ভিনিসিয়ুসকে নয়, বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে বেবেতো–বুনোচ্চি–লামরা সেই রদ্রিকেই বেছে নিলেন

এবারের ব্যালন ডি’অরে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে রীতিমতো তুলকালাম হয়ে গেছে। পুরস্কার ঘোষণার মাসখানেক আগে থেকেই ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ভিনিসিয়ুস জুনিয়রই হচ্ছেন বর্ষসেরা ফুটবলার।

রিয়াল মাদ্রিদও নিজেদের খেলোয়াড়ের ব্যালন ডি’অর জয় উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছিল। কিন্তু পুরস্কার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে বদলে যায় পুরো দৃশ্যপট।

রদ্রির ব্যালন ডি’অর জয়ের খবর সামনে আসার পর রিয়াল কর্তৃপক্ষ নিজেদের প্যারিস সফরও বাতিল করে দেয়।

তবে এর মধ্যেই রিয়ালকে আরেকবার হতাশাজনক খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। ব্যালন ডি’অরের মতো তারাও বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচন করেছে রদ্রিকেই।

গার্ডিয়ানের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের ২৩ সাবেক ফুটবলার। যে তালিকায় ইতালির কিংবদন্তি ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চি, জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ফিলিপ লাম এবং ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী তারকা বেবেতোও আছেন।

কোচদের মধ্যে নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় ছিলেন গ্যালাতাসারাইয়ের কোচ ওকান বুরুক, আইসল্যান্ডের আফতুরেল্ডিং ক্লাবের কোচ মাগনাস মার এইনারসন এবং ব্রাজিলের ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের সহকারী কোচ ক্লেবের জাভিয়ার। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের শতাধিক সাংবাদিকও নিজেদের মত দিয়েছেন খেলোয়াড় নির্বাচনে।

খেলোয়াড় নির্বাচনে প্রত্যেক বিচারকের পছন্দের ক্রমের এক নম্বর খেলোয়াড় পেয়েছেন ৪০ পয়েন্ট করে এবং দ্বিতীয় পছন্দের খেলোয়াড় ৩৯ পয়েন্ট। এভাবে ৪০ নম্বর খেলোয়াড়টি পেয়েছেন ১ পয়েন্ট। এরপর সব ভোট এক করে একটি স্কোর নির্ধারণ করা হয়।

এবারের ভোটিংয়ে রদ্রি পেয়েছেন ৭৪৯৫ পয়েন্ট, আর রদ্রি পেয়েছেন ৭৪২৭ পয়েন্ট। অর্থাৎ রদ্রি শেষ পর্যন্ত জিতেছেন ৬৮ পয়েন্টের ব্যবধানে। যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৯২ জন সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বেছে নিয়েছেন রদ্রিকে। আর ৭২ জনের প্রথম পছন্দ ছিলেন ভিনিসিয়ুস।

ব্যালন ডি’অরের সঙ্গে শীর্ষ দুইয়ে মিল থাকলেও পরবর্তী স্থানগুলোয় কিছু অদল–বদল এসেছে। ব্যালন ডি’অরে তৃতীয় হয়েছেন জুড বেলিংহাম। যিনি গার্ডিয়ানের তালিকায় নেমে গেছেন পাঁচ নম্বরে। আর ব্যালন ডি’অরে পাঁচে থাকা হলান্ড গার্ডিয়ানে আছেন তিন নম্বরে।

 




রাবাদা-ইয়ানসেনে পাকিস্তানকে অবিশ্বাস্যভাবে হারিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা

রোমাঞ্চকর এক সমাপ্তির আভাস নিয়েই আজ সেঞ্চুরিয়নে শুরু হয় দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান প্রথম দিনের চতুর্থ দিনের খেলা।

যারা আজ সুপারস্পোর্ট পার্কে খেলা দেখতে গেছেন, তাঁরা হতাশ হননি। হতাশ হননি যাঁরা টেলিভিশনের সামনে বসে এই খেলা দেখেছেন তাঁরাও। কী রোমাঞ্চকর এক লড়াই-ই না উপহার দিল দুই দল!

রুদ্ধশ্বাস সেই লড়াই শেষে শেষ হাসিটা হাসল দক্ষিণ আফ্রিকা।  ১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা প্রোটিয়ারা ৯৯ রানেই হারিয়ে ফেলে ৮ উইকেট। তিন বছর পর পাকিস্তানের টেস্ট দলে ফেলা পেসার মোহাম্মদ আব্বাস ৬ উইকেট নিয়েই দারুণ এক জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন পাকিস্তানকে। কিন্তু মার্কো ইয়ানসেনের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানিদের সেই স্বপ্ন কেড়ে নিলেন কাগিসো রাবাদা।

আব্বাসের করা ইনিংসের ৪০তম ওভারের তৃতীয় বলটাকে মার্কো ইয়ানসেন পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে সীমানাছাড়া করতেই ‘বিশ্বজয়ের’ উদ্‌যাপনে মাতল দক্ষিণ আফ্রিকানরা। প্রায় হেরে বসা ম্যাচে এমনভাবে জিতেই বিশ্বজয়ের আরেকটু কাছে পৌঁছে গেল দলটি। ২ উইকেটের এই জয়েই যে প্রথম দল হিসেবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করে ফেলল দক্ষিণ আফ্রিকা

শেষ চারটি মেরে যখন দলকে জেতালেন ইয়ানসেন, তাঁর নামের পাশে অপরাজিত ১৬ রান। ৫০ রানের নবম উইকেট জুটিতে সঙ্গী রাবাদার রান ২৬ বলে ৩১।

দক্ষিণ আফ্রিকা দিনটা শুরু করেছিল ৩ উইকেটে ২৭ রান নিয়ে। দলটির ভরসা হয়ে টিকে ছিলেন এইডেন মার্করাম। আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকার তোলা ২৭ রানের ২২-ই এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। সেই মার্করাম আজ অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে নিয়ে দিনের প্রথম ঘণ্টাটা নিরাপদেই পাড়ি দেন। ৩ উইকেটে ৬২ রান নিয়ে ড্রিংকস বিরতিতে যায় প্রোটিয়ারা।

বিরতির পর খেলা শুরু হতেই বদলে যায় সব। প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ আব্বাসের কিছুটা নিচু হয়ে যাওয়া নিখুঁত লেংথের এক বলে বোল্ড মার্করাম (৬৩ বলে ৩৭ রান)। মার্করাম বিদায় নিলেও অবিচলই ছিলেন বাভুমা। ডেভিড বেডিংহামকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৩৪ রান যোগ করে ফেলেন অধিনায়ক।

এরপর কী যেন হলো বাভুমার। আব্বাসের করা মোটামুটি নিরীহ এক বলকে আড়াআড়ি ব্যাট চালিয়ে মিড উইকেট দিয়ে সীমানাছাড়া করতে চেয়েছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। কিন্তু বলটি বাভুমার ব্যাটে বাতাস লাগিয়ে চলে যায় মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে। হালকা শব্দ শুনেই আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার। সেটি মেনে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান বাভুমা। সেখানে ফিরে নিশ্চিত সতীর্থদের ভর্ৎসনা শুনেছেন বাভুমা, টিভি রিপ্লেতে যে আলট্রা এজ প্রযুক্তি বল ব্যাটের সংযোগের প্রমাণ দিতে পারেনি। এই ঘটনার সময় দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ২৯.৪ ওভারে ৯৬/৫।

পরের ওভারের নাসিম শাহ বোল্ড করে দেন কাইল ভেরেইনাকে। ৯৯ রানের প্রতিপক্ষের ৬ উইকেট তুলে নিয়ে হঠাৎই জয়ের সুবাস পেতে শুরু করা পাকিস্তানকে পরের ওভারে আরও ২টি উইকেট এনে দেন আব্বাস। ডেভিড বেডিংহামকে কিছুটা শর্ট বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করার পরের বলেই অভিষিক্ত করবিন বশকেও একইভাবে ফেরান আব্বাস।

তাতে ৪ বলের মধ্যে ৯৯/৫ থেকে ৯৯/৮ হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর তিন বছর পর টেস্টে ফিরেই ক্যারিয়ারসেরা বোলিং পেয়ে যান আব্বাস। ২৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৬ উইকেট পেয়ে পেছনে ফেলেন ২০১৮ সালে আবুধাবিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গড়া রেকর্ডকে (৫/৩৩)।

ক্রিকেটের বিশ্ব মঞ্চে বারবার চাপের মুখে ভেঙে পড়ার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করছে দক্ষিণ আফ্রিকা, এমনটাই মনে হচ্ছিল তখন। কিন্তু রাবাদা ও ইয়ানসেনের ইতিহাসের উল্টো স্রোতে হাঁটার ইচ্ছেই হলো। আব্বাসের সেই ওভারে চতুর্থ বলে চার মেরেই চাপটাপ সব দূরে সরানোর কাজ শুরু করেন রাবাদা। আর কোনো উইকেট না হারিয়ে দলের স্কোরটাকে ১১৬ রানে নিয়ে লাঞ্চে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এরপর খেয়েদেয়ে মাঠে ফিরে ৬ ওভারের মধ্যেই পাকিস্তানের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে অবিশ্বাস্য সেই জয় রাবাদা-ইয়ানসেনদের।

৩ জানুয়ারি কেপটাউনে শুরু হবে সিরিজের শেষ টেস্ট।




নিউজিল্যান্ড: হিসাবে রাখতেই হবে

বিশ্ব আসরে ‘ডার্ক হর্স’ তকমা নিউজিল্যান্ডের জন্য অপরিচিত নয়। কিন্তু দিন শেষে সবচেয়ে ধারাবাহিক দলগুলোর ছোট তালিকাতেই থাকে তারা। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ব্যতিক্রম নয়। শুধু ট্রফিটাই ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। সর্বশেষ তিনটি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলা একমাত্র দল নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ২০২১ সালে ফিরতে হয়েছে রানার্সআপ হয়ে। সেটাই এখন পর্যন্ত দলটির সেরা অর্জন।

এবারও ফেবারিট তকমা হয়তো সেভাবে নেই, তবে ভারসাম্যপূর্ণ দলটিকে কেউ হিসাবের বাইরে রাখতে চাইবেন না। নিউজিল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চারটি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন উইলিয়ামসন। চোট, বিশ্রাম আর পিতৃত্বকালীন ছুটি মিলিয়ে অবশ্য দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকে দূরে ছিলেন। ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নিউজিল্যান্ডের প্রথম ৩৫টি টি–টোয়েন্টির মধ্যে মাত্র দুটিতে খেলেছিলেন উইলিয়ামসন।

দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিউই নির্বাচকেরা যে অভিজ্ঞতাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন, সেটা সর্বশেষ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সঙ্গে এবারের দলটিকে মেলালেই বোঝা যায়। গত আসরের দল থেকে বাদ পড়েছেন মাত্র দুজন—মার্টিন গাপটিল আর অ্যাডাম মি। তাঁদের জায়গায় সুযোগ পাওয়া রাচিন রবীন্দ্র ও ম্যাট হেনরির এটাই হতে চলেছে প্রথম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

১৫ সদস্যের দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ টিম সাউদি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক সাউদি খেলবেন সপ্তম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অন্যদিকে সাউদির দীর্ঘদিনের বোলিং সঙ্গী ট্রেন্ট বোল্টের এটি হবে পঞ্চম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সাউদি–বোল্ট জুটির সঙ্গে লকি ফার্গুসন ও ম্যাট হেনরিকে নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ যেকোনো দলকে ঝামেলায় ফেলতে পারে। দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিমি নিশাম ও ড্যারিল মিচেলও ক্যারিবীয় কন্ডিশনে কার্যকরী হতে পারেন।

স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপসও বেশ ধারাবাহিক। ছন্দে আছেন লেগ স্পিনার ইশ সোধিও। চোটের কারণে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিস করা আরেক স্পিন অলরাউন্ডার মাইকেল ব্রেসওয়েলও দলে ফিরেছেন। শীর্ষ সারির ক্রিকেটাররা আইপিএলে ব্যস্ত থাকায় গত এপ্রিলে পাকিস্তান সফরে যায় দ্বিতীয় সারির দল, তাতে নেতৃত্ব দেন ব্রেসওয়েলই। পূর্ণ শক্তির পাকিস্তানের বিপক্ষে সে সিরিজ ড্র করে নিউজিল্যান্ড।

ব্যাটিং লাইনআপও বেশ শক্তিশালী। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত শুরু এনে দিতে পারেন ফিন অ্যালেন। রবীন্দ্রও পাওয়ারপ্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান তুলতে পারেন। চোটের কারণে আইপিএল মিস করা ডেভন কনওয়ে ফিরবেন বিশ্বকাপ দিয়ে। দলের প্রথম পছন্দের উইকেটকিপারও কনওয়ে। টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডারে দলের হাল ধরতে আছেন উইলিয়ামসন ও মিচেল। শেষ দিকে মার্ক চ্যাপম্যান, ফিলিপস, নিশামরা বদলে দিতে পারেন ম্যাচের গতিপথ। সাম্প্রতিক সময়ে ফিনিশারের ভূমিকায় দারুণ করেছেন চ্যাপম্যান, যা নিউজিল্যান্ডের জন্য বাড়তি পাওনা।




ঋতুপর্ণার স্বপ্নপূরণ

বাহারি চুলের ফুটবলকন্যা মাঠে আরও রঙিন। তার বাঁ পায়ের ফুটবলশৈলীতে শুধুই ছড়ায় মুগ্ধতা। অসাধারণ ড্রিবলিংয়ের সঙ্গে চোখ ধাঁধানো ফ্রি কিক; ঋতুপর্ণা চাকমা যেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের পোস্টার গার্ল। অতটা আলোচনায় না এলেও মধ্যমাঠের শিল্পী হিসেবে বেশ সুনাম তাঁর। 

গতকাল কাঠমান্ডুতে নারী সাফের ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে ৮১ মিনিটে যে গোলটি করেছিলেন তিনি, ধারাভাষ্যকাররা বলতে বাধ্য হয়েছেন ‘ওয়ান্ডারফুল’। গোল করার পর নিজের মুখে আঙুল দিয়ে ঋতুপর্ণা ভরা গ্যালারিকে চুপ থাকতে বলেছেন। তাঁর এই গোলেই দশরথের ১৬ হাজারের মতো দর্শক শুধুই চুপই হননি, বাংলাদেশের মেয়েরা যে গড়েছেন অনন্য কীর্তি। বড় কোনো ট্রফি জিতে ধরে রাখার কীর্তি ছেলেরাও পারেনি। সেটিই এবার করে দেখিয়েছেন সাবিনারা।

বুধবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জেতা বাংলাদেশের এই সাফল্যের অন্যতম কারিগর তো রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার মোগাছড়ি গ্রামের কন্যা ঋতুপর্ণা। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপন আলোয় উজ্জ্বল থাকা এ মিডফিল্ডার করেছেন দুই গোল। তবে গোলের জন্য নয়, নজরকাড়া পারফরম্যান্স আর ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বেশ কয়েকটি গল্প লেখায় এবারের আসরে সেরা ফুটবলারের পুরস্কারটি উঠেছে ঋতুপর্ণার হাতে।

পুরস্কার মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলা এ প্লে-মেকার ভাসছেন স্বপ্নপূরণের উচ্ছ্বাসে, ‘এই মুহূর্তে খুবই ভালো লাগছে। আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। এই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। আমি আসলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। আমরা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমার পরিবার আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সমর্থকদের দোয়ায় আমরা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’

বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঋতুপর্ণা যখন আক্রমণ শানান, তখন প্রতিপক্ষ হয়ে যায় এলেমেলো। ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ম্যাচের ৭ মিনিটে তাঁর বাঁ পায়ের বুলেটগতির শটই চলে যায় জালে। অথচ তার আগ পর্যন্ত গোল না পাওয়ার আক্ষেপ ছিল তাঁর কণ্ঠে। শেষ চারে সেই আক্ষেপ পূরণের পর ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে করেছেন জয়সূচক গোল।

বড় ম্যাচের ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা ঋতুপর্ণার জীবনে ২০২২ সালে নেমে এসেছিল আঁধার। ওই বছরের জুনে আদরের ছোট ভাই পার্বন চাকমার মৃত্যুটি তাঁর জন্য বড় আঘাত হয়ে এসেছিল। এরপর সিনিয়র সাফ জেতার সঙ্গে যত কিছুই অর্জন করেছেন, প্রতিবারই প্রিয় ভাই পার্বনকে মনে করেছিলেন। এবারও হয়তো টুর্নামেন্ট সেরার ট্রফিটা প্রয়াত ছোট ভাইকে উৎসর্গ করেছেন মধ্যমাঠের শিল্পী ঋতুপর্ণা চাকমা।




৬৫১ দিন টেস্টে ফিফটি নেই বাবরের, দুর্দশা কাটবে কবে

টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট উঁচিয়ে ধরতে বাবর আজম বোধ হয় ভুলেই গেছেন! এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে সর্বশেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এরপর তো সময় কম হয়নি। দিনের হিসাবে ৬৫১ দিন।

কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুযোগ এসেছিল। সেই সুযোগটাও কাজে লাগাতে পারেননি। মুলতানের ব্যাটিং–স্বর্গে দিনের একেবারে শেষ দিকে ক্রিস ওকসের বলে আউট হয়েছেন ৩০ রান করে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাবরের খেলা শেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংসটি ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। করাচিতে করেছিলেন ১৬১ রান। এরপর যে কী হলো! সেই ইনিংসের পর এই সংস্করণে বাবর খেলেছেন ১৭ ইনিংস।

যেখানে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ৪১ রানের, অস্ট্রেলিয়া সফরে। এই ১৭ ইনিংসে বাবরের গড় মাত্র ২১.২৩। টেস্ট ক্যারিয়ারে এত দীর্ঘ সময়ে কখনোই ব্যাট না উঁচিয়ে থাকেননি বাবর। এর আগে ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে টানা ৭ ইনিংসে ফিফটি পাননি। কোথায় ৭ ইনিংস, কোথায় ১৭!

ফিফটির খরায় ভোগা বাবর অবশ্য এই খারাপ সময়েও বেশির ভাগ ম্যাচেই ভালো শুরু পেয়েছেন। এই ১৭ ইনিংসের মধ্যে ১২ ইনিংসেই ২০ রানের বেশি করেছেন বাবর। অর্থাৎ তিনি শুরুটা পাচ্ছেন। তবে সেটা ধরতে রাখতে পারছেন না। তবে এমন খারাপ সময় কাটানোর পরও টেস্টে বাবরের গড় ৪৪.৩৫। এই বাজে সময়ের আগে টেস্টে বাবরের গড় ছিল প্রায় ৫০।

বাবরের বর্তমান গড়ের যেকোনো ব্যাটসম্যানকেই আসলে নির্দ্বিধায় ভালো বলা যায়। আর তাঁর এমন ভালো গড়ের মূল কারণে ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়টা।
২০১৯ সালের শুরু থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টেস্টে বাবরের গড় ছিল প্রায় ৬০। এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাবরের গড় ৫০-এর বেশি—৫২.৫০।

ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাবর ব্যাটিং করেছেন ৪৮ গড়ে, শ্রীলঙ্কার মাটিতে তো প্রায় ৭০ আর দেশের মাটিতে বাবর ব্যাটিং করেছেন ৭৫ গড়ে। এই সময়টায় বাবরের দারুণ পারফরম্যান্সের কারণেই মূলত বিরাট কোহলি, জো রুটদের সঙ্গে তাঁর তুলনার কথা উঠেছিল। তবে এখন বোধ হয় সে তুলনাটাই আর আসবে না!

ফর্মে ফেরার জন্য ইংল্যান্ড সিরিজে বাবর আরও সুযোগ পাবেন। তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের পরের টেস্টটিও মুলতানে, শেষ টেস্ট রাওয়ালপিন্ডিতে। অর্থাৎ আগামী দুই টেস্টেও মোটামুটি ব্যাটিং–স্বর্গেই ব্যাট করবেন বাবর। সুযোগটা শুধু পারলেই হয়!




ম্যাকগার্ককে বিশ্বকাপের দলে চান ক্লার্ক

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের নতুন পাওয়ার হিটার জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ককে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য জাতীয় দলে দেখতে চান দেশটির সাবেক অধিনায়ক মাইকেল 

চলতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ম্যাকগার্কের পাওয়ার হিটিংয়ে মুগ্ধ হয়েছেন ক্লার্ক। তিনি জানান, ম্যাকগার্কের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কারনে বিশ্বকাপের জন্য তাকে ভাবতে হবে নির্বাচকদের।

এবারের আইপিএলে প্রথমবারের মত খেলার সুযোগ পান ম্যাকগার্ক। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই চমক দেখান তিনি। তিন নম্বরে নেমে ১৫৭ স্ট্রাইক রেটে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৩৫ বলে ৫৫ রান করেন এই ডান-হাতি ব্যাটার।

এরপর সানরাইজার্স হায়দারাবাদের বিপক্ষে নিজের ভয়ংকর রুপ দেখান ম্যাকগার্ক। ৩৬১ স্ট্রাইক রেটে ৫টি চার ও ৭টি ছক্কায় ১৮ বলে ৬৫ রান করেন তিনি। ঐ ম্যাচে ১৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করে এবারের আইপিএল দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েন তিনি। এ ম্যাচেই থেমে যায়নি ম্যাকগর্কের পাওয়ার হিটিং।

গতকাল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ওপেনার হিসেবে নামেন ম্যাকগার্ক। এবার মুম্বাইয়ের বোলারদের তুলোধুনো করে আবারও ১৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। নিজের রেকর্ড স্পর্শ করা ম্যাচে ৩১১ স্ট্রাইক রেটে ১১টি বাউন্ডারি ও ৬টি ওভার বাউন্ডারিতে ২৭ বলে ৮৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন ম্যাকগার্ক।

দিল্লির হয়ে এখন পর্যন্ত ৫ ইনিংসে ২৩৭ স্ট্রাইক রেটে ও ৪৯ গড়ে ২৪৭ রান করেছেন ম্যাকগার্ক। এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কারণেই আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলে ম্যাকগার্ককে চান অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ক্লার্ক।

আইপিএলের ম্যাচ চলাকালীন ধারাভাষ্যকক্ষে ক্লার্ক বলেন, ‘ম্যাকগার্ককে নিয়ে এখন ভাবতে হবে নির্বাচকদের। দল সাজানোর জন্য আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। সত্যি বলতে, সে যেভাবে খেলছে তাকে বাদ দেওয়া কঠিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি ওয়েস্ট ইন্ডিজেও কন্ডিশন একই হবে। স্লোয়ার উইকেটে পাওয়ার প্লেতে অতিরিক্ত শক্তির প্রয়োজন।  নিজের সম্ভাবনা তৈরি করেছে সে এবং আমি তাকে ১৫ জনের দলে দেখতে চাই।’

 




বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্বে উইলিয়ামসন

কেন উইলিয়ামসনকে অধিনায়ক করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নবম আসরের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেডসি)।

আগামী ২ থেকে ৩০ জুন যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের জন্য সবার আগে দল দিল নিউজিল্যান্ড। সোমবার তারা দল ঘোষণার সাথে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের আদলে নিজেদের জার্সিও উন্মোচন করে।

অধিনায়ক হিসেবে চতুর্থবারের মত কিউইদের নেতৃত্ব দিবেন উইলিয়ামসন। সব মিরিয়ে ষষ্ঠবার খেলবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন নিউজিল্যান্ডের টেস্ট দলের অধিনায়ক টিম সাউদি। টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ১৫৭ উইকেটের মালিক ৩৫ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ পেসার।

ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মাতাবেন আরেক অভিজ্ঞ পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। সাউদির সাথে বোলিং আক্রমনে থাকবেন এই ৩৪ বছর বয়সী।

প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে দেখা যাবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে উদীয়মান ক্রিকেটার হিসেবে মনোনয়নের তালিকায় থাকা পেসার ম্যাট হেনরি এবং ব্যাটিং অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্রকে।

নিউজিল্যান্ডের প্রধান কোচ গ্যারি স্টিড বলেন, ‘আপনি যখন বিশ্বকাপে খেলতে যাবেন তখন আপনার অভিজ্ঞতার দরকার হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি দারুন একটি দল যেখানে ভারসাম্য, উইকেট এবং কন্ডিশন বিবেচনা করে আমাদের কেনের মত অনেক বিকল্প আছে।’

ইনজুরির কারণে দলে সুযোগ হয়নি পেসার এডাম মিলনে এবং কাইল জেমিসনের।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নিউজিল্যান্ড দল: কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ফিন অ্যালেন, ট্রেন্ট বোল্ট, মাইকেল ব্রেসওয়েল, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, লুকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, ড্যারিল মিচেল, জিমি নিশাম, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি ও টিম সাউদি।

 




উইকেট শিকারীদের তালিকায় শীর্ষে ফিরলেন মুস্তাফিজ

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চেন্নাই সুপার কিংসের বড় জয়ের ম্যাচে টুর্নামেন্টে উইকেট শিকারী বোলারদের তালিকার শীর্ষে ফিরেছেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।

রোববার রাতে টুর্নামেন্টের ৪৬তম ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দারাবাদকে ৭৮ রানে হারিয়েছে চেন্নাই।

এ ম্যাচে ২.৫ ওভার বল করে ১৯ রানে ২ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। এর ফলে দুই পেসার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জসপ্রিত বুমরাহ ও পাঞ্চাব কিংসের হার্সাল প্যাটেলের সাথে ১৪ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে তালিকার শীর্ষে ফিরলেন মুস্তাফিজ। বুমরাহ ও প্যাটেল ৯টি করে এবং মুস্তাফিজ ৮টি ম্যাচ খেলেছেন।

নিজেদের মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারে ওপেনার আজিঙ্কা রাহানে ৯ রানে আউট হলেও অধিনায়ক ঋুতুরাজ গায়কোয়াড় ও নিউজিল্যান্ডের ড্যারিল মিচেলের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২১২ রানের বড় সংগ্রহ পায় চেন্নাই।

জবাবে খেলতে নেমে চেন্নাইয়ের বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করেন হায়দারাবাদ। ৭ বল বাকী থাকতে ১৩৪ রানে অলআউট হয় তারা।

ম্যাচে নিজের প্রথম ওভারে ৮ ও দ্বিতীয় ওভারে ৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মুস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে তৃতীয়বারের মত আক্রমনে এসে ৫ বলে ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন কাটার মাস্টার।

আইপিএলে বোলারদের পার্পল ক্যাপ জেতার প্রধান মানদণ্ড উইকেটসংখ্যা। একাধিক বোলার সমানসংখ্যক উইকেট পেলে ম্যাচ বা স্ট্রাইক রেট দেখা হয় না। বিবেচনায় নেওয়া হয় ইকোনমি, অর্থাৎ ওভারপ্রতি কে কেমন রান দিয়েছেন। ঠিক এ জায়গাতেই বুমরার চেয়ে পিছিয়ে মোস্তাফিজ। মুম্বাইয়ের বুমরা এখন পর্যন্ত ৩৬ ওভার বল করে দিয়েছেন ২৩৯ রান, ওভারপ্রতি ৬.৬৩ করে। আর মোস্তাফিজ ৩০.২ ওভারে ২৯৬ রান দিয়েছেন ৯.৭৫ ইকোনমিতে।

পাঞ্জাবের হার্শাল অবশ্য রান দিয়েছেন আরও বেশি হারে—ওভারপ্রতি ১০.১৮ করে। সব মিলিয়ে পার্পল ক্যাপের লড়াইয়ে বুমরা এখন এক নম্বরে, মোস্তাফিজ দুই আর হার্শাল তিন নম্বরে।

 




দারুণ জয়ে প্রিমিয়ার লিগে টিকে রইল রূপগঞ্জ

দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। সেই লড়াইয়ে কোনো বিভাগেই প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারল না গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি। তাদের উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের টিকে থাকা নিশ্চিত করেছে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব।

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে সোমবার ৭ উইকেটে জেতে রূপগঞ্জ টাইগার্স। বোলারদের মিলিত প্রচেষ্টায় গাজী টায়ার্সকে ২০৬ রানে গুটিয়ে দেয় দলটি। পরে জয়ের সহজ পথ তৈরি করে দেন দুই ওপেনার মাহফিজুল ইসলাম ও জসিম উদ্দিন। রেলিগেশন লিগের শেষ ম্যাচটিতে ২০৭ রানের লক্ষ্য ৯৫ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলে তারা।

রূপগঞ্জ টাইগার্স সব মিলিয়ে ১৩ ম্যাচে জিতল ৪টিতে। আগের ম্যাচে সিটি ক্লাবের বিপক্ষে জিতলেও শেষ ম্যাচ হেরে আবার প্রথম বিভাগে নেমে গেল গাজী টায়ার্স। প্রথমবার ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে এসে স্রেফ এক আসর টিকতে পারল তারা।

গাজী টায়ার্সের আগেই অবনমিত হয়েছে ১৩ ম্যাচে স্রেফ ২ জয় পাওয়া সিটি ক্লাব। এই দুই দলের জায়গায় প্রথম বিভাগ থেকে উন্নীত হয়ে আগামী মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ খেলবে অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ও গুলশান ক্রিকেট ক্লাব।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে গাজী টায়ার্সের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্ক স্পর্শ করেন। কিন্তু ইনিংস টেনে লম্বা করতে পারেননি কেউই।

সাত নম্বরে নামা অধিনায়ক গাজী তাহজিবুল ইসলামের ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ বলে ৫২ রানের ইনিংসে কোনোমতে দুইশ পেরোয় দল।

রূপগঞ্জের কোনো বোলার একাধিক উইকেট নিতে পারেননি। তবে আঁটসাঁট বোলিংয়ে সম্মিলিত অবদান রাখেন সবাই।

রান তাড়ায় মাহফিজুল ও জসিমের ব্যাটে ১৫১ বলে ১৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় রূপগঞ্জ টাইগার্স। ২৬তম ওভারে শামিম মিয়ার বলে ফেরেন দুজনই। ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৭৭ বলে ৭৪ রান করেন মাহফিজুল। জসিমের ব্যাট থেকে আসে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৭৫ বলে ৭৭ রান।

চতুর্থ উইকেটে ৩১ বলে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় নিশ্চিত করেন সালমান হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।

৭৪ রানের ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মাহফিজুল। ১১ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে ৪১০ রান করে এবারের লিগ শেষ করলেন ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলা এই ওপেনার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: ৫০ ওভারে ২০৬/৭ (মহব্বত ২৭, ইফতেখার হোসেন ২৭, আশিকুর ১৭, হাফিজুর ২১, শামিম ৩২, আশরাফুল ২, তাহজিবুল ৫২*, ইফতেখার সাজ্জাদ ১৪, আরিদুল ১*; মহিউদ্দিন ১০-০-৩৫-১, আরিফুল ৬-১-১৯-১, মামুন ৮-০-৩৫-০, হাশিম ১০-২-৩৩-১, সোহাগ ১০-০-৪২-১, গালিব ৫-০-২৭-১, আইচ ১-০-১১-০)

রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৩৪.১ ওভারে ২০৭/৩ (মাহফিজুল ৭৪, জসিম ৭৭, শামসুর ৭, সালমান ২৩*, মামুন ২০*; ইকবাল ৩-০-২৩-০, লিওন ৫-০-১৬-০, আরিদুল ৮-০-৩৮-১, ইফতেখার হোসেন ৪-০-৩৬-০, ইফতেখার সাজ্জাদ ৪-০-২৫-০, হাফিজুর ৩-০-১৭-০, শামিম ৫-০-৪৪-২, আশরাফুল ২.১-০-৮-০)।

ফল: রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে জয়ী।




লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে দল কিনল বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান

দেড় মাস পর শুরু হবে শ্রীলঙ্কার ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আসর লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল)। আগামী ১ জুলাই থেকে মাঠে গড়াবে এবারের আসর। তবে, এলপিএলের আগামী আসরে থাকছে না গতবারের রানার্স আপ ডাম্বুলা অরা। নতুন নামে আসছে দলটি, যার মালিকানা থাকছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে।লঙ্কা গ্রুপের মালিকানায় থাকা ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকানা কিনে নিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ইম্পেরিয়াল স্পোর্টস গ্রুপ।…

লঙ্কা গ্রুপের মালিকানায় থাকা ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকানা কিনে নিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ইম্পেরিয়াল স্পোর্টস গ্রুপ। আসন্ন আসরে নতুন নাম ডাম্বুলা থান্ডার হিসেবে খেলবে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ইতোমধ্যে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে ইম্পেরিয়াল স্পোর্টস গ্রুপের দুই কর্ণধার তামিম রহমান ও গোলাম রাকিব দলটির মালিকানা বুঝে নিয়েছেন।

২০২০ সালে ডাম্বুলা ভাইকিংস নামে যাত্রা শুরু করেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। পরের বছর নাম পাল্টে জায়ান্টস ফ্র্যাঞ্চাইজি নামে খেলে। সর্বশেষ দুই আসরে মালিকানা বদলে ডাম্বুলা অরা নামে খেলেছে তারা। নিজেদের প্রথম মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকলেও গেল মৌসুমে ফাইনালে উঠেছিল দলটি। তবে, ফাইনালে ক্যান্ডির কাছে হেরে যায়।

Advertisement

এলপিএলে দল নিতে পেরে রোমাঞ্চিত ইম্পেরিয়াল স্পোর্টস গ্রুপের দুই কর্ণধার। নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ইম্পেরিয়ালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তামিম বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমরা লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে যুক্ত হচ্ছি। এমন একটা দল গড়ে তুলতে চাই যারা স্পিরিট ও দক্ষতা দিয়ে ক্রীড়া অনুরাগীদের উদাহরণ হবে এবং বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটপ্রেমিদের অনুপ্রাণিত করবে।’

আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা গোলাম রাকিব বলেন, ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করার বাইরেও ডাম্বুলা থান্ডারকে প্রসারিত করাই আমাদের লক্ষ্য। শ্রীলঙ্কার কমিউনিটিতে প্রভাব রাখা, ইতিবাচক পদচিহ্ন রাখা এবং স্থানীয় প্রতিভাবানদের পরিচর্যা করতে কাজ করব। আমরা এখানে জিততে এসেছি।’

Advertisement