গেলে ‘চুজ লিগেসি কন্টাক্টস’ অপশনটি আসবে।
সেখানে গিয়ে আপনি যার নামে অ্যাকাউন্টটি রেখে যেতে চান সার্চ অপশনে গিয়ে তার নাম লিখুন। এরপর ওই ব্যক্তির নাম আপনার স্ক্রিনে আসবে। সেখান থেকে আপনি তার নামে অ্যাকাউন্টটি করে দিতে পারবেন। তবে এটি করার জন্য ওই ব্যক্তিকে অবশ্যই আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড হতে হবে।
আপনি যখন কাউকে বেছে নেবেন তখন সঙ্গে সঙ্গে তার কাছেও একটি মেসেজ চলে যাবে। সেখানে লেখা থাকবে আপনি তাকে আপনার অবর্তমানে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টের ক্ষেত্রে কারো প্রোফাইল মেমোরিয়ালাইজড করার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে ব্যক্তির মৃত্যু হলে কিংবা একাউন্টের মালিক তা ব্যবহারে অক্ষম হলে অ্যাকাউন্টটি কেবল ডিএক্টিভেট করা যাবে।