What can the new monetary policy do?

Disclosure:

Spread the love

বাংলাদেশের মতো অনেক বিকাশমান অর্থনীতিতেই কভিড-পরবর্তীকালে, বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মূল্যস্ম্ফীতি অনেকটা প্রধান সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে নীতিভ্রম, আর্থিক খাতে তারল্য সংকট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা, এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতায় সুশাসনের অভাব সাধারণ মানুষের জীবনমানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। নিম্ন সুদহার যেমন ক্ষুদ্র আমানতকারীদের নিরুৎসাহিত করছে, সেই সঙ্গে নিম্ন সুদে ভুল খাতে টাকা গিয়ে ঋণখেলাপি সংস্কৃতিকে চরমভাবে উৎসাহিত করছে।

আগেই যেমনটি বলেছি, শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রায় সারাবিশ্বে এক নম্বর সমস্যা এখন মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। বাংলাদেশে আবার ডলারের সংকটও এক বিরাট সমস্যা। সমস্যার সমাধানে মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জিনিসপত্র অতিরিক্ত ক্রয় নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যাতে মানুষ প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য না কেনে। অন্যদিকে পণ্যের জোগান বাড়িয়ে ফেলা যায়।

এ দুটি ব্যবস্থা দিয়ে সাধারণত যে কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বাজারে যে পরিমাণ অতিরিক্ত তারল্য থাকে, সেটি ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। সারাবিশ্বে তা-ই ঘটছে। এখন মানুষের চাহিদা বেড়ে গেছে। এই অতিরিক্ত চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এটি করতে হলে অন্য অনেক দেশের মতো নীতি সুদহার বাড়াতে হবে।

এটিও আবার মনে রাখতে হবে- এ সময়ের মূল্যস্ম্ফীতি হলো অনেকটা আমদানি করা মূল্যস্ম্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ব্যবস্থাপনাও খুব জরুরি। আমাদের দেশে একাধিক বিনিময় হার আছে। সেটিকে একটি বিনিময় হারে আনা যায় কিনা ভাবতে হবে।

যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করছে বলে কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এখনও দেখা যায়নি। আমাদের আমদানি অর্থবছরের গেল ছয় মাসে প্রায় ২২ শতাংশ কমেছে। রপ্তানিও বেড়েছে। তবে ডলারের সংকট কাটেনি। ঋণপত্র খোলা, এমনকি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য এখনও বিদেশে টাকা পাঠানো দুরূহ।

অনেকে মনে করেন, আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণই একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না। বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতিতে এটি হবে একটি উন্নয়নমুখী কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বহু লক্ষ্য থাকতে হবে। এটি যেমন উৎপাদনশীল খাতের বিকাশে সাহায্য করবে, তেমনি জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবুজ অর্থায়নও জোরদার করবে।

বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের ক্ষেত্রেও আরও দক্ষতা দেখাতে হবে। সাম্প্রতিককালে মুদ্রানীতি নিয়ে আলোচনায় ক্যানভাস অনেক বড় হয়ে গেলেও, অনেকেই সব মিলিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ মুদ্রানীতি চেয়েছেন। অনেকেই এটিকে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বলতে নারাজ। বলছেন, উন্নয়ন সমর্থক একটি ভারসাম্যপূর্ণ মুদ্রানীতি। যেখানে মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা এবং উন্নয়নকে সমর্থন করা হবে।

জানা কথা, আমাদের অর্থনীতির সামনে মূল্যস্ম্ফীতি আর ডলারের সংকট বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের এই মন্দার ধাক্কা উন্নয়নশীল বিশ্বেও পড়ছে এবং আরও পড়বে। যেসব অর্থনীতির দেশ রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল, তারা আরও বেশি মন্দার কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যেমনটি বলেছি, আমরা ডলারের সংকট মোকাবিলার জন্য এ পর্যন্ত আমদানিকে চেপে রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু এটিও জানা, আমদানিকে এভাবে চেপে রাখলে নিকট ভবিষ্যতে উৎপাদন ব্যাহত হবে। এমনকি রপ্তানি খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই একে বেশিদিন জোর করে চেপে রাখা যাবে না। এ নীতি থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বের হতেই হবে।

বর্তমানে একটি মুদ্রানীতি চলমান। এখন দেখার বিষয় অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে যা ঘটেছে, বিশেষ করে মূল্যস্ম্ফীতির ক্ষেত্রে, তার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাকি ছয় মাসের জন্য নীতিতে কী কী পরিবর্তন আনে। তাদের ভাবতে হবে করণীয় যতটুকুই হোক না, তাতে তারা কী করবে। এটিও সত্য, মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কোথাও শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করে না।

পত্রিকান্তরে জানা গেছে, সরকারের ঋণগুলো পুরোপুরি অর্থায়ন হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এবং এর পরিমাণ ইদানীংকালে বিরাট অঙ্কে বেড়েছে। যা টাকা ছাপিয়ে করা হয়েছে। ফলে রিজার্ভ মানির পরিমাণ বেড়ে যায়, যদিও এর প্রভাব এখনও মূল্যস্ম্ফীতির ওপর বিরাটভাবে পড়েনি। একটি কারণ হয়তো একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে টাকা দিয়েছে, অন্যদিকে বড় অঙ্কের ডলার বিক্রি করেছে। বিপরীতে প্রচুর টাকা ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে এসেছে। মোট মুদ্রা সরবরাহের ওপরে তেমন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু ডলার বিক্রি বাংলাদেশ ব্যাংক আর বেশি দিন করতে পারবে না। রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। সরকারের ঋণও ব্যাপকভাবে বাড়ছে। তাই বাজেট ঘাটতিতে যে অর্থায়ন করা হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আমলে না নিলেও আমরা কয়েকজন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকার বারবার বলছি- মুদ্রানীতিকে মূল্যস্ম্ফীতির কাজে ব্যবহার করতে হলে সুদহারের ওপরে যে ক্যাপ বা সীমা আছে, তা তুলে দিতে হবে। সুদহারের সীমা যদি বাজার বা মূল্যস্ম্ফীতির হারের অনেক নিচে থাকে, তাহলে মুদ্রানীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করবে কীভাবে? মুদ্রানীতি মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজে আসে তখন, যখন সুদহার ওঠানামা করার সুযোগ থাকে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো রেট দুই দফা বাড়িয়েছে। এটি বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই, যদি ঋণের সুদহার অপরিবর্তিত থাকে। ব্যক্তিঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পরোক্ষভাবে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। যদিও এটির কোনো ঘোষণা বা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। সব ব্যাংক তো একভাবে মৌখিক নীতি অনুসরণ করতে পারে না। এ ধরনের মৌখিক নীতি অনেকটাই অস্বচ্ছ, এমনকি ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এটির ওপর ভরসা করতে পারছে না অনেক ব্যাংক।

বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন হার চলছে, সেটিও চলতে পারে না। এটি ডলারের তারল্যে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বারবার বলছে, তারা ভাসমান নীতিতে চলে আসবে। কিন্তু আসছে না। ভাসমান নীতি গত বছরের মার্চের আগেও কার্যকর ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হয়তো বলতে পারে- এটি তো আমরা করিনি, করেছে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। তবে প্রায় সবাই মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আশীর্বাদেই বিভিন্ন বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটিও তেমনি আরেকটি অঘোষিত নীতি।

নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এত লুকোচুরি রেখে আর দু-একজনের মেধার ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে মুদ্রানীতি কার্যকর করবে- সেটিই হবে দেখার বিষয়।

মামুন রশীদ: ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্নেষক

image_pdfimage_print

Latest

What is known about the plane crash in Mauritania with 210 Hajj pilgrims on board?

0
Mauritanian Airlines has dismissed reports that a plane carrying 210 pilgrims from Mauritania crashed on the Red Sea coast as a hoax. The plane crash came as a surprise on Tuesday (May 27)...

The 48th special BCS exam is coming, the number of marks will be 300.

0
There will be a total of 300 marks in the 48th Special BCS exam. Out of this, there will be a 200 marks written exam using the MCQ method. And the oral exam will be 100 marks. Tuesday BCS...

School van driver arrested on charges of attempted child rape

0
Police have arrested a school van driver named Raihan (42) on charges of attempting to rape a child student in Kaliakoir, Gazipur. The accused was apprehended by locals around 12 noon on Tuesday and informed...

Urvashi gets angry after being called 'fake Aishwarya'

0
The 78th Cannes Film Festival ended on May 24. But the criticism of Bollywood's popular model-actress Urvashi Rautela doesn't seem to be going away. For a couple of years, Cannes...

OUTCRY OVER BLASPHEMOUS BLOG LEADS TO ARREST ANNOUNCEMENT

0
Recently, outrage erupted when angry protesters demanded immediate action against anti-Islamic Sylheti blogger Mosammat Afsana Ahmed Busra and his provocative website. The protesters...