জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে জামায়াত

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।  এতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

এর আগে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ জামায়াত আমির। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাকিদের বলেন, ‘আমাদের সবার দাবি ছিল অর্থবহ একটি সংস্কার হবে। এই সংস্কার ও বিচারের মধ্য দিয়েই একটা অর্থবহ নির্বাচন হবে।’

তিনি সেদিন বলেন, ‘আমরা বলেছি দুটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। গ্রহণযোগ্য সংস্কার হতে হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। আমরা মনে করি সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপের ঘোষণা হলে অনেকটাই সংশয় কেটে যাবে।’




ভারত হামলা চালিয়ে যেভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বাড়িয়ে দিল

২০২৩ সালের ৯ মে পাকিস্তানের বড় বড় শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তাঁরা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা পর্যন্ত করেছিলেন।

লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ছিল রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর, লাহোরে একজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডারের বাসভবন (যেটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়) এবং আরও কিছু স্থাপনা ও স্মৃতিস্তম্ভ।

ওই বিক্ষোভকারীরা মূলত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থক ছিলেন। তাঁরা তাঁদের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন।

ইমরান খানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে দুর্নীতির অভিযোগে আটক করা হয়েছিল।

ইমরান খানকে ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ে মুক্তি দেওয়া হলেও ওই বিক্ষোভগুলোকে সেনাবাহিনীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে একটি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়।

পাকিস্তানে সেনাবাহিনীকে দীর্ঘদিন ধরে সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যারা প্রায় সব ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব বজায় রেখে আসছে।

এর ঠিক দুই বছর পর, ২০২৫ সালের ১১ মে, হাজার হাজার মানুষ আবার রাস্তায় নামেন। কিন্তু এবার তাঁরা মাঠে নামেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের প্রশংসা করতে ও তাদের সমর্থন জানাতে।

গত সপ্তাহে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র সামরিক সংঘর্ষ হয়। উভয় পক্ষই একে অপরের স্থাপনাগুলোয় আক্রমণ চালায়।

১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে এত বড় সংঘাত আর দেখা যায়নি।

প্রায় যুদ্ধের পর্যায়ে পড়া এই সংঘাতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ প্রভাব স্পষ্ট। সেটি হলো সেনাবাহিনীর প্রতি জনসমর্থন তীব্রভাবে বেড়েছে। সেনাবাহিনীকে ভারতীয় আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষাকারী শক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গ্যালাপ পাকিস্তানের একটি জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের ১১ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ৫০০ জনের বেশি উত্তরদাতার মধ্যে ৯৬ শতাংশ মনে করেন, পাকিস্তান এই সংঘর্ষে জয়ী হয়েছে।

আল–জাজিরাকে দেওয়া প্রাথমিক তথ্য ও জরিপের প্রবণতা অনুযায়ী, ৮২ শতাংশ মানুষ সেনাবাহিনীর কার্যক্রমকে ‘অত্যন্ত ভালো’ বলে মূল্যায়ন করেছেন। আর মাত্র ১ শতাংশের কম মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ৯২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, এই সংঘর্ষের কারণে তাঁদের সেনাবাহিনীর প্রতি ধারণা আরও ইতিবাচক হয়েছে।

‘কালো দিবস’ থেকে ‘ন্যায্য যুদ্ধের দিন’-এ রূপান্তর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরের দিন, ১১ মে পাকিস্তানের শহরগুলোয় মানুষ গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।

তাঁরা জাতীয় পতাকা ওড়ান এবং সেনাবাহিনী, বিশেষ করে সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরের প্রশংসা করে পোস্টার বহন করেন। বাতাসে ছিল উল্লাস আর স্বস্তির আবেশ।

এর আগের চার দিন ধরে পাকিস্তান তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে এক উত্তেজনাপূর্ণ সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে ছিল।

৭ মে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলাকারীদের হাতে ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর ভারত এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

এতে কমপক্ষে ৫১ জন নিহত হন, যাঁদের মধ্যে ১১ জন সেনাসদস্য ও বেশ কয়েকটি শিশু ছিল।

পরের তিন দিন ধরে এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ একে অপরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও আর্টিলারি নিক্ষেপ করে। এটি উপমহাদেশের ১৬০ কোটি মানুষকে সর্বাত্মক যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে যায়।




শিল্পকারখানায় ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে মূল্য দিতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘শিল্পকারখানায় ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। জলাধার ও নদীদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং শিল্পকারখানার ব্যবহৃত পানি রিইউজ (পুনর্ব্যবহার) করতে বাধ্য করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আজ শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর শহরের পিটিআই মিলনায়তনে ‘নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়াম ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ঢাকার চারটি নদী দখল-দূষণমুক্ত করার চুক্তি করে কর্মপরিকল্পনা দিয়ে যাব। কারণ, এগুলো আমাদের সময়ে করতে পারব না। তবে আমাদের সময়ের মধ্যেই তুরাগ নদের পুনরুদ্ধার শুরু হবে।’

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই নদী নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, গাজীপুরের ওপর দিয়ে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, বানার, চিলাই, লবণদহ, শালদহ, গোয়ালী, তুরাগ, বংশী, বালু, গোয়াল্লার, পারুলীসহ আরও কয়েকটি ছোট নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে। রয়েছে অনিন্দ্যসুন্দর বোলাই, মকশ বিলসহ কয়েকটি স্বাদুপানির জলাধার। দখল-দূষণে বিপর্যস্ত থাকা সত্ত্বেও এখনো এসব নদী-নদী ও জলাধার নিজ জেলা তো বটেই, আশপাশের অঞ্চলগুলোর সমাজ-সংস্কৃতিতে প্রভাব রেখে চলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই জেলার পানির গুণগত মান কমছে। কোথাও কোথাও পানিতে দ্রবণীয় অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্যের ঘরেও চলে যাচ্ছে। এর জন্য নদীদূষণ সর্বাংশে দায়ী। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নদী ও জলাভূমিকে রক্ষা করার পথ খুঁজতে আজকের এই আয়োজনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়াম থেকে ১৬টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেটির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান, গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার চৌধুরী মো. যাবের সাদেক প্রমুখ।

 




মাওবাদীদের বিরুদ্ধে বিজেপি সরকারের এই ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ কেন

ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে মাওবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দেশটির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে, তা কার্যত এক রণাঙ্গনে পরিণত হয়েছে। রাজ্যের করিগাট্টা পাহাড়ি জঙ্গলে মোতায়েন করা হয়েছে ১০ হাজারের বেশি সেনা। হেলিকপ্টারসহ তল্লাশি চলছে গভীর বনাঞ্চলে। ‘অপারেশন জিরো’ বা ‘অপারেশন কাগার’ নামে পরিচিত এই অভিযানকে মাওবাদী দমনের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এ অভিযান সরাসরি পরিচালনা করছে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। তারা ছত্তিশগড়ের রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র—উভয় স্তরেই ক্ষমতায় রয়েছে। এ বছরের শুরু থেকেই সরকার মাওবাদীদের ওপর দমন–পীড়ন জোরদার করেছে। নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০১ জন বিদ্রোহী। নিহত ব্যক্তিদের অনেকেই আদিবাসী। শুধু গত বুধবারেই মারা গেছেন ২৭ জন, যাঁদের মধ্যে মাওবাদী সংগঠনের সর্বশেষ সাধারণ সম্পাদক নম্বালা কেশবা রাও রয়েছেন।

তবে মানবাধিকার সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো এই অভিযানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, ‘মাওবাদী’ আখ্যায় অনেক নিরীহ আদিবাসীকেও হত্যা করা হচ্ছে। তারা সরকারের কাছে যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।

সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০০০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মাওবাদী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১১ হাজারের বেশি মানুষ, যাঁদের মধ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও। এর মধ্যে নিহত বিদ্রোহীর সংখ্যা অন্তত ৬ হাজার ১৬০ জন।

মাওবাদীরা কারা, কী চায় তারা

ভারতে সশস্ত্র মাওবাদী আন্দোলনের সূচনা হয় ১৯৬৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়িতে কৃষকদের এক বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে। এই ‘নকশাল’ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন চারু মজুমদার, কানু সান্যাল প্রমুখ। তাঁদের দাবি ছিল—ভূমিহীন কৃষকদের জমি দিতে হবে এবং জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এই আন্দোলন থেকেই জন্ম নেয় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী), যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে সশস্ত্র বিদ্রোহে বিশ্বাস করত। চীনা নেতা মাও সে–তুংয়ের বিপ্লবী দর্শন ছিল তাদের মূল অনুপ্রেরণা। তবে সময়ের সঙ্গে এই দল ভেঙে যায় বহু অংশে। মূল সিপিআই (এমএল) এখন একটি নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়।

বিজেপির আগ্রাসী রণকৌশল

ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন (২০২০-২০২৩) ১৪১ জন বিদ্রোহী নিহত হন। কিন্তু বিজেপি সরকার আসার পর ২০২৪ সালেই নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৩ জনে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই বলছেন, ‘এখন চূড়ান্ত পর্ব চলছে, আমরা দ্রুত নকশালমুক্ত ভারতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এই অভিযান ঘিরে নিয়মিত মাঠে যাচ্ছেন, সেনা শিবিরে রাত কাটাচ্ছেন। তাঁর ঘোষণা—২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে ভারতকে ‘নকশালমুক্ত’ করে তোলা হবে।

বর্তমানে শুধু বস্তার অঞ্চলেই রয়েছে সরকারের ৩২০টি নিরাপত্তা শিবির। শিবিরগুলোতে সব মিলিয়ে আছে প্রায় ৩০ লাখ নিরাপত্তাকর্মী। গোটা ছত্তিশগড়ে মোতায়েন রয়েছে ৬৬ হাজারের বেশি নিরাপত্তাকর্মী। ড্রোন, থার্মাল ইমেজিং, উপগ্রহ-নিরীক্ষণসহ নানা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি চলছে ঘন জঙ্গলে।

অভিযোগ: আদিবাসীদের ভুয়া এনকাউন্টারে হত্যা

তবে এ অভিযান নিয়ে সবচেয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে। ‘পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ’-এর মতে, গত দেড় বছরে অন্তত ১১টি ভুয়া এনকাউন্টারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যেমন মার্চে বিজাপুর জেলার বর্ডগা গ্রামে তিনজন বিদ্রোহীকে গুলি করে হত্যার দাবি করে পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় লোকজন বলেন, ওই তিনজনকে রাতে তুলে নিয়ে গিয়ে পরে গুলি করে ‘মাওবাদী’ তকমা দেওয়া হয়।

২০১২ সালে সাড়েকে গুডা গ্রামে ১৭ আদিবাসী এবং ২০১৩ সালে ৮ জন আদিবাসী নিহত হন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে। পরবর্তী তদন্তে উচ্চ আদালতের বিচারকেরা জানান, নিহত সবাই নিরপরাধ ছিলেন। অথচ আজও কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি।

মাওবাদীদের সক্ষমতা কি কমে আসছে

২০১১ সালে ছত্তিশগড়ের তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক বিশ্বরঞ্জন অনুমান করেছিলেন যে বস্তার অঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার সশস্ত্র মাওবাদী এবং ৪০ হাজার জন মিলিশিয়া সদস্য সক্রিয় ছিল। যদিও এই সংখ্যাগুলো নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা বেশ কঠিন। সেই সময় মাওবাদীরা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ভয়াবহ হামলা চালাতে সক্ষম ছিল। ২০১০ সালে তারা ছত্তিশগড়ের এক বনাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৭৬ জন আধাসামরিক সদস্যকে হত্যা করে। তিন বছর পর আরেকটি হামলায় বহু মানুষ নিহত হন, যাঁদের মধ্যে কংগ্রেস নেতাও ছিলেন।

বর্তমানে বস্তারের আইজিপি সুন্দররাজ পি জানাচ্ছেন, এখন প্রায় এক হাজার সশস্ত্র মাওবাদী এবং তাদের সঙ্গে জড়িত আরও ১৫ হাজার ব্যক্তি সক্রিয় আছেন।

মাওবাদীদের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে যে তাদের সদস্য সংগ্রহ কমে গেছে। ইউনিটগুলো ছোট হয়ে গেছে এবং গোলাবারুদের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। একসময় যে কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরোতে ৪০ জন সদস্য ছিল, এখন তার মধ্যে কেবল ১৮ জন মুক্ত আছেন। বাকি সবাই গ্রেপ্তার হয়েছেন বা নিহত।

ছত্তিশগড়ে মাওবাদীরা দুর্বল হয়ে পড়েছে ঠিকই, কিন্তু তারা পাশের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে আবার প্রভাব বিস্তার করছে। মাওবাদ হচ্ছে একটি আদর্শ—একে কেবল শক্তি দিয়ে শেষ করা যাবে না। যত দিন না অর্থনৈতিক বৈষম্যহীন সমাজ গড়া যায়, তত দিন এই আদর্শ নতুনরূপে ফিরে আসতে পারে




বিক্ষোভের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের

ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।

আজ সোমবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে দেওয়া পোস্টে এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়, আজ সোমবার (৭ এপ্রিল ২০২৫) দিনব্যাপী বিক্ষোভ হতে পারে। গাজায় সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকাসহ সারা দেশে গণবিক্ষোভে অংশ নেওয়া এবং প্রতিবাদ দেখানোর পরিকল্পনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সম্ভাব্য যানজট ও দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদ সমাবেশের কারণে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলের সেবা সীমিত করবে।




মেট্রোরেলের দুই পদের মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) টিকিট মেশিন অপারেটর ও কাস্টমার রিলেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। টিকিট মেশিন অপারেটর পদে ১৩৯ জন এবং কাস্টমার রিলেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে ৬৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ১০ ফেব্রুয়ারি ডিএমটিসিএলের দিয়াবাড়ি কার্যালয় থেকে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করতে হবে। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের খুদে বার্তার মাধ্যমেও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হবে।




সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের ১৯১ পদের লিখিত পরীক্ষার সূচি প্রকাশ

সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ১১তম-২০তম গ্রেডের ৩৬ ক্যাটাগরির ১৯১টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩৬ ক্যাটাগরির ১৯১টি পদের লিখিত পরীক্ষা ১৮ এপ্রিল এবং ২ ও ১৬ মে অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

লিখিত পরীক্ষার সময় ও তারিখ প্রার্থীর মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমেও জানানো হবে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এই ওয়েবসাইট

 




নতুন বছরে বিমানের টিকিটে ১০ শতাংশ ছাড়

নতুন বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিটে বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী বিমানের ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপস থেকে টিকিট কিনলে যাত্রীরা ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন।

আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম।




বিসিএসে নিয়োগ: পুরোনো ধারায় ২২৭ জন বাদ

আওয়ামী মতাদর্শী না হওয়ার কারণে ২৮তম বিসিএস থেকে ৪২তম বিসিএস পর্যন্ত পিএসসির সুপারিশ করা অনেক প্রার্থী নিয়োগবঞ্চিত হয়েছিলেন। এই বঞ্চিতদের মধ্য থেকে ২৫৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত সোমবার ৪৩তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই নিয়োগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশ পাওয়া ২৬৭ জনকে বাদ দেওয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, এর মধ্যে ২২৭ জন প্রার্থীর বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার বিরূপ মন্তব্য রয়েছে। এ কারণে তাঁদের সাময়িকভাবে নিয়োগের অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয়েছে। বাকি ৪০ জন স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নেননি।

জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ নিয়ম হলো, কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধ, দাগি অপরাধী বা এ–জাতীয় কোনো অপরাধ থাকলে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করার কথা। কিন্তু বাস্তবে বছরের পর বছর ধরে প্রার্থী বা তাঁদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খোঁজা হয়। চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, তাতে এ ধরনের ব্যবস্থা বন্ধ হবে বলে অনেকের আশা ছিল। কিন্তু বাস্তবে এখনো তা বন্ধ হয়নি।

এবার ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে ২২৭ জনকে বাদ দিয়ে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর নানা আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও অনেকে নানা মন্তব্য করছেন। বাদ পড়া প্রার্থীরা এ নিয়ে সরব হয়েছেন। বিষয়টিকে আমলে নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত ২২৭ জনের মধ্যে যে কেউ পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে তা গ্রহণ করা হচ্ছে। পুনর্বিবেচনার আবেদন করার সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত।

কী কারণে এসব প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য পিএসসি সাময়িকভাবে ২ হাজার ১৬৩ জনকে মনোনীত করে গত বছরের ২৫ জানুয়ারি সুপারিশ করে। এরপর বিধি অনুযায়ী পুলিশের বিশেষ শাখা এবং জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রার্থীর প্রাক্‌–চরিত্র যাচাই-বাছাই করে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং এজেন্সির প্রতিবেদন বিবেচনায় ৫৯ জন মিলিয়ে মোট ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে বাকি ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে গত ১৫ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর পর থেকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এই নিয়োগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বচ্ছ প্রার্থী নির্ধারণ এবং সরকারি নিয়োগপ্রক্রিয়ায় আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ৪৩তম বিসিএসের সুপারিশপ্রাপ্ত ২ হাজার ১৬৩ জনের বিষয়ে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের মাধ্যমে প্রাক্‌-চরিত্র পুনরায় অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এনএসআই ও ডিজিএফআই থেকে ২ হাজার ১৬৩ জন প্রার্থীর উপযুক্ততা বা অনুপযুক্ততা বিষয়ে প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২২৭ জন প্রার্থীর প্রাক্‌–চরিত্র বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য পাওয়া যায়। ২২৭ জন প্রার্থীর বিষয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে সাময়িকভাবে নিয়োগের অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয় এবং তাঁদের বিষয়ে অধিকতর যাচাই ও খোঁজখবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জনকে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয়। এ অবস্থায় গত ৩০ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮৯৬ জনের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

চাকরিবিশেষজ্ঞ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকলে, জেল খাটলে বা দাগি সন্ত্রাসী হলে পুলিশ রেকর্ড উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেবে। প্রতারণা করে চাকরি নিলে সেটাও এই বিবেচনায় নিতে হবে। কিন্তু এ–জাতীয় অপরাধ ছাড়া অন্য কোনো বিবেচনায় বা রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে বাদ দেওয়া যায় না। কিন্তু এটি অতীতেও হয়েছে, বর্তমানেও হয়েছে। এটা কোনোভাবেই উচিত না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত।




হানিফ উড়ালসড়কে কামরুল হত্যাকাণ্ডে দুই কিশোর গ্রেপ্তার

রাজধানীর সায়েদাবাদে হানিফ উড়ালসড়কে কামরুল হাসান (২৩) হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে যাত্রাবাড়ীর করাতিটোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের একজনের বয়স ১৭, অন্যজনের ১৬ বছর বয়স।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বুধবার কামরুল হাসান রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে সায়েদাবাদ এলাকায় হানিফ উড়ালসড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন কয়েকজন ছিনতাইকারী তাঁর গতিরোধ করেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে চায়। তাতে বাধা দিলে একজন ছিনতাইকারী ধারালো চাকু দিয়ে কামরুলের বুকে আঘাত করে। এরপর তারা তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে কামরুলকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় কামরুলের বাবা ইমাম হোসেন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তার দুজন পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা যাত্রাবাড়ীতে হানিফ উড়ালসড়কসহ আশপাশের এলাকায় পথচারীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করত। মূলত মাদক সেবনের টাকা জোগাড়ের জন্য ছিনতাই করত।