বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্বে উইলিয়ামসন

কেন উইলিয়ামসনকে অধিনায়ক করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নবম আসরের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেডসি)।

আগামী ২ থেকে ৩০ জুন যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের জন্য সবার আগে দল দিল নিউজিল্যান্ড। সোমবার তারা দল ঘোষণার সাথে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের আদলে নিজেদের জার্সিও উন্মোচন করে।

অধিনায়ক হিসেবে চতুর্থবারের মত কিউইদের নেতৃত্ব দিবেন উইলিয়ামসন। সব মিরিয়ে ষষ্ঠবার খেলবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন নিউজিল্যান্ডের টেস্ট দলের অধিনায়ক টিম সাউদি। টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ১৫৭ উইকেটের মালিক ৩৫ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ পেসার।

ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মাতাবেন আরেক অভিজ্ঞ পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। সাউদির সাথে বোলিং আক্রমনে থাকবেন এই ৩৪ বছর বয়সী।

প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে দেখা যাবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে উদীয়মান ক্রিকেটার হিসেবে মনোনয়নের তালিকায় থাকা পেসার ম্যাট হেনরি এবং ব্যাটিং অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্রকে।

নিউজিল্যান্ডের প্রধান কোচ গ্যারি স্টিড বলেন, ‘আপনি যখন বিশ্বকাপে খেলতে যাবেন তখন আপনার অভিজ্ঞতার দরকার হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি দারুন একটি দল যেখানে ভারসাম্য, উইকেট এবং কন্ডিশন বিবেচনা করে আমাদের কেনের মত অনেক বিকল্প আছে।’

ইনজুরির কারণে দলে সুযোগ হয়নি পেসার এডাম মিলনে এবং কাইল জেমিসনের।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নিউজিল্যান্ড দল: কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ফিন অ্যালেন, ট্রেন্ট বোল্ট, মাইকেল ব্রেসওয়েল, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, লুকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, ড্যারিল মিচেল, জিমি নিশাম, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি ও টিম সাউদি।

 




উইকেট শিকারীদের তালিকায় শীর্ষে ফিরলেন মুস্তাফিজ

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চেন্নাই সুপার কিংসের বড় জয়ের ম্যাচে টুর্নামেন্টে উইকেট শিকারী বোলারদের তালিকার শীর্ষে ফিরেছেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।

রোববার রাতে টুর্নামেন্টের ৪৬তম ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দারাবাদকে ৭৮ রানে হারিয়েছে চেন্নাই।

এ ম্যাচে ২.৫ ওভার বল করে ১৯ রানে ২ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। এর ফলে দুই পেসার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জসপ্রিত বুমরাহ ও পাঞ্চাব কিংসের হার্সাল প্যাটেলের সাথে ১৪ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে তালিকার শীর্ষে ফিরলেন মুস্তাফিজ। বুমরাহ ও প্যাটেল ৯টি করে এবং মুস্তাফিজ ৮টি ম্যাচ খেলেছেন।

নিজেদের মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারে ওপেনার আজিঙ্কা রাহানে ৯ রানে আউট হলেও অধিনায়ক ঋুতুরাজ গায়কোয়াড় ও নিউজিল্যান্ডের ড্যারিল মিচেলের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২১২ রানের বড় সংগ্রহ পায় চেন্নাই।

জবাবে খেলতে নেমে চেন্নাইয়ের বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করেন হায়দারাবাদ। ৭ বল বাকী থাকতে ১৩৪ রানে অলআউট হয় তারা।

ম্যাচে নিজের প্রথম ওভারে ৮ ও দ্বিতীয় ওভারে ৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মুস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে তৃতীয়বারের মত আক্রমনে এসে ৫ বলে ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন কাটার মাস্টার।

আইপিএলে বোলারদের পার্পল ক্যাপ জেতার প্রধান মানদণ্ড উইকেটসংখ্যা। একাধিক বোলার সমানসংখ্যক উইকেট পেলে ম্যাচ বা স্ট্রাইক রেট দেখা হয় না। বিবেচনায় নেওয়া হয় ইকোনমি, অর্থাৎ ওভারপ্রতি কে কেমন রান দিয়েছেন। ঠিক এ জায়গাতেই বুমরার চেয়ে পিছিয়ে মোস্তাফিজ। মুম্বাইয়ের বুমরা এখন পর্যন্ত ৩৬ ওভার বল করে দিয়েছেন ২৩৯ রান, ওভারপ্রতি ৬.৬৩ করে। আর মোস্তাফিজ ৩০.২ ওভারে ২৯৬ রান দিয়েছেন ৯.৭৫ ইকোনমিতে।

পাঞ্জাবের হার্শাল অবশ্য রান দিয়েছেন আরও বেশি হারে—ওভারপ্রতি ১০.১৮ করে। সব মিলিয়ে পার্পল ক্যাপের লড়াইয়ে বুমরা এখন এক নম্বরে, মোস্তাফিজ দুই আর হার্শাল তিন নম্বরে।

 




দারুণ জয়ে প্রিমিয়ার লিগে টিকে রইল রূপগঞ্জ

দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। সেই লড়াইয়ে কোনো বিভাগেই প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারল না গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি। তাদের উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের টিকে থাকা নিশ্চিত করেছে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব।

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে সোমবার ৭ উইকেটে জেতে রূপগঞ্জ টাইগার্স। বোলারদের মিলিত প্রচেষ্টায় গাজী টায়ার্সকে ২০৬ রানে গুটিয়ে দেয় দলটি। পরে জয়ের সহজ পথ তৈরি করে দেন দুই ওপেনার মাহফিজুল ইসলাম ও জসিম উদ্দিন। রেলিগেশন লিগের শেষ ম্যাচটিতে ২০৭ রানের লক্ষ্য ৯৫ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলে তারা।

রূপগঞ্জ টাইগার্স সব মিলিয়ে ১৩ ম্যাচে জিতল ৪টিতে। আগের ম্যাচে সিটি ক্লাবের বিপক্ষে জিতলেও শেষ ম্যাচ হেরে আবার প্রথম বিভাগে নেমে গেল গাজী টায়ার্স। প্রথমবার ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে এসে স্রেফ এক আসর টিকতে পারল তারা।

গাজী টায়ার্সের আগেই অবনমিত হয়েছে ১৩ ম্যাচে স্রেফ ২ জয় পাওয়া সিটি ক্লাব। এই দুই দলের জায়গায় প্রথম বিভাগ থেকে উন্নীত হয়ে আগামী মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ খেলবে অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ও গুলশান ক্রিকেট ক্লাব।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে গাজী টায়ার্সের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্ক স্পর্শ করেন। কিন্তু ইনিংস টেনে লম্বা করতে পারেননি কেউই।

সাত নম্বরে নামা অধিনায়ক গাজী তাহজিবুল ইসলামের ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ বলে ৫২ রানের ইনিংসে কোনোমতে দুইশ পেরোয় দল।

রূপগঞ্জের কোনো বোলার একাধিক উইকেট নিতে পারেননি। তবে আঁটসাঁট বোলিংয়ে সম্মিলিত অবদান রাখেন সবাই।

রান তাড়ায় মাহফিজুল ও জসিমের ব্যাটে ১৫১ বলে ১৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় রূপগঞ্জ টাইগার্স। ২৬তম ওভারে শামিম মিয়ার বলে ফেরেন দুজনই। ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৭৭ বলে ৭৪ রান করেন মাহফিজুল। জসিমের ব্যাট থেকে আসে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৭৫ বলে ৭৭ রান।

চতুর্থ উইকেটে ৩১ বলে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় নিশ্চিত করেন সালমান হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।

৭৪ রানের ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মাহফিজুল। ১১ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে ৪১০ রান করে এবারের লিগ শেষ করলেন ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলা এই ওপেনার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: ৫০ ওভারে ২০৬/৭ (মহব্বত ২৭, ইফতেখার হোসেন ২৭, আশিকুর ১৭, হাফিজুর ২১, শামিম ৩২, আশরাফুল ২, তাহজিবুল ৫২*, ইফতেখার সাজ্জাদ ১৪, আরিদুল ১*; মহিউদ্দিন ১০-০-৩৫-১, আরিফুল ৬-১-১৯-১, মামুন ৮-০-৩৫-০, হাশিম ১০-২-৩৩-১, সোহাগ ১০-০-৪২-১, গালিব ৫-০-২৭-১, আইচ ১-০-১১-০)

রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৩৪.১ ওভারে ২০৭/৩ (মাহফিজুল ৭৪, জসিম ৭৭, শামসুর ৭, সালমান ২৩*, মামুন ২০*; ইকবাল ৩-০-২৩-০, লিওন ৫-০-১৬-০, আরিদুল ৮-০-৩৮-১, ইফতেখার হোসেন ৪-০-৩৬-০, ইফতেখার সাজ্জাদ ৪-০-২৫-০, হাফিজুর ৩-০-১৭-০, শামিম ৫-০-৪৪-২, আশরাফুল ২.১-০-৮-০)।

ফল: রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে জয়ী।




ওষুধের দাম বাড়ানো বন্ধে প্রশাসনকে নির্দেশ

খেয়াল খুশিমতো ওষুধের দাম বাড়ানো বন্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য সচিব ও ওষুধ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আদালত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেন। ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে যাতে সরকারের অনুমোদন ব্যতীত কাঁচামাল আমদানি করতে না পারে।

এছাড়া দেশের ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর বেআইনিভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ বন্ধে ব্যবস্থা না নেয়া কেন অবৈধ নয় এ বিষয়ে একটি রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

 




থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর শেষে ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোমবার সকালে (স্থানীয় সময়) ব্যাংকক ত্যাগ করেন।

শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উভয় সফরের অংশ হিসেবে ২৪ এপ্রিল বিকেলে ব্যাংকক পৌঁছেন।

শেখ হাসিনা ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তাকে ১৯ বার তোপধ্বনি ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।




প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরের টেন্ডার জালিয়াতি, ২ আসামি রিমান্ডে

প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরের টেন্ডার জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষতিসাধনের মামলায় মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লি: এর দুই কর্মচারীর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন- মো. রবিউল করিম (৪৫) ও শান্তনু কুমার দাশ (৪৬)।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে গত ২৪ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) বিলাল আল আজাদের করা আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন আসামিদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ্ দিবা ছন্দার আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৪ এপ্রিল আসামিদের আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। অপরদিকে আসামি পক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসাথে রিমান্ড শুনানির জন্য ২৯ এপ্রিল ধার্য করেন।

আদালতে গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহ আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কোম্পানির (মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লি:) চাকরির বিধি অনুযায়ী চাকরি করাকালীন কোন কর্মচারী সমজাতীয় পণ্যের ব্যবসা বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবে না। প্রতিষ্ঠানটি জাপানি কোম্পানি Fuji Film এবং Shimadzu এর একক পরিবেশক হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে আসছে। ১ নং আসামি তথা মো. রবিউল করিমকে কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা ক্রয়, মহাদপ্তরে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। গত ১ এপ্রিল প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশের মাধ্যমে কোম্পানি জানতে পারে যে, ১ নং আসামি কোম্পানিতে কর্মরত থাকাবস্থায় সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধভাবে এবং সরকারি সংস্থার নিকট তথ্য গোপন করে প্রতারণা ও সরকারি টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্য অপর একটি প্রতিষ্ঠান দ্যা ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল নামে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে। এবং সেই প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং ব্যবস্থাপনার অংশীদার হিসেবে স্বাক্ষর করেন। এছাড়াও তিনি প্রযুক্তি ইন্টারন্যাশনাল নামীয় অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত আছেন। কারণ দর্শানোর নোটিশ থেকে কোম্পানি জানতে পারে যে ২নং আসামি তথা শান্তনু কুমার দাশ আসামি রবিউলের ব্যবসায়ী অংশীদার হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে এমন বেআইনি কাজ করছে। আসামি রবিউল কোম্পানির লেটার হেড জাল করে জাল স্বাক্ষর করে প্রতারণামূলকভাবে গত ১৩ এপ্রিল প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর পত্র ইস্যু করে এবং উল্লেখ করেন তিনি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে আছেন।

তথ্য গোপন করে ১ নং আসামি তার ব্যক্তিগত এবং দ্যা ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল নামীয় কোম্পানি মেডি গ্রাফিক কোম্পানির বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন এবং আসামিরা বিভিন্ন নামে বেনামে অনেক সম্পত্তি অর্জন করেন। যদিও তারা সামান্য বেতনে কোম্পানিতে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। অবৈধ অর্জনের মাধ্যমে আসামি রবিউল ঢাকার মধ্যে বিলাসবহুল ৪ টি ফ্ল্যাট, রংপুরে বাগান বাড়ি, নাটোর ৫০ বিঘা জমির মালিক হন। আসামিদের কাছে মালামাল বিক্রয়ের হিসাব চাইলে তারা হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়। আসামি শান্তনু বিভিন্ন জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ ও বেআইনিভাবে কোম্পানির টাকা আত্মসাৎ করে ২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, ২টি প্লট, গাড়ি ও ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা নামে-বেনামে জমা রাখে।

আসামিরা দি ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল এর নামে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লি. থেকে সম্পূর্ণ খরচ দেখিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি করে টাকা আত্মসাৎ করত। ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তথ্য গোপন করে মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লি. এর প্রায় বিশ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে এবং ব্যবসায়িক প্রায় ত্রিশ কোটি ক্ষতিসাধন করে।

এ ঘটনায় মেডি গ্রাফিকের এডমিন অফিসার শেখ জাকির হোসেন বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণার উদ্দেশ্য জালজালিয়াতি, নকল দলিল ব্যবহার, কোম্পানির অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়।




মঙ্গলবার ২৫ জেলার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) খুলনা, রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলা, ঢাকা বিভাগের ৬ জেলা, রংপুরে ২ জেলা এবং বরিশালের এক জেলাসহ মোট ২৫ জেলার স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের এ তথ্য জানিয়েছেন।

আবুল খায়ের জানান, দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলার, ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ জেলার, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর জেলার এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (৩০ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।

খুলনা বিভাগের জেলাগুলো হলো— যশোর, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, খুলনা জেলা। রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো হলো— রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরহাট।

এদিকে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল-মাদ্রাসার ক্লাস আগামী ২ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে যেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে বা পরীক্ষা চলমান আছে সেসব স্কুলের জন্য এবং ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না বলে আদেশে বলা হয়েছে।

হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা করলেও মাধ্যমিক, কারগরি, মাদ্রসা ও কলেজ পর্যায়ে শুধু মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের এটা নিয়ে মন্ত্রী বা সচিব পর্যায়ে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে শিক্ষামন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অতিরিক্ত সচিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার কথা বলছে, কিন্তু বুধবার ১ মে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের সরকারি ছুটি। মঙ্গলবার বন্ধ তার সঙ্গে বুধবার সরকারি ছুটি। দুই দিলে আবহাওয়ার পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। এজন্য টানা বৃহস্পতিবার বন্ধ ঘোষণা না করে কৌশলে একদিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে আবহওয়ার পরিস্থিতি উন্নতি হলে বৃহস্পতিবার থেকে স্কুল খুলে দেওয়া হবে। আর টানা বন্ধ ঘোষণা করলে বা ছুটি বাতিল করলে এটা নিয়ে সমালোচনা বেশি হবে।

গতকাল (রোববার) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক বার্তায় জানানো হয়েছিল, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠান চাইলে খোলা রাখতে পারবে।

এর আগে রমজান, ঈদুল ফিতর ও তীব্র তাপদাহের কারণে সাতদিনসহ মোট ১ মাস ৩ দিনের ছুটি শেষে রোববার খুলে দেশের সব স্তুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু দেশের অনেক জায়গায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক আহত হওয়ায় রোববার মাধ্যমিক স্কূল, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।




বিএনপির ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নজির নেই: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন মানেনি।

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?

তিনি আরও বলেন, তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে। ৫০১ জনের জাম্বুজেট মার্কা কমিটি তাদের। কাজেই যাদের নিজেদের দলের ভেতরেই গণতন্ত্র নেই, তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে- এ আশা আমরা করি না।

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।




আ’লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক কাল

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক বসছে মঙ্গলবার। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠক শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, বৈঠকে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে দলের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব-কোন্দল বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বিশেষ করে দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের স্বজনকে প্রার্থী করা এবং প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার বিষয়টিও থাকবে। ফলে তৃণমূল পর্যায়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব-কোন্দল নিরসনের কৌশল নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে বৈঠকে।

এ ছাড়া দলের অন্য সাংগঠনিক বিষয়ের পাশাপাশি সর্বশেষ আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জাতীয় ও দলীয় বিভিন্ন দিবসের কর্মসূচিও চূড়ান্ত করা হবে বৈঠকে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

 




‘কথা না শোনা’ মন্ত্রী-এমপির কপাল পুড়ছে

নির্দেশনা আমলে না নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে স্বজন প্রার্থী হওয়ায় কপাল পুড়তে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগদলীয় এমপি ও মন্ত্রীর। সাংগঠনিক শাস্তির খড়্গ নেমে আসছে তাদের ওপর। কেড়ে নেওয়া হতে পারে দলীয় পদ-পদবি। এমনকি আগামী সংসদ নির্বাচনে তারা দলের মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। যে কোনো সময় মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন দলের কড়া বার্তা কানে না তোলা মন্ত্রীরা।

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন এমপির স্বজন দলের নির্দেশ না মেনে উপজেলা নির্বাচনে লড়ছেন। তাদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে সে কথায় চিড়ে ভেজেনি! এক এমপিও তাদের স্বজনকে ভোটের মাঠ থেকে তুলে নেননি। এ নিয়ে দলের ভেতরেই দেখা দিয়েছে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া।

এ পরিস্থিতিতে স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী ও দলীয় এমপির তালিকা তৈরি করা হয়। এর মধ্যে আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলা নির্বাচনে যেসব মন্ত্রী ও এমপির স্বজন প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তালিকা চূড়ান্ত করেন দলের আট সাংগঠনিক সম্পাদক।

এ তালিকায় থাকা মন্ত্রী ও এমপির বিষয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনার কথা রয়েছে বলে বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা সমকালকে জানিয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। অভিযুক্ত এমপির কয়েকজন, যারা দলের কার্যনির্বাহী সংসদে আছেন, তারাও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। তাদের মধ্যে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। তবু মন্ত্রীসহ দলের কয়েকজন এমপির স্বজন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। দলের নির্দেশে শুধু ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক এবং নাটোরের সিংড়ার চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণের অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মাজহারুল ইসলাম সুজন এমপির দুই চাচা মোহাম্মদ আলী, সফিকুল ইসলাম ও ভাতিজা আলী আফসার রানা, নীলফামারীর ডিমলায় আফতাব উদ্দিন সরকার এমপির চাচাতো ভাই আনোয়ারুল হক সরকার ও ভাতিজা ফেরদৌস পারভেজ, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সাহাদারা মান্নান এমপির ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজল, সোনাতলায় এমপির ভাই মিনহাদুজ্জামান লিটন, পাবনার বেড়ায় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ভাই আবদুল বাতেন ও ভাতিজা আবুল কালাম সবুজ, কুষ্টিয়া সদরে মাহবুবউল-আলম হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতা, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় আলী আজগর টগর এমপির ভাই আলী মুনসুর বাবু, পিরোজপুরের নাজিরপুরে শ ম রেজাউল করিম এমপির ভাই এস এম নুর ই আলম সিদ্দিকী, মাদারীপুর সদরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান ও চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান, নরসিংদীর পলাশে ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ এমপির শ্যালক শরীফুল হক, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রার্থী হয়েছেন শাহাব উদ্দিন এমপির ভাগনে সোয়েব আহমদ, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এমপির ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী, কক্সবাজারের মহেশখালীতে আশেক উল্লাহ রফিক এমপির চাচাতো ভাইয়ের ছেলে হাবিব উল্লাহ।

এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, লাকসামে মন্ত্রীর শ্যালক মহব্বত আলী এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিক এমপির ভাই সালাম মল্লিক।

অবশ্য এ প্রার্থীদের কেউ কেউ মন্ত্রী ও দলের এমপির স্বজন হয়েও ছাড় পাবেন। দলের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সমকালকে জানান, মন্ত্রী ও দলের এমপির স্বজনের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। আর স্বজন বলতে মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী, সহোদর ভাইবোন, ছেলে ও ছেলের স্ত্রী, মেয়ে ও মেয়ের স্বামীকেই বোঝানো হয়েছে। অন্য সম্পর্কের স্বজনের বেলায় দলের নির্দেশ কার্যকর হবে না। আর গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা মন্ত্রী এবং দলের এমপির স্বজন হলেও তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সাংগঠনিক বিধান প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।

তবে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যেসব মন্ত্রী ও এমপির স্বজন নির্বাচনে রয়ে গেছেন, তাদের নিয়ে দলের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের। এতে কেউ সাড়া দেননি। এ ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, সময়মতো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও এমপির বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলী ও সম্পাদকমণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য বলেন, দলের নির্দেশ না মানায় বহিষ্কারের নিয়ম রয়েছে। তবে সংসদের সদস্যপদ হারাতে পারেন বলে এমপিদের দল থেকে বহিষ্কার করতে দল চাইবে না। তবে নানাভাবেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দলের সংশ্লিষ্ট এমপি ও মন্ত্রীকে তিরষ্কার করার পাশাপাশি দলীয় পদ-পদবি কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে জোর আলোচনা রয়েছে। এমনকি সাংগঠনিক যোগ্যতা থাকার পরও তারা নতুন করে দলের পদ-পদবি নাও পেতে পারেন। সেই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়াটা তাদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। আর অভিযুক্ত মন্ত্রী যে কোনো সময়েই মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন। সেই সঙ্গে তিনবার বিজয়ী এমপির মধ্যে যাদের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা কমে আসতে পারে। অবশ্য এসব বিষয়ে এখনই দলের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে না।

এদিকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সমকালকে বলেন, অভিযুক্ত মন্ত্রী এবং দলীয় এমপিকে শোকজ করা হতে পারে।