বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু কারামুক্ত

জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৬টায় তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।

২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ আটটি মামলা হয় বিএনপি এ নেতার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ মামলা ও ২০ ফেব্রুয়ারি তিন মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

৫ নভেম্বর রাত ১২টার পরপর গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে একটি দল বড় বোনের ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে শামসুজ্জামানকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশের ওপর হামলা ও পুলিশ সদস্য হত্যার অভিযোগের মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।




গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিপক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: নাছিম

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের দেশকে সাম্প্রদায়িক শক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। যারা গণতান্ত্রিক চর্চা ও ধারাবাহিকতাকে নষ্ট করতে চায় তাদের বিপক্ষে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই অশুভ শক্তির হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে।’

বুধবার (৬ মার্চ) সকালে রাজধানীর মতিঝিল ‘সাউথ পয়েন্ট নগর ব্যায়ামাগার’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, জাগ্রত বাংলাদেশ এবং বীরের জাতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। যে সোনার বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, সে সোনার বাংলাদেশ হবে ধনী-গরিবের বৈষম্যহীন একটি দেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি আধুনিক আত্মমর্যাদাশীল এবং সুন্দর শান্তিময় বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করব, এই হলো আমাদের লক্ষ্য।’

নাছিম বলেন, ‘আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হলে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। মাদক নির্মূল করা গেলে তরুণ প্রজন্ম সুস্থভাবে বেড়ে উঠবে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজের হাত থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অন্যতম লক্ষ্য হলো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া।’

তিনি বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে। এর পাশাপাশি আমাদেরকেও মাদকের বিরুদ্ধে তৈরি থাকতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সফল হতে এই ব্যায়ামাগারগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ব্যায়াম করলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তাদেরকে মাদক কখনোই আসক্ত করতে পারে না। মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় অঙ্গীকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক সময় সুঠাম দেহের অধিকারী বডি বিল্ডারদের প্রাণকেন্দ্র ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পুরান ঢাকা। ঢাকাকে সেই পুরোনো ধারায় সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা আগামী দিনে এমন আরও ব্যায়ামাগার নির্মাণ করে ঢাকা শহরকে মাদকমুক্ত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফিসহ স্থানীয় কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।




ডেমোক্রেসিটুডে ওয়েবসাইটের মালিকের সত্যিকারের পরিচয় উন্মোচিত হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ শান্ত থাকার জন্য বলছে

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উন্মুক্ত আহ্বানের জবাবে এবং জনশৃঙ্খলার স্বার্থে, পুলিশ গতকাল নিশ্চিত করেছে যে তারা www.democracytoday.net এর প্রকৃত মালিককে শনাক্ত করেছে।

কর্তৃপক্ষের মতে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্যদের একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মকর্তারা সাইটের সাথে যুক্ত একটি ঠিকানা পরিদর্শন করেন। অনুসন্ধানের ফলে ওয়েবসাইটের মালিকের বর্তমান ঠিকানা প্রকাশ করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে সন্দেহভাজন ব্যক্তি সিলেট এলাকার মোহাম্মদ জুনেদ আহমেদ নামে একজন বাংলাদেশি নাগরিক। সংগৃহীত প্রমাণ এবং অনুসন্ধানের ভিত্তিতে, তারা নিশ্চিত করেছে যে সন্দেহভাজন বর্তমানে বিদেশে রয়েছে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গুরুতর অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে তারা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছে। এই অপরাধগুলি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতারযোগ্য বলে গণ্য করা হয়।

কর্তৃপক্ষ বিক্ষুব্ধ জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং আশ্বাস দিয়েছে যে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে খুব শীঘ্রই আদালতে হাজির করা হবে।




কোন পথে সিপিবি

সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জন্ম। দলটি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকেন্দ্রিক দ্বিদলীয় বৃত্তের বাইরে বিকল্প শক্তি গড়ার চেষ্টা করে আসছে। ২০২২ সালের দ্বাদশ কংগ্রেসেও বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে নেতারা তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্ব ঘোষণা দেন।

এরই মধ্যে কমিটি দুই বছর পার করেছে। তাদের নেতৃত্বে লক্ষ্য পূরণে কতটুকু এগিয়েছে সিপিবি, কতটা জনসমর্থন পেয়েছে তাদের আদর্শ ও লড়াই-সংগ্রাম– এমন প্রশ্নে দলটির নেতাকর্মীই বলছেন, বাস্তবতা অস্বীকারের উপায় নেই। সাম্যবাদ ও বিকল্প গড়ার লড়াই-সংগ্রামের সফলতা সুদূর পরাহত। উল্টো অভ্যন্তরীণ মতভেদ বেড়েছে। বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ‘দল কুক্ষিগত’ করার। এরই জেরে সম্প্রতি প্রবীণ নেতা ও সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খানকে উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় আজ বুধবার সিপিবি ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবনে দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিকেল ৪টায় সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল করবেন নেতাকর্মীরা। দেশজুড়ে একই কর্মসূচি পালন করা হবে।

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ কলকাতা সম্মেলনে গঠিত হয় পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি। একই সম্মেলনে খোকা রায়কে সম্পাদক করে কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ববাংলা আঞ্চলিক কমিটি বা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটি গঠন করা হয়। স্বাধীনতার পর এটিই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নাম নেয়।
অবশ্য এ দেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনে যাত্রা সিপিবি প্রতিষ্ঠারও প্রায় তিন দশক আগে, ১৯২০ সালে। তবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী দলটির কর্মীদের ওপর হত্যা-নির্যাতন ও হুলিয়ার খড়্গ চালায়। হাজারো নেতাকর্মী দেশত্যাগে বাধ্য হন। ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহীর খাপড়া জেলে কমিউনিস্ট রাজবন্দিদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়ে সাত কমরেডকে শহীদ করে, যা এ ভূখণ্ডের প্রথম জেলহত্যা। প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্টরা গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তারা তেভাগা, নানকার, টংকসহ নানা কৃষক-শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংঘটিত করেন। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষা, যুদ্ধাপরাধী ও যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিসহ সব আন্দোলনেই সিপিবি অনন্য ভূমিকা রেখেছে।

কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা সিপিবির সাবেক সভাপতি কমরেড মণি সিংহ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। নিয়মিত বাহিনীর বাইরেও ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠন করে সিপিবি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সিপিবি রাজপথে প্রতিবাদ করে। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। সিপিবিকেও বেআইনি ঘোষণা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় অর্ধেক সময় দলটি বেআইনি ছিল। এমনকি স্বাধীন দেশেও সিপিবিকে একাধিকবার বেআইনি হতে হয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে সিপিবির অসংখ্য নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। সর্বশেষ ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা হামলা হলে পাঁচ নেতাকর্মী শহীদ হন।
দীর্ঘ যাত্রাপথে সিপিবি কয়েক দফা ভাঙনের কবলে পড়েছে। দলটির অসংখ্য নেতা বিভিন্ন দলে যোগ দিয়েছেন। স্বাধীনতার আগে ও পরে ১৯৯১ সালের নির্বাচন পর্যন্ত সিপিবি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে ছিল। পরে বিভিন্ন সময়ে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, ১১ দলসহ নানা গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল জোটে শামিল হয়। বর্তমানে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প বলয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে সিপিবি বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক হিসেবে কাজ করছে।

এদিকে স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সব নির্বাচনে অংশ নিলেও সিপিবিসহ অন্যান্য বামপন্থি দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন বর্জন করে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।




বাইকে মহড়া দিয়ে চাঁদা তোলে ছাত্রলীগ নেতারা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানদারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলে ছাত্রলীগ নেতারা। ভর্তি পরীক্ষার সময় বিপুল জনসমাগমের সুবাদে দোকান বেড়ে যায়। এতে রমরমা চাঁদাবাজিও হয় ক্ষমতাসীন দলের এই ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীর। দোকানভেদে দৈনিক ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে তারা। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তাঁকে নানা হুমকি-ধমকিসহ ব্যবসা করতে বাধা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবারও পাওয়া যায় অনুরূপ অভিযোগ। আট থেকে ১০ জন করে নেতাকর্মী মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে দিতে সব দোকানির কাছে টাকা তোলে। তবে নেতাদের দাবি, তারা ওই সব হকারের কাছে গিয়েছিলেন তাদের কাউকে অর্থ দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করতে।

হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষা ছিল। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ একাডেমিক ভবন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবন, পুরোনো শেখ রাসেল স্কুলমাঠ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন এলাকায় বিরিয়ানি, ডাব, শরবত, চটপটির দোকানসহ বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছিল। এসব দোকান থেকে ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়েছে। এদিন বিকেলে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেউ কেউ বাইকে করে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দিলেও এর পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানদারদের থেকে টাকা তুলেছে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন– বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাদিক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবণ, নবাব আবদুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাশফিক আল তৌহিদ এবং মাদার বখ্শ হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তামিম খান। তাদের মধ্যে লাবণ ও তৌহিদ রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী। অন্যদিকে সাদিক ও তামিম শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ডাব বিক্রেতা অভিযোগ করেন, চার-পাঁচজন লোক এসে তাঁর কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তখন ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, এখানে ব্যবসা করতে হলে টাকা দিতে হবে। পরে তিনি বাধ্য হয়ে এক হাজার টাকা দেন।

এক ফুচকা বিক্রেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে আমার কাছে টাকা দাবি করেন। তাদের সবাই আমার পরিচিত। তাদের মধ্যে ছিলেন লাবণ ভাই, সাদিক ভাই, তৌহিদ ও তামিম। আমার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছে। গতকাল এসেছে আজকেও মনে হয় আসবে। ব্যবসা করতে হলে তাদের টাকা দিতে হবে। খুব চাপ।’

এক শরবত বিক্রেতা জানান, পাঁচ-ছয়টা বাইক নিয়ে ৭-৮ জন লোক এসে তার কাছে চাঁদা দাবি করে। আশপাশের আরও অনেক দোকান থেকেও টাকা নিয়েছে তারা। যাদের কাছে টাকা নিতে পারেনি, তাদের থেকে খাবার নিয়ে গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা সাদিক বলেন, ‘এই রকম কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। বরং আমি আর লাবণ দোকানে দোকানে গিয়ে বলে এসেছি, আমার নামে কেউ চাঁদাবাজি করতে এলে যেন আমাকে কল দেন।’

আরেক নেতা তামিম বলেন, ‘গতকাল সারাদিন আমি জয় বাংলা বাইক সার্ভিস (ভর্তিচ্ছুদের আনা-নেওয়ার কাজ) নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আমার নাম করে অন্য কেউ এ কাজ করতে পারে। এ জন্য আমি দোকানিদের সতর্ক করে এসেছিলাম। কেউ আমার নাম করে টাকা চাইতে এলে তাকে বেঁধে রেখে আমাকে কল দেবেন।’

লাবণ বলেন, ‘আমি কয়েক দিন ধরে সারাদিন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছিলাম। এর আগেও শুনেছি, আমার নাম করে কেউ কেউ টাকা আদায় করেছে। তাই কয়েকজন দোকানিকে বলেছি, যারা আমার নাম করে চাঁদা নিতে আসে, তাদের আটকে রেখে আমাকে কল দিতে।’

আরেক ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমি গতকাল সারাদিন সভাপতির সঙ্গে ছিলাম। জীবনেও আমি চাঁদাবাজি করি নাই। কিয়ামতের দিন হলেও প্রমাণ হবে আমি এক পয়সাও কোথাও থেকে চাঁদা নিইনি।’

রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘সাদিক, লাবণ ও তৌহিদের মধ্যে কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন। তবে তামিম গেছে কিনা আমি জানি না। যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কালকের মধ্যে তাদের বহিষ্কার করা হবে।’

তবে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গালিবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।




ঠিকানাহীন দল আর জোট জোড়াতালি

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ভোটের মাঠে পরস্পরের প্রবল প্রতিপক্ষ। প্রতিবারই সংসদের ভোট সামনে রেখে এই দুই রাজনৈতিক দল নতুনভাবে সাজায় জোটের মঞ্চ। এবারও জোটে একের পর এক দল ভিড়িয়ে শক্তির জানান দিতে চাইছে দু’দলই। তবে তারা জোটের পাল্লা ভারী করতে এমন নামসর্বস্ব দল বা সংগঠনকে টানছে, যা নিয়ে চলছে হাস্যরস, দেখা দিয়েছে নানামুখী প্রশ্ন। এমনও দল আছে যাদের শুধু এক নেতাই আছেন, আর কেউ নেই। দলীয় কার্যালয়, সাংগঠনিক কমিটি কিছুই নেই। ‘খুচরা’ এসব দল নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী আর বিএনপি আন্দোলনমুখী।

গুনে গুনে সাড়ে চার ডজন, সংখ্যাটা ৫৪। সবাই সরকারবিরোধী। এর মধ্যে আছে ‘এক নেতার এক দল’! সংগঠনের শীর্ষ নেতা হিসেবে আছেন পল্টন মোড়ের মোজা বিক্রেতা, আছেন আদম কারবারিও। কর্মসূচিতে ব্যানার ধরার মতো কর্মী নেই এমন দলও আছে। এই ৫৪ দলে যেমন আছে রাজপথের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি; তেমনি রয়েছে ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মতো সংগঠন। তাদের নেই দলীয় কার্যালয়, জোটেনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন। তবু আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে এসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।

বিএনপির নেতারা বলছেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংকট কাটাতে ডান, বামসহ সব দল, সংগঠন, সুশীল, বুদ্ধিজীবী ছাড়াও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এখানে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী নয়, সবাইকে নিয়েই এগোতে চাইছে দলটি। তাই জোট, দল, সংগঠন কিংবা ব্যক্তির সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে বিএনপি তাদের চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে পরিমাপ করছে না; গুরুত্ব দিচ্ছে ঐক্যকে।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এখন দেশে রাজনীতিতে অনেক রকম খেলা হয় এবং হচ্ছে। আসলে এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে শুধু ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করছে। নীতি-আদর্শ থাকলে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা এমন হতো না। সুবিধা আদায়ের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচির বাইরে এ রকম আরও অনেক দলের সৃষ্টি হচ্ছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের ভোটাধিকার থেকে শুরু করে সব নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যার যে অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। সেখানে কে কত বড়, সেটা মুখ্য বিষয় নয়। মূলত এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে যারাই এগিয়ে আসবে, তাদেরই সাধুবাদ জানাব। সেটা সংগঠন হতে পারে, পেশাজীবী কিংবা ব্যক্তিও হতে পারেন।

জানা গেছে, বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে সাতদলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, চার দলের বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য, ১৫ সংগঠনের সমমনা গণতান্ত্রিক জোট ছাড়াও এলডিপি, গণফোরাম রয়েছে। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকলেও একই দাবিতে ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আন্দোলন করছে জামায়াত। এসব জোট ও দলের মধ্যে মাত্র সাতটি ইসি নিবন্ধিত। ১৩টি বিভিন্ন দলের খণ্ডিত অংশ। আবার সাম্যবাদী দল ও ইসলামী ঐক্যজোট রয়েছে দুই জোটেই। সমমনা গণতান্ত্রিক জোটের ১৫ সংগঠন কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তারা বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় প্রেস ক্লাবকেন্দ্রিক আলোচনা সভা, মানববন্ধনের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

৫৪ ঘোড়ার ডিম!: সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৫৪ দল গণমিছিল ও গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও বিএনপিসহ কয়েকটি দল বাদে এসব জোটের নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। ১২ দলীয় দুই জোটের সর্বশেষ গণঅবস্থানে ১০০ নেতাকর্মীও ছিল না। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যেমন ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছেন, তেমনি বিএনপির নেতাকর্মীরাও এসব জোটের অস্তিত্ব নিয়ে অসন্তোষ দেখিয়েছেন।

জোটের এই অবস্থা নিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও উষ্ফ্মা প্রকাশ করেন নেতারা। বিশেষ করে ১৫ সংগঠনের জোট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। কার পরামর্শে, কার উদ্যোগে এই কাজ করা হয়েছে- তা নিয়েও নেতারা কথা বলেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি উপহাস করে বলেছেন, ৫৪ রাজনৈতিক দল আজকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের অবস্থানে কী হবে? ঘোড়ার ডিম পাড়বে। ৫৪টা ঘোড়ার ডিম পাড়বে ৫৪ বিরোধী দল। এর মধ্যে নয়াপল্টনে মোটামুটি অবস্থান ছিল, অন্যরা ভুয়া।

জোটে যারা, কেমন কারা: গণতন্ত্র মঞ্চের সাত দলের মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ইসিতে নিবন্ধিত। এর বাইরে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন রয়েছে নিবন্ধনের বাইরে।

জোটের নেতা আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, কমরেড সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, ড. রেজা কিবরিয়া আর ভিপি নুরুল হক নুরের মতো হেভিওয়েট নেতা থাকলেও রাজপথে তাঁদের কর্মী নেই। শেষ গণমিছিল আর গণঅবস্থানের মতো বড় দুটি কর্মসূচিতে নেতাকর্মীর অবস্থানের প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি এ জোট। এ নিয়ে এরই মধ্যে জোটের ভেতর সন্দেহ-অবিশ্বাস আর দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।

জোটের শরিক পাঁচ রাজনৈতিক দল বেশ কয়েক বছর রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও অন্য দুটি সংগঠন হিসেবেই কাজ করেছে বিগত দিনে। এর মধ্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের কমিটি ভেঙে সম্প্রতি রাজনৈতিক আদল দেওয়া হয়েছে। ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদনও করা হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনও একই অবস্থা। তবে এই দলটির ব্যাপ্তি মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতাকর্মীতেই সীমাবদ্ধ।

১২ দলীয় জোটের মধ্যে কল্যাণ পার্টি ও মুসলিম লীগ ইসি নিবন্ধিত। তবে মুসলিম লীগ দ্বিখণ্ডিত হয়ে উভয় জোটের মধ্যেই আছে। কোন পক্ষের হাতে নিবন্ধন রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। দলটির সভাপতি এইচ এম কামরুজ্জামান খান মারা যাওয়ার পর এর জৌলুস আরও কমেছে। নেতাকর্মী নেই বললেই চলে। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টি থেকে বেরিয়ে আসা নেতাদের নিয়ে জাপা (কাজী জাফর) অংশ রাজনীতিতে সক্রিয়। তবে হেভিওয়েট নেতা থাকলেও কর্মী নেই অবস্থা দলটির। নেই দলীয় কার্যালয়ও। প্রয়াত নেতা শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর গড়া জাতীয় গণতান্ত্রিক দলও (জাগপা) দুই টুকরা। বাতিল হয় ইসির নিবন্ধনও। এর একটি অংশে তাঁর মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্য অংশে রয়েছেন খন্দকার লুৎফর রহমান। পুরোনো হলেও এখন কর্মী সংকটে ভুগছে দলটি।

এ ছাড়া জোটের এনডিপির আবু তাহের আদম ব্যবসায়ী। গিয়েছিলেন কারাগারেও। নেই নিজস্ব কার্যালয়। ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক পার্টি দলগুলো মূল দলের খণ্ডিত অংশ। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে এসব দল বেরিয়ে যাওয়ার পর খণ্ডিত এসব দলকে জোটে রেখে জোটের কলেবর ঠিক রাখা হয় তখন। নেতাসর্বস্ব এসব দলের কর্মী নেই। সাম্যবাদী দলেরও একই হাল। কেউ চেনেন না এর নেতা কিংবা কর্মীকে। তবে সাম্যবাদী দলটি এখন এই জোটে নেই। লেবার পার্টি, জাতীয় দল, বাংলাদেশ এলডিপি নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণে কাজ করছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে লেবার পার্টি তৎপর রয়েছে। সাবেক এমপি আবদুল করিম আব্বাসী ও সাবেক ছাত্রনেতা শাহাদাৎ হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের এলডিপি থেকে বেরিয়ে নতুন বিএলডিপি দল গঠন করেন তাঁরা।

১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের অন্তর্ভুক্ত কোনো শরিক দলেরই নিবন্ধন নেই। কার্যালয় নেই বেশিরভাগ দলের। আবার বেশিরভাগ দলই মূল দল থেকে ছিটকে আসা খণ্ডিত অংশ। প্রয়াত শেখ শওকত হোসেন নীলুর এনপিপি থেকে বেরিয়ে আসা একটি অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি নীলুর নেতৃত্বাধীন দলের মহাসচিব ছিলেন। এখন তিনি এই জোটের সমন্বয়ক। জাগপার সাবেক মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ এই জোটে রয়েছে। জাগপার বেশিরভাগ নেতাকর্মী এই অংশের সঙ্গে রয়েছে। তবে নেই নিজস্ব কার্যালয়। অনেক পুরোনো দল এবং নব্বই দশকের সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক লীগ এখন আর আলোচনায় নেই। ২০ দলীয় জোট থেকে ইসলামী ঐক্যজোট বেরিয়ে গেলে একটি খণ্ডিত অংশ জোটের সঙ্গে থেকে যায়। এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন দলটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আবদুর রকিব। দলটির এমনই হাল- সংগঠনের ব্যানার পর্যন্ত সভাপতিকে টানতে হয়। আবার তাঁর দলটি ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট- দুটোতেই রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাওলানা আবদুর রকিব বলেন, দুই জোটের উদ্দেশ্য একই হওয়ায় তিনি দুই জোটেই রয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া ইসি নিবন্ধিত বাংলাদেশ ন্যাপের ঢাকা মহানগরের একজন সম্পাদক পর্যায়ের নেতা এম এন শাওন সাদেকীর নেতৃত্বে গঠিত একটি অংশ জোটে থেকে যায়। তাঁর যেমন রাজনৈতিক পরিচিতি নেই, তেমন নেই কোনো কার্যালয়। একাদশ নির্বাচনের আগে বি. চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়া দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী এবং দলটির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদলের বিকল্পধারার নেই কোনো কার্যালয়। নেই গঠনতন্ত্র। নেতাকর্মীর উপস্থিতিও দেখা যায় না। নোটারি পাবলিক সংগঠনের নেতা আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ন্যাপ-ভাসানীর নেই কোনো দলীয় কার্যালয় ও নেতাকর্মী। জাতীয় পার্টির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন গণদল। ‘গণদল’ নাম রাখলেও সংগঠনটির নেই কোনো নেতা, নেই কর্মী।

১৫ সংগঠনের সমমনা গণতান্ত্রিক জোটে বেশিরভাগেরই অস্তিত্ব নেই। ওয়ান-ইলেভেনপরবর্তী বছরগুলোতে জাতীয় প্রেস ক্লাবভিত্তিক কোনো কর্মসূচিও ছিল না তাদের। এরপরও কী প্রক্রিয়ায় এসব সংগঠনকে নিয়ে জোট গঠন করা হয়েছে, তা নিয়ে খোদ বিএনপির মধ্যেই তুষের আগুন জ্বলছে। এমনকি প্রেস ক্লাবভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আদর্শের অন্য সংগঠনের নেতাকর্মীও এ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগ তুলেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে বিষয়টি উত্থাপন করেন তাঁরা।

জানা গেছে, এই জোটের সমন্বয়ক ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমান। আগে কিছু সংগঠনের ইস্যুভিত্তিক তৎপরতা থাকলেও বেশিরভাগেরই পরিচিতি নেই। এমনকি তাঁদের কোনো কর্মকাণ্ডও ছিল না। যাদের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, তাদের মধ্যে ‘ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ সংগঠনের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। তিনি এ সংগঠনের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। ‘মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি’ সংগঠনের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মাগুরা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। ‘বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ’ সংগঠনের সভাপতি ওমর ফারুক একসময় পল্টন মোড়ে মোজা বিক্রি করতেন। ‘জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি হিসেবে মো. শাহজাহানের নাম উল্লেখ থাকলেও মূলত এই সংগঠনের সভাপতি বাবু রেজা। এসব সংগঠনের বাইরে গণতন্ত্র রক্ষা মঞ্চ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল বিভিন্ন সময় কর্মসূচির আয়োজন করে বলে জানা গেছে।

এই জোটের সমন্বয়ক সাইদুর রহমান জানান, তাঁর জোটের সবক’টি সংগঠনই সক্রিয়। বিগত দিনে তাঁরা অনেক কর্মসূচি পালন করেছে। যেটা বলা হচ্ছে, সেটা অপপ্রচার।




ছেলের বিয়েতেও চাঁদা তুলেছেন গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী: আলাল

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তার ছেলের বিয়ে উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তুলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ছেলের বিয়ের মধ্যে ১৬৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তুলে সেই টাকা দিয়ে শিক্ষকদেরকে ফ্রিজ, টেলিভিশন গিফট দিতে বাধ্য করেছেন এবং সেই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতেও বাধ্য করেছেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘এরা (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা) এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে। আর তারা বলে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। তারা বলে একটা করে আরেকটা। আওয়ামী লীগের হাত দুইদিকে থাকে কাউকে ভয় দেখাতে হলে ঘাড়ে চেপে ধরে আর বিপদে পড়লে পা চেপে ধরে।’

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে বিএনপির চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ আটক সকল দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে আলাল বলেন, ‘শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জামায়াত ও জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে ১৩ মাস আগে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছিল। বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দিয়েছিল। হরতাল ডেকে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলেছিল। আজ সেই শেখ হাসিনাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে এবং উল্টাপাল্টা কথা বলছেন।’

তিনি বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) ভালো হবে না এটা বলছি না। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা ছিল এখন ৭০ টাকা কেজি। এটা ভালো লক্ষণ না। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল। তারা ঘরে ঘরে মামলা দিয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে। বিনামূল্যে সার দেওয়ার কথা বলেছিল, সারের দাম শতগুণ বেড়েছে। কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় না। বাসা বাড়ি থেকে যে ময়লা দেওয়া হয় সেখান থেকেও তারা ট্যাক্স নেয়। রাস্তাঘাটে ভিক্ষুকরা ভিক্ষা করে তাদের কাছ থেকেও চাঁদা নেয় ছাত্রলীগ।’

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুকসহ ঢাকা উত্তর দক্ষিণ মৎস্যজীবী দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




দাম না কমালে বিদ্যুৎ বিল দেব না: বুলু

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বিদ্যুতের যে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে জনগণকে নিয়ে বিদ্যুতের বিল বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিদ্যুৎ বিল দেব না।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক ফোরাম এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
রংপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্তের বিষয়টি উল্লেখ করে বুলু বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ভোট চোরদের আর দেখতে চায় না। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। এ কারণে মামলা দিয়ে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বুলু বলেন, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছেন। আজকে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়েছেন। বাঘের পিঠ থেকে নামতে হলে একটি রাস্তা আছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে যে বেয়াদবি করেছেন, অন্যায় করেছেন, তার পরিবারের সাথে যে অন্যায় করেছেন তার জন্য মাফ চেয়ে, বাংলাদেশ একটি রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করুন। পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেশে একটি অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করুন।

সংগঠনের আহ্বায়ক খলিলুর রহমান ভিপি ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।




আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য পদে এলেন যারা

আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের শূন্য পদে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর একটি, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ২৮টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদের ২৭টির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের নতুন চারজন সদস্যের নামও ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষিত কমিটির কার্যনির্বাহী সংসদে পুরনোরাই প্রাধান্য পেলেও নতুন হিসেবে চারজন যুক্ত হয়েছেন। একজনের পদোন্নতি হয়েছে। আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়া সাখাওয়াত হোসেন শফিককেও কেন্দ্রীয় কাযনির্বাহী সদস্য করা হয়েছে। অন্যদিকে, আগের কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়া হারুনুর রশীদকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছে।
রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে গণভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই কমিটি ঘোষণা করেন। রাতে দলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও তিনটি পদ শূন্য রেখে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়। এখনো শূন্য রয়েছে সভাপতিমণ্ডলীর একটি, শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের একটি পদ। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচটি পদ শূন্য রেখে উপদেষ্টা পরিষদ সদস্যদের নামও ঘোষণা করা হয়।

বিকেল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা যোগ দেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে টানা দশমবারের মতো নতুন সভাপতি শেখ হাসিনা এবং তৃতীয়বারের মতো ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। ওই দিন ৮১ সদস্যের কমিটির মধ্যে ৪৮টি পদে মনোনীত নেতাদের নাম ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকটি পদ শূন্য রেখে মনোননীত নেতাদের নাম ঘোষণা করেন দলীয় প্রধান। এর দু’দিন পর নবনির্বাচিত সভাপতিমণ্ডলীর প্রথম বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বরেণ্য ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। একইসঙ্গে দলীয় সভাপতিকে বাকি পদগুলোর মনোনীত নেতাদের নাম চূড়ান্ত করার দায়িত্বও দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা।

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে যারা এলেন: ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী সভাপতিমণ্ডলীর একটি শূন্য পদে জেবুন্নেছা হককে আনা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৯ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে এখনও একটি পদ ফাঁকা রয়েছে। উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে এসেছেন সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। তিনি আগের কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন।

২৭ সদস্যদের কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বিপুল ঘোষ, দীপংকর তালুকদার, অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, আখতার জাহান, ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, মেরিনা জামান, পারভীন জামান কল্পনা, অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমি, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম রব্বানি চিনু, মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং, গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, আজিজুর রহমান ডন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি ও তারিক সুজাত। এর মধ্যে নতুন হিসেবে যুক্ত হয়েছেন অ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, তারানা হালিম, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি ও তারিক সুজাত।

উপদেষ্টা পরিষদে নতুন যারা: উপদেষ্টা পরিষদে নতুন হিসেবে যুক্ত হয়েছেন হারুনুর রশীদ, অধ্যাপিকা সাদেকা হালিম অধ্যাপিকা ড. ফারজানা ইসলাম ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মাজেদা রফিকুন্নেছা। এর মধ্যে হারুনুর রশীদ গত কার্যনির্বাহী সংসদের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন।

বাহাউদ্দিন নাছিমকে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য: দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিমকে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে শেখ হাসিনা এই মনোনয়ন দেন বলে দলের পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

রংপুর মহানগর ও রংপুর জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা: দলের আরেকটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগের রংপুর মহানগর ও রংপুর জেলা শাখার বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন।

রংপুর মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটিতে ডা. দেলোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক ও আবুল কাশেমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। অন্যদিকে, রংপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটিতে এ. কে. এম ছায়াদত হোসেন বকুল আহ্বায়ক এবং অধ্যাপক মাজেদ আলী বাবলু যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন।




রামগঞ্জে তৃনমূল আওয়ামীলীগের নিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ

আবু তাহের, রামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের দক্ষিন চন্ডিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জামায়াতের অর্থদাতা হাউজিং ব্যবসায়ী আবুল কালামের শীতবস্ত্র,ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন,স্থানীয় চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল ইসলাম সুমন সহ রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ওই প্রোগরামে উপস্থিত থাকায় উপজেলাব্যাপী তৃনমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী মাঝে চরম ক্ষোভের সুষ্টি হয়েছে৷
চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আহবায়ক সাবেক চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ভূইয়া ও যুগ্ন আহবায়ক জিএস নজরুল ইসলাম জানান, আমরা জামায়েত নেতার অর্থায়নে অনুষ্ঠান হচ্ছে জানতে পেরে উক্ত অনুষ্ঠান বয়কট করেছি। জামায়াতের এই অর্থদাতা আবুল কালামের সভাপতিত্বে ২০১৯ সালে এলাকায় জামায়াতের ওয়াজিন মুফতী কাজী ইব্রাহীম, মাওলানা নাসির উদ্দিন হেলালীকে অতিথি করে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করলে দলীয় নেতাকর্মীদের বাধার মুখে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন উক্ত ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়৷ তারপরও জামায়াতের এমন চিহিৃত ব্যক্তির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা আওযামীলীগ সাধারন সম্পাদক কিভাবে আসছেন তা আমরা জানি না৷
২৯(ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত শীতবস্ত্র,ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র বেলাল আহমেদ, লামচর ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজুল্লাহ জিসান, চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল ইসলাম সুমন প্রমূখ৷ এ ব্যাপারে হাউজিং ব্যবসায়ী আবুল কালামের সাথে যোগাযোগেন চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি৷
চন্ডিপুর ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর শেখ জানান, অএ ইউনিয়নে আওয়ামী নামদারী কিছু কুচক্রী মহল জামায়াত নেতার টাকা খেয়ে অনুষ্ঠানে সফল করার লক্ষে ওখানে গিয়েছিলো। এজন্য প্রকৃত আওয়ামীলীগ হিসাবে এর তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল পাটোয়ারী জানান, জামায়াতের অর্থদাতা আবুল কালামের বাড়ি আমার বাড়ি থেকে ১০কিঃমিঃ দুরে। উনাকে আমি চিনি না জানিনা। আর সেই অনুষ্ঠানে কোন দাওয়াতও আমি পাইনি।
৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিতরন অনুষ্ঠানের সভাপতি সামছুল ইসলাম সুমন জানান, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) সংসদীয় আসনের এমপি ও লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন আমাকে ফোন দেওয়ার কারনে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছি। প্রোগরামে গিয়ে দেখি আমাকে সভাপতি রাখা হয়েছে। এছাড়া এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
পৗর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বেলাল আহমেদ জানান, আবুল কালাম একসময় জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল৷ এটা স্থানীয় অনেকের মাধ্যমে জানতাম। তবুও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আসছেন তাই গিয়েছি।
এ বিষয় জানতে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) সংসদীয় আসনের এমপি ও লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।