সাবেক মন্ত্রী সাধন চন্দ্র গ্রেপ্তার

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদারকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাধন চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সেসব মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।




৬৯ বছর বয়সে এফ–১৬ যুদ্ধবিমান চালিয়ে রতন টাটা বলেছিলেন, ‘দারুণ’

তিনি একজন লাইসেন্সধারী পাইলট। ২০০৭ সালে লকহেড মার্টিনের এফ–১৬ যুদ্ধবিমান চালান তিনি। এর মধ্য দিয়ে তিনি অনন্য কীর্তি গড়েন। কেননা তখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। প্রথম বেসামরিক ভারতীয় হিসেবে এফ–১৬ চালানোর অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। নেমে আসার পর অনুভূতি জানাতে গিয়ে রতন টাটা বলেছিলেন, ‘এটা দারুণ ছিল।’

বলছি রতন টাটার কথা। ভারতের বিশ্ববিখ্যাত শিল্পপতিদের একজন রতন টাটা। দেশটির অন্যতম বৃহত্তম শিল্পপ্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপের ইমেরিটাস চেয়ারম্যান। ভারতের মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার তিনি মারা যান। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

টাটা শিল্পগোষ্ঠী ১৫৫ বছরের পুরোনো। দুই দশকের বেশি সময় ধরে এই শিল্পগোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়েছেন রতন টাটা। টাটা গ্রুপের রয়েছে শতাধিক কোম্পানি। কর্মী ৬ লাখ ৬০ হাজারের বেশি। কাজ চলে শতাধিক দেশে। শিল্পগোষ্ঠীটির বার্ষিক রাজস্ব আয় ১০ হাজার কোটি (১০০ বিলিয়ন) ডলারের বেশি।

২০০৭ সালে বেঙ্গালুরুতে ফ্যালকন মডেলের এফ–১৬ যুদ্ধবিমানের ককপিটে বসেন ৬৯ বছরের রতন টাটা। তিনি ছিলেন সহপাইলটের আসনে। যুদ্ধবিমানটি পরিচালনার মূল ভার ছিল পাইলট পল হ্যাটেনড্রফের হাতে। এফ–১৬ যুদ্ধবিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি।

ভারতীয় এই শিল্পপতি এফ–১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে আকাশে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন। মধ্য আকাশে যুদ্ধবিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নেন। তিনি সবচেয়ে বয়স্ক ভারতীয়, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত কোনো যুদ্ধবিমান পরিচালনা করেন।

এ ঘটনার বছর দশেক পর টাটা গ্রুপ এফ–১৬ যুদ্ধবিমানের প্রস্তুতকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান লকহেড মার্টিনের সঙ্গে একটি মাইলফলক চুক্তি করে। চুক্তির আওতায় ভারতে এফ–১৬ যুদ্ধবিমান নির্মাণের পথ উন্মুক্ত করেন রতন টাটা।

 




যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ‘সেভেন সিস্টার্স’

‘সেভেন সিস্টার্স’ শব্দযুগলের উপস্থিতি পাওয়া যায় গ্রিক মিথলজিতে, ব্যবহৃত হয় টাইটান আটলাস আর ওশেনিড প্লিওনের সাত মেয়েকে বোঝাতে।

‘সেভেন সিস্টার্স’ শব্দযুগলের সঙ্গে পাঠকদের পরিচয় মূলত ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের রাজ্যগুলোকে কেন্দ্র করে।

এসব রাষ্ট্রের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জনমিতি বিবেচনায় প্রথম ‘সেভেন সিস্টার্স’ শব্দযুগল ব্যবহার করেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সেভেন সিস্টার্স হিসেবে বোঝানো হয় সাতটি কলেজকে। বার্নাড কলেজ, স্মিথ কলেজ, ব্রায়ান মওর কলেজ, র‍্যাডক্লিফ কলেজ, ভাসার কলেজ, ওয়েসলি কলেজ ও মাউন্ট হলৌক কলেজকে একত্রে বলা হয় ‘সেভেন সিস্টার্স’।

নারীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে উচ্চশিক্ষার পথ খুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এসব কলেজ। আজকের লেখায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ বলতে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের সাতটি ‘সুইং স্টেট’ নিয়েই আলোচনা হবে।




রিসেট বাটন’ চাপার ব্যাখ্যা দিল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া সাক্ষাৎকার ঘিরে কেউ কেউ ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। ‘রিসেট বাটন’ চাপার কথা বলে তিনি কখনোই বাংলাদেশের গর্বিত ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেননি। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ড. ইউনূস ‘রিসেট বাটন’ চাপার কথাটি উল্লেখ করে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি, যা বাংলাদেশের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে এবং কোটি মানুষের ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার হরণ করেছে, সেটি থেকে বের হয়ে এসে নতুনভাবে শুরু করার কথা বুঝিয়েছেন। তিনি কখনোই বাংলাদেশের গর্বিত ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেননি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এখানে উল্লেখ্য, কেউ যখন কোনো ডিভাইসে রিসেট বোতাম চাপেন, তখন তিনি নতুন করে ডিভাইসটি চালু করতে সফটওয়্যার সেট করেন। এতে হার্ডওয়্যার পরিবর্তন হয় না। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের হার্ডওয়্যার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ড. ইউনূস গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিতে ঢাকায় আসার পর হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে জনগণ নেতৃত্ব দিয়েছে। এটি আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। প্রথম স্বাধীনতা ১৯৭১ সালে দেশের গৌরবময় স্বাধীনতাযুদ্ধ।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে অধ্যাপক ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই তিনি বাংলাদেশ সিটিজেনস কমিটি গঠন করেন। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে মার্কিন সরকারকে রাজি করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী প্রচার শুরু করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করার জন্য তিনি বাংলাদেশ নিউজলেটার প্রকাশ করেছিলেন।

 

 

 




রতন টাটায় ‘রত্ন’ হারাল ভারত, টেন্ডুলকার–রোহিতদের শোক

ভারতের বিশ্ববিখ্যাত শিল্পপতিদের একজন রতন টাটা। তিনি ছিলেন দেশটির অন্যতম বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপের ইমেরিটাস চেয়ারম্যান। মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার ৮৬ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

‘লবণ থেকে সফটওয়্যার’—সবই আছে টাটা গ্রুপের শিল্পে। ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে টাটা গ্রুপের নাম। ১৯৯৬ সালে টাইটান কাপ দিয়ে যে পথচলার শুরু হয়। টাইটান কাপের মূল স্পনসরশিপ ছিল টাটা গ্রুপের।

ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় শচীন টেন্ডুলকারের ভারত। তবে নব্বই দশকের শেষ দিকে ফিক্সিং বিতর্ক শুরুর পর ভারতীয় ক্রিকেট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন রতন টাটার নেতৃত্বাধীন টাটা গ্রুপ।

তখন আইপিএলের সঙ্গে চার বছরের জন্য ২৫০০ কোটি রুপির চুক্তি হয় কোম্পানিটির। অর্থের হিসাবে যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আইপিএলে সাফল্যের পর উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগও শুরু করে বিসিসিআই। ২০২৭ সাল পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টেরও টাইটেল স্পনসর টাটা গ্রুপ।

ব্যক্তিগতভাবে অনেক ক্রিকেটারের সঙ্গে দারুণ সখ্য ছিল রতন টাটার। সে কারণে তাঁর মৃত্যুতে ভারতের ক্রিকেটারদের মধ্যেই শোকের ছায়া নেমেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তাঁকে নিয়ে কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার লিখেছেন, ‘জীবন ও মৃত্যুতে মি. রতন টাটা পুরো জাতিকে আন্দোলিত করে গেছেন। তাঁর সঙ্গে সময় কাটাতে পেরে আমি ভাগ্যবান। যাঁরা তাঁর সঙ্গে কখনো সাক্ষাৎ করতে পারেননি, তাঁরা আজ আমি যতটা আক্ষেপে ভুগছি, ততটাই আক্ষেপে ভুগছেন। তাঁর প্রভাব ছিল এতটাই।’

ভারতের টেস্ট ও ওয়ানডে দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা এক্সে লিখেছেন, ‘মানুষটির হৃদয় যেন সোনা দিয়ে মোড়ানো। স্যার, বাকিদের ভালো রাখতে সত্যিকার অর্থেই নিজের জীবন কাটিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে চিরকাল মনে রাখা হবে।’

ভারতের আরেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার বীরেন্দ্রর শেবাগ এক্সে লিখেছেন, ‘আমরা ভারতের সত্যিকার এক রত্ন হারিয়েছি, শ্রী রতন টাটাজি। তাঁর জীবন আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণার, তিনি আমার হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’

ভারতের সাবেক উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিক লিখেছেন, ‘শান্তিতে ঘুমান, ভারতের আইকন। অনেকের রোল মডেল, পুরো জাতির অনুপ্রেরণা। মি. রতন টাটা আপনার উত্তরাধিকার চিরকাল টিকে থাকবে।’




বিমানে চাকরি, বেতন স্কেল ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

পদের নাম: সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্ট

পদসংখ্যা: ৫

আবেদনের যোগ্যতা: যেকোনো বিষয়ে স্নাতক পাস, কমপক্ষে সিজিপিএ ২.৮ (৪–এর মধ্যে) থাকতে হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রতিটিতে কমপক্ষে জিপিএ ৩.০ (৫–এর মধ্যে) অথবা ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে ২.৮ (৪–এর মধ্যে) থাকতে হবে। ‘ও’ লেভেলে গড়ে যেকোনো ৫টি বিষয়ে এবং ‘এ’ লেভেলে গড়ে যেকোনো ২টি বিষয়ে ন্যূনতম ‘ডি’ গ্রেড থাকতে হবে। অথবা স্নাতক পাস হতে হবে। শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে একটি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি বা বিভাগ থাকতে হবে, কোনো তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য নয়। স্নাতক ডিগ্রি ও পরিচ্ছন্ন সার্ভিস রেকর্ডধারী সশস্ত্র বাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত এনসিও/জেসিওদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সাবলীলভাবে বাংলা এবং ইংরেজি বলা ও লেখার দক্ষতা থাকতে হবে।

উচ্চতা

পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি থাকতে হবে।

বয়স

৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৩০ বছর বয়স। মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩২ বছর বয়স। অবসরপ্রাপ্ত এনসিও/জেসিও প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪০ বছর।

যেভাবে আবেদন

পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীরা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন ফি

আবেদন করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফি বাবদ ৩৩৫ টাকা জমা দিতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়: ২৯ অক্টোবর, ২০২৪।

 




পিরোজপুরে প্রাইভেট কার খালে, দুই পরিবারের ৮ জন নিহত

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গতকাল রাত তিনটার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলার নুরানি গেট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুর সদর উপজেলায় একটি প্রাইভেট কার খালে পড়ে দুই পরিবারের মোট আট সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে পিরোজপুর-নাজিরপুর সড়কের নুরানি গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পুরুষ, দুজন নারী ও চারটি শিশু রয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন শেরপুরের খোলআচার পাড়ার মোতালেব (৪৫), তাঁর স্ত্রী সাবিনা আক্তার (৩০), মেয়ে মুক্তা (১২) ও ছেলে সোয়াইব (২) এবং পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার হোগলাবুনিয়া গ্রামের শাওন মৃধা (৩২), তাঁর স্ত্রী আমেনা বেগম (২৯), ছেলে শাহাদাৎ (১০) ও আবদুল্লাহ (৩)।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গতকাল রাত তিনটার দিকে গাড়িটির ভেতর থেকে আটজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। পরে তাঁদের মরদেহ পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়।

শাওন মৃধার স্বজন মুরাদ বলেন, প্রাইভেট কারটি পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত থেকে পিরোজপুরের নাজিরপুর হয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল।

এ বিষয়ে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খান জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে মোতালেব নামের একজনের সঙ্গে পাওয়া পরিচয়পত্র থেকে প্রাথমিকভাবে তাঁর পরিচয় জানা গেছে। তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।




ঋতুপর্ণার স্বপ্নপূরণ

বাহারি চুলের ফুটবলকন্যা মাঠে আরও রঙিন। তার বাঁ পায়ের ফুটবলশৈলীতে শুধুই ছড়ায় মুগ্ধতা। অসাধারণ ড্রিবলিংয়ের সঙ্গে চোখ ধাঁধানো ফ্রি কিক; ঋতুপর্ণা চাকমা যেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের পোস্টার গার্ল। অতটা আলোচনায় না এলেও মধ্যমাঠের শিল্পী হিসেবে বেশ সুনাম তাঁর। 

গতকাল কাঠমান্ডুতে নারী সাফের ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে ৮১ মিনিটে যে গোলটি করেছিলেন তিনি, ধারাভাষ্যকাররা বলতে বাধ্য হয়েছেন ‘ওয়ান্ডারফুল’। গোল করার পর নিজের মুখে আঙুল দিয়ে ঋতুপর্ণা ভরা গ্যালারিকে চুপ থাকতে বলেছেন। তাঁর এই গোলেই দশরথের ১৬ হাজারের মতো দর্শক শুধুই চুপই হননি, বাংলাদেশের মেয়েরা যে গড়েছেন অনন্য কীর্তি। বড় কোনো ট্রফি জিতে ধরে রাখার কীর্তি ছেলেরাও পারেনি। সেটিই এবার করে দেখিয়েছেন সাবিনারা।

বুধবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জেতা বাংলাদেশের এই সাফল্যের অন্যতম কারিগর তো রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার মোগাছড়ি গ্রামের কন্যা ঋতুপর্ণা। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপন আলোয় উজ্জ্বল থাকা এ মিডফিল্ডার করেছেন দুই গোল। তবে গোলের জন্য নয়, নজরকাড়া পারফরম্যান্স আর ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বেশ কয়েকটি গল্প লেখায় এবারের আসরে সেরা ফুটবলারের পুরস্কারটি উঠেছে ঋতুপর্ণার হাতে।

পুরস্কার মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলা এ প্লে-মেকার ভাসছেন স্বপ্নপূরণের উচ্ছ্বাসে, ‘এই মুহূর্তে খুবই ভালো লাগছে। আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। এই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। আমি আসলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। আমরা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমার পরিবার আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সমর্থকদের দোয়ায় আমরা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’

বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঋতুপর্ণা যখন আক্রমণ শানান, তখন প্রতিপক্ষ হয়ে যায় এলেমেলো। ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ম্যাচের ৭ মিনিটে তাঁর বাঁ পায়ের বুলেটগতির শটই চলে যায় জালে। অথচ তার আগ পর্যন্ত গোল না পাওয়ার আক্ষেপ ছিল তাঁর কণ্ঠে। শেষ চারে সেই আক্ষেপ পূরণের পর ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে করেছেন জয়সূচক গোল।

বড় ম্যাচের ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা ঋতুপর্ণার জীবনে ২০২২ সালে নেমে এসেছিল আঁধার। ওই বছরের জুনে আদরের ছোট ভাই পার্বন চাকমার মৃত্যুটি তাঁর জন্য বড় আঘাত হয়ে এসেছিল। এরপর সিনিয়র সাফ জেতার সঙ্গে যত কিছুই অর্জন করেছেন, প্রতিবারই প্রিয় ভাই পার্বনকে মনে করেছিলেন। এবারও হয়তো টুর্নামেন্ট সেরার ট্রফিটা প্রয়াত ছোট ভাইকে উৎসর্গ করেছেন মধ্যমাঠের শিল্পী ঋতুপর্ণা চাকমা।




ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মিল্টন, জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি ফ্লোরিডার বাসিন্দারা

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দারা তড়িঘড়ি করে জরুরি প্রস্তুতি শেষ করছেন। কেউ আবার এরই মধ্যে ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছেন। কারণ, সেখানে ধেয়ে আসছে বিপজ্জনক ঘূর্ণিঝড় হারিকেন মিল্টন।

হারিকেন মিল্টন পাঁচ মাত্রার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৫ মাইল বা ২৭০ কিলোমিটার। আজ বুধবার রাতে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ণ শক্তিতে ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হারিকেন হেলেনের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই অঙ্গরাজ্যটি আবারও দুর্যোগের মুখে পড়ল।

ব্রাডেনটন শহরের বাসিন্দা জেরাল্ড লেমাস বলেন, ‘পাঁচ মাত্রা মানে, আপনার দিকে দৈত্যাকার একটি ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে।’ বর্তমানে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন লেমাস। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে থাকতে চাই না। যেখানেই আঘাত করুক না কেন, এটি হতে যাচ্ছে জীবন তছনছ করে দেওয়া ঝড়।’

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল মঙ্গলবার ফ্লোরিডার বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে সতর্ক করেছেন। কারণ, এটি ‘জীবন-মৃত্যুর’ ব্যাপার। স্থানীয় প্রশাসন এরই মধ্যে সাধারণ মানুষকে ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেসানটিস গতকাল বলেন, ফ্লোরিডায় কয়েক ডজন আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। দানবীয় এই ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাঁচাতে নিরাপদ এলাকায় এসব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।

দক্ষিণ ফ্লোরিডার পেট্রল স্টেশনগুলোয় লম্বা লাইন দেখা গেছে। অনেক স্টেশনে এরই মধ্যে জ্বালানি শেষ হয়ে এসেছে। এ বিষয়ে গভর্নর ডেসানটিস বলেন, নিরবচ্ছিন্ন অপসারণ কার্যক্রম চালানোর জন্য স্টেশনগুলোয় পেট্রল সরবরাহ করা হচ্ছে। রাস্তার পাশে চার্জিং স্টেশন বসানো হয়েছে।

অন্যদিকে হারিকেন মিল্টনের প্রস্তুতি এবং হেলেনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে চলমান কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য বাইডেনের জার্মানি ও অ্যাঙ্গোলা সফর বাতিল করেছে হোয়াইট হাউস। গতকাল হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, ফ্লোরিডায় গত এক শতকের মধ্যে এটি হতে যাচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। তিনি ফ্লোরিডার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, ‘এখনই এলাকা খালি করুন, এখনই, এখনই।

দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বে তাণ্ডব চালায় হারিকেন হেলেন। ২০০৫ সালে ক্যাটরিনার পর এটি ছিল মূল ভূখণ্ডে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়। এতে অন্তত ২২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ফ্লোরিডায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। কয়েক শ মানুষ এখনো নিখোঁজ।

ফ্লোরিডার আনা মারিয়া শহরে নিজের ঘরটি মেরামত করতে হিমশিম খাচ্ছেন এমএল ফার্গুসন। গত মাসে হারিকেন হেলেনে তাঁর ঘরটি খুব বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফার্গুসন বলেন, ‘হেলেনের চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ হতে পারে হারিকেন মিল্টনের প্রভাব। আমার গাড়িটি মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আমাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। আমার জিনিসপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের পর আমি প্রকৃত অর্থে গৃহহীন হয়ে পড়ব।’

ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার শক্তিশালী বাতাসের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে সতর্ক করেছে। হারিকেন হেলেনের কারণে রাস্তায় পড়ে থাকা অনেক ধ্বংসাবশেষ বাতাসে উড়ে এসে বিপদ ঘটাতে পারে।

ফ্লোরিডায় ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে সর্বোচ্চ ১৫ ইঞ্চি বা ৩৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। আর উপকূলীয় অঞ্চলে ১০ থেকে ১৫ ফিট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কাউন্টিগুলো সোমবার থেকে অপসারণের আদেশ জারি করতে শুরু করেছে। পশ্চিম ও মধ্য ফ্লোরিডার রাস্তাগুলোয় টোল স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল থেকে অনেক কাউন্টিতে স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত টাম্পা ও অরল্যান্ডোর বিমানবন্দরগুলোয় ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।




৬৫১ দিন টেস্টে ফিফটি নেই বাবরের, দুর্দশা কাটবে কবে

টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট উঁচিয়ে ধরতে বাবর আজম বোধ হয় ভুলেই গেছেন! এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে সর্বশেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এরপর তো সময় কম হয়নি। দিনের হিসাবে ৬৫১ দিন।

কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুযোগ এসেছিল। সেই সুযোগটাও কাজে লাগাতে পারেননি। মুলতানের ব্যাটিং–স্বর্গে দিনের একেবারে শেষ দিকে ক্রিস ওকসের বলে আউট হয়েছেন ৩০ রান করে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাবরের খেলা শেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংসটি ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। করাচিতে করেছিলেন ১৬১ রান। এরপর যে কী হলো! সেই ইনিংসের পর এই সংস্করণে বাবর খেলেছেন ১৭ ইনিংস।

যেখানে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ৪১ রানের, অস্ট্রেলিয়া সফরে। এই ১৭ ইনিংসে বাবরের গড় মাত্র ২১.২৩। টেস্ট ক্যারিয়ারে এত দীর্ঘ সময়ে কখনোই ব্যাট না উঁচিয়ে থাকেননি বাবর। এর আগে ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে টানা ৭ ইনিংসে ফিফটি পাননি। কোথায় ৭ ইনিংস, কোথায় ১৭!

ফিফটির খরায় ভোগা বাবর অবশ্য এই খারাপ সময়েও বেশির ভাগ ম্যাচেই ভালো শুরু পেয়েছেন। এই ১৭ ইনিংসের মধ্যে ১২ ইনিংসেই ২০ রানের বেশি করেছেন বাবর। অর্থাৎ তিনি শুরুটা পাচ্ছেন। তবে সেটা ধরতে রাখতে পারছেন না। তবে এমন খারাপ সময় কাটানোর পরও টেস্টে বাবরের গড় ৪৪.৩৫। এই বাজে সময়ের আগে টেস্টে বাবরের গড় ছিল প্রায় ৫০।

বাবরের বর্তমান গড়ের যেকোনো ব্যাটসম্যানকেই আসলে নির্দ্বিধায় ভালো বলা যায়। আর তাঁর এমন ভালো গড়ের মূল কারণে ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়টা।
২০১৯ সালের শুরু থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টেস্টে বাবরের গড় ছিল প্রায় ৬০। এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাবরের গড় ৫০-এর বেশি—৫২.৫০।

ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাবর ব্যাটিং করেছেন ৪৮ গড়ে, শ্রীলঙ্কার মাটিতে তো প্রায় ৭০ আর দেশের মাটিতে বাবর ব্যাটিং করেছেন ৭৫ গড়ে। এই সময়টায় বাবরের দারুণ পারফরম্যান্সের কারণেই মূলত বিরাট কোহলি, জো রুটদের সঙ্গে তাঁর তুলনার কথা উঠেছিল। তবে এখন বোধ হয় সে তুলনাটাই আর আসবে না!

ফর্মে ফেরার জন্য ইংল্যান্ড সিরিজে বাবর আরও সুযোগ পাবেন। তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের পরের টেস্টটিও মুলতানে, শেষ টেস্ট রাওয়ালপিন্ডিতে। অর্থাৎ আগামী দুই টেস্টেও মোটামুটি ব্যাটিং–স্বর্গেই ব্যাট করবেন বাবর। সুযোগটা শুধু পারলেই হয়!