বেগমগঞ্জের দুর্গাপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস এর নির্মাণ কাজ চলছে

মেঃ বদিউজ্জামান ( তুহিন), নোয়াখালী প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বেগমগঞ্জ উপজেলার ১১ নং দুর্গাপুর ইউনিয়নে “বীর নিবাস” নির্মান কাজ চলমান।

এ কাজের তত্ত্বাবধান করছেন সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনাজ বেগমের সুযোগ্য সন্তান ইমরান নূর রফি ।




কমলনগরে নদী ভাঙ্গন থেকে বাঁচতে এলাকাবাসীর দোয়া মোনাজাত 

তারেক আজিজ:

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মহান আল্লাহর কাছে ভাঙন থেকে মুক্তি চেয়ে মোনাজাতে দোয়া করেন সবাই। পূর্ব-পুরুষের ভিটে ও কবর রক্ষায় আল্লাহর রহমত কামনা করেন।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের লুধুয়া এলাকায় মোনাজাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। কমলনগর রামগতি বাঁচাও মঞ্চের উদোগে এ আয়োজন করা হয়।

এ সময় দোয়া পরিচালনা করেন কমলনগর উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি ক্বারী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন।

ইমরান হোসেন শাকিলের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন কমলনগর উপজেলা পরিষদের কমলনগর রামগতি বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

সূত্র জানিয়েছে, বালু সংকট ও বরাদ্দের টাকা ছাড় না পাওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ বন্ধ করে রেখেছে। টাকা ছাড় পেলে ও বালু সংকট কাটলেই তারা কাজ শুরু করবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৩১ কিলোমিটার নদীতীর রক্ষা বাঁধের জন্য প্রায় ৩১শ’ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেন। সেই লক্ষ্যে কমলনগরের সাহেবেরহাট ইউনিয়নের মেঘনা এলাকায় গত ৯ জানুয়ারি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক কাজের উদ্বোধন করেন।

আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান পল্লী নিউজকে বলেন, জোয়ারে আমার মায়ের কবরে পানি উঠে যায়। এটি দেখলে আমার কলিজা ফেটে যায়। আমার মায়ের পাশে আমাকে কবর দেওয়ার জন্য বলে রেখেছি। কিন্তু নদীতীর রক্ষা বাঁধ দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে ভাঙনে সব বিলীন হয়ে যাবে। এজন্য নদীভাঙন থেকে রক্ষা পেতে আমরা মহান আল্লাহর কাছে হাত তুলেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নদীভাঙন রোধে মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। দ্রুত সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ভিডিও:




কমলনগরে সিত্রাং এ ক্ষতিগ্রস্থদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

 

কমলনগর,লক্ষ্মীপুর:

ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাং”এ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত খাদ্য সামগ্রী ( জি আর) চাল বিতরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ( ২৭ অক্টোবর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার সাহেবর হাট ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে এসকল উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন, জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মোহাম্মদ নুর এ আলম ৷

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান, সাহেবের হাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, উপজেলা মৎস্য কর্মকতা আবদুল কুদ্দুছ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রতিনিধি আবুল বাসার নয়ন, কমলনগর প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক এ আই তারেক সহ অনেকে।

উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাং”এর প্রভাবে বেঁড়িবাঁধ না থাকায় মেঘনা নদীর পানিতে উপজেলার চর কালকিনি, সাহেবের হাট, চর ফলকন, পাটারির হাট, চর মাটিন ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ফলে অসহায় এ পরিবার গুলোকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল, ডাল, তেল, লবণ সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।




লক্ষ্মীপুরে মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রি, ২ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

লক্ষ্মীপুরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির দায়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজারের শ্রমিক হোটেল ও শাহিন হোটেলকে জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম সিরাজুল সালেহীন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিক হোটেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও অতিরিক্ত অ্যালকোহলযুক্ত ড্রিংস সামগ্রী বিক্রি করা হয়। অভিযান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় প্রতিষ্ঠান মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে দুগ্ধজাতীয় খাবারে মেয়াদ উল্লেখ না থাকায় শাহিন হোটেলের মালিককেও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম সিরাজুল সালেহীন জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও পরিবেশন করা যাবে না। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর খাবার তৈরির স্থান অস্বাস্থ্যকর। এজন্য তাদের জরিমানা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিতে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।




রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্ময় সভা স্থগিত

আবু তাহের, রামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২৭অক্টোবর) দুপুরে চলতি মাসের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা স্থগিত করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী অনুস্থিত থাকার কারনে ইউপি চেয়ারম্যানদের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা এ সভা স্থগিত করেন। এ ছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যানরা উন্নয়ন কাজে তাঁদের সাথে সমন্বয় না করার অভিযোগ ও এডিপির ৭৪লাখ টাকা ফেরত যাওয়ার কারন তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী তুলে গত আগষ্ট,সেপ্টেম্বর মাসের সভার রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি।

জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত চিঠি অনুযায়ী আজ বুধবার ১১টায় উপজেলা সম্মেলন কক্ষে মাসিক আইন শৃংখলা সভা শেষে মাসিক সমন্বয় সভা শুরুতে ইউপি চেয়ারম্যান ফোরামের পক্ষ থেকে দরবেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সভার সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুস্থিতির বিষয়টি জানতে চান এবং আজকের সভা স্থগিতের দাবী জানান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সভা স্থগিত করে দেন।

দরবেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান বিগত চার বছর যাবত এডিপি, জাইকা ও বিশেষ উন্নয়ন বরাদ্ধের অর্থ ব্যয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে কোন সমন্বয় করেননি। গত ২০২১-২২ অর্থ বছরের এডিপি ৭৪ লাখ টাকা উপজেলা চেয়ারম্যান বেআইনি ভাবে নিজের একাউন্ডে রাখে। পরে ওই উন্নয়নের ওই টাকা সরকারী খাতে ফেরত যায়। এতে রামগঞ্জবাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়। এজন্য আজকের সভায় সকল ইউপি চেয়ারম্যানরা এসব বিষয় উপস্থাপনের কথা জানতে পেরে তিনি কাউকে না জানিয়ে সভায় উপস্থিত হয়নি। এ জন্য সভা স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও আমরা ইউপি চেয়ারম্যানরা পূর্বের আগস্ট ও সেপ্টেবর মাসের সভার রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা জানান, মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভার সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অনুস্থিত থাকার কারনে উপস্থিত সদস্যদের সিন্ধান্ত অনুযায়ী সভা স্থগিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান অনপুস্থিত থাকার বিষয় আমাকে কিছ’ বলেননি,তবে শুনছি ওনি অসুস্থ।
উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেন চেীধুরীর মোবাইলে কল দিলে ওনার স্ত্রী রিসিভ করে জানান, চেয়ারম্যান অসুস্থ অবস্থায় ঢাকায় এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধিন আছেন।




ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এ লক্ষ্মীপুরের মানুষের পাশে পুলিশ সুপার

জুনাইদ আল হাবিব-

আন্দামান সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে উপকূলীয় জনপদ লক্ষ্মীপুর যখন বিপর্যস্ত, ঠিক তখনই জেলার ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ালেন জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) পুলিশ সুপার উপকূলীয় অঞ্চলের ১৩ টি আশ্রয় কেন্দ্রের ৫হাজার ৩৫২ জন মানুষের খোঁজ-খবর নেন।

জেলার পুলিশ সুপার মজুচৌধুরী হাট লঞ্চঘাট ও অন্যান্য থানাধীন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষ ও নদী পাড়ের মানুষদের খোঁজখবর নেন। এ সময় তিনি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এছাড়াও সাধারণ জনগণের যে কোন প্রয়োজনে জেলা পুলিশের সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে আশ্বাস প্রদান করেন পুলিশ সুপার।

নিজের ফেসবুক ওয়ালে এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার লিখেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং… উপকূলীয় এলাকায় সারাদিন ব্যাপী মানুষের সর্তকীকরণে, সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষের পাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত দিতে আমরা লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সদা সর্বদা তৎপর। বাতাসের প্রচন্ড বেগ,নদীর উত্তাল ঢেউ, পানির দ্রুত বৃদ্ধি,ঠান্ডা শীতল প্রভাব,বৃষ্টিপাত যেন অঝোর ধারায় প্রবাহিত আর মানুষের মাঝে আতংক।

উপকূলীয় চর এলাকার মানুষের জীবন সংগ্রাম আর বেঁচে থাকার সংগ্রামই যেন স্বাভাবিক এক স্রোতধারায় বহমান।দূর্যোগের দুর্ভোগ ঘনঘটায় জীবন যেন যাপিত তব তাহাদেরই তরে।




লক্ষ্মীপুরে বন্ধুকে হত্যা: তিন বন্ধুর যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুরে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করার পর গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে মেহেরাজ হোসেন নামে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় তিন বন্ধুর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

একইসঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এই রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের জেরে মেহেরাজকে হত্যা করা হয়েছে। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন – আবদুল্লাহ আল মামুন, সজিব আহমদ ও তানভীর হোসেন বিজয়। মামুন নোয়াখালীর সুধারাম থানার উত্তর হুগলি গ্রামের মো. ইউছুফের ছেলে, সজিব একই থানাধীন মাতাহাপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে ও বিজয় রাওয়াল দিয়া গ্রামের সহিদুল ইসলামের ছেলে।




বিদ্যুৎহীন লক্ষ্মীপুর, স্বাভাবিক হতে লাগতে পারে আরও দুই দিন

এভাবে টানা বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তিতে আছেন জেলার বাসিন্দারা। কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন ‘সোমবার সকালে বিদ্যুৎ চলে গেছে, এখনো আসেনি। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎহীন থাকায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি।’

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়াল ও রায়পুর উপজেলার চর বংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, গাছ উপড়ে পড়ে তাঁদের এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। খুঁটি ভেঙে গেছে অনেক জায়গায়। দুদিন বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন লোকজন। মুঠোফোনের চার্জও শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যুতের লাইনে অসংখ্য গাছ পড়েছে। খুঁটি ভেঙে গেছে। তারও ছিঁড়ে গেছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি খুব খারাপ অবস্থা।

তিনি আরও বলেন, জেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫ লাখ ৩ হাজার গ্রাহক আছেন। এখন পর্যন্ত পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ১২০টি টিম কাজ করছে। পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে সন্ধ্যায় মধ্যে শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা করা হবে।




নোয়াখালীতে কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল, ৪০১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নোয়াখালী জেলা প্রশাসন। সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৪০১ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়।

আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে নিজ সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।

জেলা প্রশাসক জানান, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খুলেছি। সেইসঙ্গে উপকূলে ৮ হাজার ৩৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। এছাড়া মেডিকেল টিম, সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা দোয়া করি যেন আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। কোনো ধরনের অসুবিধা হওয়া বা হওয়ার আগে থেকেই আমরা প্রস্তুত থাকব।

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীনসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, গণমাধ্যমকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠেনর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সিত্রাংয়ের প্রভাবে নোয়াখালীতে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নোয়াখালী ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় এসেছে। আজ সন্ধ্যার দিকে সিত্রাং শক্তি সঞ্চয় করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসতে পারে। আগামীকাল মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উপকূলে আঘাত হানতে পারে।




লক্ষ্মীপুরে ১শ’ ৮৫ আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে সৃষ্ট হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সাইক্লোন শেল্টারসহ ১শ’ ৮৫টি আশ্রয়ন কেন্দ্র ও ৬৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

গতকাল রোববার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে জরুরী সভা ডেকে জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন আকন্দ তথ্যগুলো নিশ্চিত করেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ নূর-এ আলমের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন আহম্মদ কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) পলাশ কান্তি নাথ, পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক আশফাকুর রহমান মামুনসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।

দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এ সভায় জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে মেঘনা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। এর থেকে মানুষ ও গবাদি পশু রক্ষায় সকল ধরণের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

দুর্গম এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য নদী এলাকায় মাইকিং করা হবে। যারা নদীতে আছেন তাদেরকে দ্রুত লোকালয়ে আনার জন্য নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে বলা হয়। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সাইক্লোন শেল্টারসহ ১৮৫টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগে ও পরে ৩ হাজার ২৮০ জন মানুষকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। ৬৬টি মেডিকেল টিম কাজ প্রস্তুত রয়েছে। জেলার সরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে।

এছাড়া ২৬০ মেট্টিক টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ৬০০ কার্টুন বিস্কুট সংরক্ষণ করা হয়েছে। ৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। উপজেলার প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত কর্মস্থল এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সাহায্য ডেস্ক চালু করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মোবাইল নাম্বারগুলো জানিয়ে দেওয়া হবে।

নদীর ঘাটে নৌকা প্রস্তুত রাখতে হবে। যেন আটকা পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কাজ করতে সুবিধা হয়। ঘূর্ণিঝড়ে নদী তীরে ভাঙন বেড়ে যায়। ভাঙন থেকে উপকূল রক্ষায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।