Gordon Greenidge-Zahir Abbas coming to Dhaka Lit Fest

ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি এবং বাংলাদেশের সাবেক কোচ গর্ডন গ্রিনিজ আসছেন ঢাকায়। আরও আসছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জহির আব্বাস। আগামী ৫ জানুয়ারি থেকে বাংলা একাডেমিতে শুরু হবে ‘ঢাকা লিট ফেস্ট’। চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই আয়োজনের শেষ দিনে বক্তৃতা দিতে ঢাকা আসছেন এই দুই কিংবদন্তি।

লিট ফেস্টের শেষ দিন ‘আই অন দ্য বল’ নামের একটি সেশনে বক্তব্য রাখবেন গর্ডন গ্রিনিজ। সেই সময় তার সঙ্গে থাকবেন পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটার জহির আব্বাস, বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার ইউসুফ বাবু ও জিম্বাবুয়ের সাবেক ব্যাটার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।

১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জেতা বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন গ্রিনিজ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপেও টাইগারদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। খেলোয়াড় হিসেবেও তার প্রচুর নাম ডাক ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি বিশ্বকাপ জেতার পাশাপাশি ১০৮ টেস্টে ৭ হাজার ৫৫৮ রান ও ১২৮ ওয়ানডেতে ৫ হাজার ১৩৪ রান করেন তিনি।

অন্যদিকে জহির আব্বাসও একই সময়ের খেলোয়াড়। ১৯৬৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর ৭৮ টেস্টে ৫ হাজার ৬২ রান করেছেন তিনি। ৬২ ওয়ানডেতে করেছেন ২ হাজার ৫৬২ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০০’র বেশি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।




Awami League's central committee vacant posts who came

আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের শূন্য পদে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর একটি, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ২৮টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদের ২৭টির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের নতুন চারজন সদস্যের নামও ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষিত কমিটির কার্যনির্বাহী সংসদে পুরনোরাই প্রাধান্য পেলেও নতুন হিসেবে চারজন যুক্ত হয়েছেন। একজনের পদোন্নতি হয়েছে। আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়া সাখাওয়াত হোসেন শফিককেও কেন্দ্রীয় কাযনির্বাহী সদস্য করা হয়েছে। অন্যদিকে, আগের কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়া হারুনুর রশীদকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছে।
রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে গণভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই কমিটি ঘোষণা করেন। রাতে দলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও তিনটি পদ শূন্য রেখে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়। এখনো শূন্য রয়েছে সভাপতিমণ্ডলীর একটি, শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের একটি পদ। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচটি পদ শূন্য রেখে উপদেষ্টা পরিষদ সদস্যদের নামও ঘোষণা করা হয়।

বিকেল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা যোগ দেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে টানা দশমবারের মতো নতুন সভাপতি শেখ হাসিনা এবং তৃতীয়বারের মতো ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। ওই দিন ৮১ সদস্যের কমিটির মধ্যে ৪৮টি পদে মনোনীত নেতাদের নাম ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকটি পদ শূন্য রেখে মনোননীত নেতাদের নাম ঘোষণা করেন দলীয় প্রধান। এর দু’দিন পর নবনির্বাচিত সভাপতিমণ্ডলীর প্রথম বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বরেণ্য ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। একইসঙ্গে দলীয় সভাপতিকে বাকি পদগুলোর মনোনীত নেতাদের নাম চূড়ান্ত করার দায়িত্বও দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা।

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে যারা এলেন: ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী সভাপতিমণ্ডলীর একটি শূন্য পদে জেবুন্নেছা হককে আনা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৯ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে এখনও একটি পদ ফাঁকা রয়েছে। উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে এসেছেন সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। তিনি আগের কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন।

২৭ সদস্যদের কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বিপুল ঘোষ, দীপংকর তালুকদার, অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, আখতার জাহান, ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, মেরিনা জামান, পারভীন জামান কল্পনা, অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমি, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম রব্বানি চিনু, মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং, গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, আজিজুর রহমান ডন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি ও তারিক সুজাত। এর মধ্যে নতুন হিসেবে যুক্ত হয়েছেন অ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, তারানা হালিম, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি ও তারিক সুজাত।

উপদেষ্টা পরিষদে নতুন যারা: উপদেষ্টা পরিষদে নতুন হিসেবে যুক্ত হয়েছেন হারুনুর রশীদ, অধ্যাপিকা সাদেকা হালিম অধ্যাপিকা ড. ফারজানা ইসলাম ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মাজেদা রফিকুন্নেছা। এর মধ্যে হারুনুর রশীদ গত কার্যনির্বাহী সংসদের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন।

বাহাউদ্দিন নাছিমকে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য: দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিমকে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে শেখ হাসিনা এই মনোনয়ন দেন বলে দলের পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

রংপুর মহানগর ও রংপুর জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা: দলের আরেকটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগের রংপুর মহানগর ও রংপুর জেলা শাখার বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন।

রংপুর মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটিতে ডা. দেলোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক ও আবুল কাশেমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। অন্যদিকে, রংপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটিতে এ. কে. এম ছায়াদত হোসেন বকুল আহ্বায়ক এবং অধ্যাপক মাজেদ আলী বাবলু যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন।




Director General of Water Development Board Mahbur Rahman

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন প্রকৌশলী মাহবুর রহমান। আজ রোববার এ পদে যোগ দেন তিনি। এর আগে বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (পূর্ব রিজিয়ন) দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

প্রকৌশলী মাহবুর ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলী (পুর) পদে যোগ দেন।

কর্মজীবনে তিনি তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের নকশা ও পরিকল্পনা, খুলনা-যশোর পানি নিস্কাশন প্রকল্প, গঙ্গা ব্যারাজ সমীক্ষা প্রকল্পসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্প, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দায়িত্ব পালন করেন। ৩৪ বছরের চাকরিজীবনে চীন, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও থাইল্যান্ডে বিভিন্ন সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। তিনি ১৯৬৪ সালে দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (ওউই) আজীবন ফেলো। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।




The camera is counting tigers in the Sundarbans

বাঘ গুনতে সুন্দরবনে বসছে ক্যামেরা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনে চারটি রেঞ্জের ৬৬৫ পয়েন্টে বসানো হচ্ছে দুটি করে ক্যামেরা। কোনো বাঘ, হরিণ, শূকর বা অন্য কোনো প্রাণী ক্যামেরার সামনে দিয়ে গেলে সেই ছবি ও ১০ সেকেন্ডের ভিডিও ধারণ হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। বাঘশুমারির সব তথ্য প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের জুনে।

সুন্দরবনের কালাবগি এলাকায় রোববার ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে বাঘগণনার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে গিয়ে বলেন, বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাঘ সংরক্ষণ জরুরি। বাঘের সংখ্যা এবং বর্তমান অবস্থা জানার জন্য শুমারি হচ্ছে।

উদ্বোধনের পর সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের হলদিবুনিয়া এলাকা থেকে ক্যামেরা স্থাপন শুরু হয়। প্রথম ধাপে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত সাতক্ষীরা ও শরণখোলা রেঞ্জে শুমারি করা হবে। এরপর নভেম্বর থেকে চার মাস শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে করা হবে শুমারি। মোট ৬৬৫টি গ্রিড বা পয়েন্টে ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। বনের গাছের সঙ্গে মাটি থেকে ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। প্রতিটি পয়েন্টে দুটি করে ক্যামেরা থাকবে ৪০ দিন। ১৫ দিন পরপর ক্যামেরার ব্যাটারি ও মেমোরি কার্ড পরিবর্তন করা হবে।

বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প পরিচালক ও সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু নাসের মো. মোহসিন হোসেন জানান, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে কালাবগি ফরেন ফাউন্ডেশনের আওতাধীন খালগুলোর দুই পাশে জরিপ করে বাঘের গতিবিধি ও পায়ের ছাপ লক্ষ্য করার কাজ চলছে। এই খাল সার্ভের মাধ্যমে বাঘের পাগমার্ক বা পায়ের ছাপ দেখা হবে গোটা সুন্দরবনে। ক্যামেরা ট্র্যাপিং ও খাল সার্ভের কাজ সম্পন্ন হলে সব তথ্য-উপাত্ত ঢাকায় বন বিভাগের রিসোর্স ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইউনিটে পাঠানো হবে। সেখানে পর্যালোচনার পর ২০২৪ সালের জুনে বাঘশুমারির ফল ঘোষণা করা হবে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাঘের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ ও বাঘ সংরক্ষণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ২৩ মার্চ ‘সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মধ্যে শুধু বাঘশুমারি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। শুমারির জন্য সম্প্রতি দুই কিস্তিতে এক কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে বন বিভাগ।

প্রকল্প পরিচালক জানান, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য ও অভয়ারণ্য এলাকার বাইরে শুমারি করা হবে। বনের কম লবণাক্ত, মধ্যম লবণাক্ত ও বেশি লবণাক্ত সব এলাকাই জরিপের আওতায় আসবে।

শুমারি দলে থাকা বাঘ গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ বলেন, ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের জন্য বাঘের সংখ্যা জানা খুবই জরুরি। জরিপে যদি দেখা যায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, তাহলে বোঝা যাবে ব্যবস্থাপনা ভালো আছে। যদি দেখা যায় বাঘের সংখ্যা কমেছে, তাহলে বুঝতে হবে ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি আছে। তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তার ধারণা, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা এবার বাড়বে।

ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে সুন্দরবনে বাঘশুমারি হচ্ছে তৃতীয়বারের মতো। এর আগে ২০১৫ ও ২০১৮ সালে একই পদ্ধতিতে বাঘগণনা করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের আগে পায়ের ছাপ দেখে শুমারি করা হতো। ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘ ছিল ১১৪টি। ২০১৫ সালে ছিল ১০৬টি।




This is the time of our language

বায়ান্ন সালের পর থেকে আমাদের সকল আন্দোলন, সমস্ত কিছুর সঙ্গে একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা জড়িত হয়ে গেছে- তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যে কোনো আন্দোলনই মরে যায়। একটা সময় পরে তার আবেদন বা প্রাসঙ্গিকতা আর থাকে না। এ প্রসঙ্গে বলা যায় ফ্রেঞ্চ রেভ্যুলুশনের কথা। এত বড় প্রভাবশালী ঘটনা, অথচ এখন হয়তো সেই দিনটি পালিত হয় কি হয় না, তার ঠিক নেই।

আমাদের জাতিটা বড্ড বেশি বাক্যবাগীশ। সমাজ যে বদলাচ্ছে; সেই বদলের সঙ্গে আমাদের একুশের আন্দোলন-চেতনার যে সমন্বয় করা দরকার, পরিবর্তনটা দরকার- তা আর কেউ ভাবে না। কারণ ভাবলে অনেক কাজ করতে হবে। আমাদের সারাটা দেশ গরিব; মানুষ নিরক্ষর, মানুষের মনে কিছু নেই; কিছু মধ্যবিত্ত যুবক আছে, কিছু কাগজ ও টিভি চ্যানেল আছে। আর একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের কিছু কমিটি আছে। তাই দিয়েই কিছু আয়োজন হয়। কিন্তু যদি বলি, শ্বাসে এবং মূলে আমাদের সমাজের ভেতরে একুশ কি ঢুকেছে? উত্তর না-ই আসবে।

সাতচল্লিশের পর থেকে এখন পর্যন্ত, জনসাধারণ যেখানে ছিল সেখানেই থেকে গেল। আর আমরা আশা করতে থাকলাম, জনসাধারণ একুশের চেতনায় জাগ্রত আছে- তাই কি হয়! আপনি গ্রামের মধ্যে নানান রকমের এটা-ওটা ব্যবসা, এনজিও ঢুকিয়ে দেবেন। তাহলে সেই গ্রামটা কি আর কোনোদিন প্রকৃতির সেই শুদ্ধ সাঁওতাল গ্রাম থাকবে! থাকবে না। প্রত্যেক বছরেই একবার এই যে আমাদের একুশের চেতনা, আমাদের ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরব বলে ঢাক-ঢোল পেটানো হয়; এই ‘আমাদের’ বলতে আসলে কাদের বোঝানো হয়? এই ‘আমাদের’টা আসলে কারা? ‘আমাদের’ শব্দ একটা অত্যন্ত অস্পষ্ট শব্দ। এই শব্দটি দিয়ে বহু কিছু এড়িয়ে যাওয়া যায়।
একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে আমাদের সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখলে মনে হয়, আমরা বিপরীত মেরুতে চলে এসেছি। একুশের চেতনার ঠিক উল্টো জায়গাটিতে এসে আমরা পৌঁছেছি। আমরা টেবিলের এপারে ছিলাম, টেবিলের ওপারে গিয়েছি- এর বেশি কিছু আসলে হয়নি। এরপর হয়তো এসবও হবে না। কিংবা গ্রামদেশে এখন এসবের কিছুই নেই। কেন থাকবে! থাকার কোনো কারণও নেই। একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা মানুষের মধ্যে কাজ যে করবে, সেটা কীভাবে? আজকে প্রায় সত্তর বছর পর কাজ করেছে, তবেই না আগামীতে করবে। তা না হলে মানুষ পিছু হটবে কীভাবে? মানুষ আসলে কেমন করে পিছু হটে?

এ সবকিছু নিয়ে একটা গোলমেলে সাংস্কৃতিক অবস্থা বিরাজ করছে। এর সঙ্গে অর্থনীতির কোনো সাযুজ্য নেই, শিক্ষার কোনো মিল নেই। এসবের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করার প্রথম দায়িত্ব আমরা যারা রাষ্ট্র চালাই, তাদের। তাই বাস্তবতার এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে গ্লানি বা হতাশা ছাড়া আর কিছু নেই। আমি কোনো আশার আলো দেখছি না। কারণ এখানে যা কাজ আছে, যা কাজ হচ্ছে, তাতে কোনো রকম পরিকল্পনা নেই চেতনা সংক্রান্ত। চেতনা আছে শুধু কিছু বুলি আউড়ানো আর টকশোর আস্ম্ফালনে। তবু কিচ্ছু হবে না- এ কথা আমার নয়।

একটা দেশের সংস্কৃতিকে উন্নত করতে না চাইলে এবং চাইলে- দু’ক্ষেত্রেই প্রথম কাজ হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষার অবস্থা ভালো আছে কি মন্দ- এ প্রশ্ন অনেক দিন ধরেই পড়ে আছে। আমাদের উচ্চশিক্ষার বাস্তব কার্যকারিতাও সবার কাছে অনিশ্চিত। একটা মানুষ এত পড়াশোনা করে কী করবে, আদৌ কী করার আছে এ ব্যাপারে; শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারে না। কেউ যদি আমাকে বলে যে, এত হতাশাবাদী হচ্ছো কেন? আমি বলব, আরে বাবা, হতাশাবাদী হবো না কেন!

সবার জন্য একমুখী শিক্ষা মুখে মুখে বলছি। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, ইংলিশ মিডিয়ামের স্কুলগুলোতে বাংলা বইগুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করে পড়ানো হয়। বলা হচ্ছে, সবাইকে একই সিলেবাস পড়তে হবে। এ দেশের বড়লোক, এ দেশের ধান্ধাবাজ, এ দেশের আমলারা দেশটাকে বিদেশিদের বাজার বানাবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এদের মধ্যে সৃষ্টি বলে কিছু নেই। তারা লুটপাটে ব্যস্ত। আমরা তাদের মনঃতুষ্টির একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলছি। রাষ্ট্রটি যে সাধারণ মানুষের নয়- তা ঢাকা শহরের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।

ভাষা নিয়ে আমরা কী করেছি? আমরা মুখে মুখে অনেক কথা বলেছি। কিন্তু ভাষা নিয়ে কাজের কাজ কিছুই করতে পারিনি। যেমন কিছুটা স্ববিরোধী ভঙ্গিতেই আমি বলব, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাকে মাধ্যম করাটাই ভুল হয়েছে। এ কথা বললে লোকে আমাকে দেশদ্রোহী বলবে। বাংলাকে মাধ্যম করার আগে বোঝা দরকার ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কী পড়াই। দর্শন এবং ইতিহাস পড়তে গিয়ে একজন বাংলায় যে বইগুলো পড়ে, তা কি পাঠযোগ্য? বাংলায় দর্শনের ওপরে কোনো ভালো বই নেই। একজন ছাত্র যখন বাংলা বইয়ের মাধ্যমে দর্শনকে বোঝার চেষ্টা করে তখন সেটা অর্থহীন হয়ে পড়ে। সে ইংরেজি না জানার কারণে দর্শন ভালো করে বোঝে না অথবা অপরদিকে অগোছালো বাংলায় দর্শনকে ভুলভাবে বোঝে। বাংলায় ফিলসফির কোনো বই পড়া যায়? কিন্তু এর মানে এই নয় যে, বাংলায় দর্শনচর্চা সম্ভব নয় বা বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা সম্ভব নয়। যত্ন নিয়ে, শ্রম দিয়ে এসবই সম্ভব। আমরা এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব। বাংলা ভাষা অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি ভাষা। আমি মুষ্টিমেয় পণ্ডিতের ওপর অনাস্থা আনতে পারি, কিন্তু বাংলাভাষী কোটি কোটি মানুষের ভাষার ওপর আমার আস্থা গভীর।

বলা হয়েছিল, দেশের মানুষের শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করে দেবে, খাজনাহীন জমি করে দেবে। কিন্তু খাজনাহীন জমি তো দূরে থাক, খাসজমি- সেগুলো যেভাবে ছিল সেভাবেই পড়ে রইল ৫০ বছর ধরে। কী হবে আমাদের এখানে ভাষা চেতনা, কী হবে আমাদের এখানে আদিবাসীদের সমস্যা? এসবের কিছুই ঠিক করা হয়নি এখনও। আর করলে যে ঢাকার নিজেদেরই চলবে না। এটা হচ্ছে, at the cost of one class। তার মানে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে- : the hole country has become the country of few.

তবু বলি যে, বাংলাদেশে অন্ততপক্ষে ৩৪ কোটি হাত তো আছে। তাকে যদি প্রকৃত অর্থে কাজে লাগানো হয়, তাহলে আমাদের জন্য অসম্ভব তো কিছুই নয়। কিন্তু সেই সম্ভবটাকে বাস্তবে পরিণত করতে হলে যে সংস্কারগুলো দরকার, সেগুলো তো করতে হবে। সব হতাশার পরেও আমি মনে করি, ৩৪ কোটি হাত আছে। এমনকি কোনোদিন ঘটবেই না যে, এই হাতগুলো যখন যা করা দরকার তা করে ফেলবে; যে করছে না তাকে ছুড়ে ফেলে দেবে! নিশ্চয়ই করবে।
লেখক
কথাশিল্পী, শিক্ষাবিদ




জাতিসংঘের সামনে একুশ উদযাপন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির পেছনে প্রবাসী বাঙালিদের অবদানের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালিদের অহংকারের একটি বিষয়ও আজ সারাবিশ্বে সমাদৃত। তা হলো জাতিসংঘের সামনে একুশের অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাঙালিরা ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতিসংঘের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন ১৯৯২ সাল থেকে।

১৯৯২ সালের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই শুরু হয় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ প্রক্রিয়া। এর মধ্যে স্প্যানিশ কার্পেন্টার আনা হলো। হোম ডিপো থেকে কাঠ কেটে আনা হলো। শিল্পী সজল পাল, বাঙালির চেতনা মঞ্চের হারুন আলী, আবদুর রহমান বাদশা, ছাখাওয়াৎ আলী, দিলদার হোসেন দিলু, শামীম হোসেনসহ আমরা সবাই মিনারের পাঁচটি স্তম্ভ সাত দিনের মধ্যেই মোটামুটি দাঁড় করাতে সক্ষম হলাম। কিন্তু ৮ ফুট ও ১০ ফুটের দুটি করে চারটি এবং ১২ ফুটের একটি স্তম্ভ মোট পাঁচটি মিনার আমরা কোনোভাবেই দাঁড় করানোর উপায় বের করতে পারছিলাম না। এ রকম একটি সিদ্ধান্ত ভাবা এবং তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া খুবই কঠিন ছিল সে সময়।

১৯৯১ সালে আমেরিকায় এসে ক্ষুণ্ণিবৃত্তির সন্ধান করতে গিয়ে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক বাংলা সংবাদপত্র সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ সম্পাদিত ‘প্রবাসী’তে কাজে যোগ দিই। সেই সুবাদেই পত্রিকার উপদেষ্টা কথাশিল্পী জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, কবি শহীদ কাদরী ও ড. জাফর ইকবালের সঙ্গে অতি অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ঘটে।

‘প্রবাসী’তে কাজ করার পাশাপাশি ‘মুক্তধারা নিউইয়র্ক’ শুরু করতে গিয়ে বাঙালির চেতনা মঞ্চের কয়েকজন তরুণের সঙ্গে প্রথম পরিচয়। শহীদ মিনার স্থাপন করে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও উত্তর আমেরিকা বাংলা বইমেলা আয়োজনের কথা ওদের জানাই। ওরা জানাল, ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’ ১৯৯২ সাল থেকেই এ কার্যক্রম শুরু করতে চায় মুক্তধারা নিউইয়র্কের সঙ্গে যৌথভাবে। তারপর শুরু হলো আলোচনা, কীভাবে এর বাস্তবায়ন হবে।

গত ২৯ বছর ধরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে মুক্তধারা ও বাঙালির চেতনা মঞ্চ অনুষ্ঠান করে আসছে।

১৯৯১ সালের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে নিউইয়র্কে প্রচণ্ড বরফ পড়া শুরু হয়। বাঙালির চেতনা মঞ্চের সদস্য ছাখাওয়াৎ আলীর বাড়ির বেজমেন্টেই শহীদ মিনারের কাজ শুরু করলাম। শিল্পী সজল পাল ১০ দিনের মধ্যে একটি শহীদ মিনার দাঁড় করালেন। সবাই মিলে সজলের বাসায় শহীদ মিনারটি দেখে সিদ্ধান্ত নিই, এ বছর কার্ডবোর্ডের মিনারেই একুশের ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হবে। সবাইকে একুশের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আমন্ত্রণ জানানো হলো। প্রচণ্ড বরফের মধ্যে রাত ১১টা থেকে কথাশিল্পী জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ফরিদা মজিদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতা ফরাছত আলী, প্রবাসী পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, জাসদ নেতা আব্দুল মোসাব্বিরসহ নিউইয়র্ক প্রবাসী শত শত মানুষ সমবেত হন ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে।

ভাষাসংগ্রামী আবদুল মতিন, একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী, কবি শহীদ কাদরী, নির্মলেন্দু গুণ, সৈয়দ শামসুল হক, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রাবেয়া খাতুনসহ জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধারক সরকারের উপদেষ্টা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ, কানাডা প্রবাসী রফিক আহমেদ, ইউনেস্কোর বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ অনেক গুণী ব্যক্তি এই মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে বাঙালির সংখ্যা ও সংগঠকের ধারাবাহিক ক্রমবিকাশে ঘরে ও বাইরে অনেক শহীদ মিনার হলেও জাতিসংঘের শহীদ মিনার উত্তর আমেরিকা অভিবাসীদের কাছে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মতো অমলিন।

১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রস্তাবক মোহাম্মদ রফিক কানাডা থেকে আসেন জাতিসংঘের সামনে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। ১৯৯৯ সালে তারই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জনের পর ২০০০ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনের এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন ইউনেস্কো ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দ। ২০১০ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে পাস হয়- প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ। ২০১১ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিবিদদের যোগ দেওয়া শুরু হয়।

২০১৬ সাল ছিল জাতিসংঘের সামনে একুশ উদযাপনের ২৫ বছর। এ বছর জাতিসংঘের সামনে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে স্থাপিত হয় মাসব্যপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্য প্রদর্শনী। এ বছরই আমার আবেদনে ইউনাইটেড পোস্টাল সার্ভিস থেকে প্রকাশিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর স্মারক ডাকচিহ্ন। ২৪ বছর পর্যন্ত রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতিসংঘের সামনে শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হতো। ২০১৬ সাল থেকে ব্যাপক সংখ্যক আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিবিদের অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে আমেরিকায় দুপুর ১টা ১ মিনিটে শ্রদ্ধা জানানোর প্রথা শুরু হয়।

নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকা থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষার সব সংবাদমাধ্যমসহ লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বাংলা ভাষাপ্রেমী সব বাঙালি অভিবাসী সমাজের নিরবচ্ছিন্ন ভালোবাসা না থাকলে কখনোই এ দীর্ঘ যাত্রা সম্ভব হতো না। আমরা এই বিশেষ দিনে অভিবাসী বাঙালি সমাজের কাছে আবেদন রাখছি, আসুন, আগে নিজের ঘর থেকে শুরু করি নিজ সন্তানদের সঠিক বাংলা শিক্ষাচর্চা। তাহলেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অর্জনের সার্থকতা পাবে।




কোম্পানীগঞ্জে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকের মৃত্যু

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে গত শুক্রবারের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ স্থানীয় সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কের ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মারা যান তিনি। নিহত সাংবাদিক মোজাক্কেরের বড় ভাই ফখরুদ্দিন সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

সাংবাদিক বোরহান দৈনিক বাংলা সমাচার ও বার্তা বাজার অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি। তিনি নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। মোজাক্কের কোম্পানীগঞ্জের চরপকিরায় ইউনিয়নের নোয়াব আলীর ছেলে।

গত শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জের চাপারাশির হাটের পূর্ব বাজারে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় নিউজ সংগ্রহের সময় সাংবাদিক মোজ্জাকেরসহ সাতজন গুলিবিদ্ধ হন। আহত সাংবাদিককে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসাপাতলে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি আইসিইউতে ছিলেন।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন সমকালকে জানান, গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকের মৃত্যুর সংবাদ তিনি শুনেছেন। নিহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কেরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

এছাড়া শোক জানিয়েছেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম সেলিম চৌধুরী।




সবধরনের সম্মানসূচক পদবি হারাচ্ছেন প্রিন্স হ্যারি

সবরকম রাজকীয় উপাধি ও সম্মান হারাতে যাচ্ছেন ব্রিটেনের যুবরাজ হ্যারি। শুক্রবার বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

ঘোষণায় বলা হয়, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এ মর্মে নিশ্চিত হয়েছেন যে, রাজকুমার ও তার স্ত্রী যে জীবন বেছে নিয়েছেন, সেখান থেকে তাদের ওপর অর্পিত রাজপরিবারের জনসেবামূলক দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো পালন করা সম্ভব নয়। তাই রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভির।

প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান আনুষ্ঠানিকভাবে ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স হিসেবে পরিচিত। গত বছর তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সাধারণ জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নিলে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রকে প্রবল ধাক্কা দিয়েছিল। পরিবারের সঙ্হেগ সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করছেন। সে দেশে কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নানা রকম কাজকর্মও শুরু করেছেন দম্পতি।

সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা আগেই দেয়া হয়েছিল। ২০২০ সালের গোড়ার দিকে রানীর সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। রানী তাদের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য এক বছর সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছর পর দম্পতি তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকার সিদ্ধান্ত জানালে রানী এই চিঠিতে তার নির্দেশনা জানান।

বাকিংহ্যাম প্যালেস এক বিবৃতিতে বলেছে, ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স রানীকে নিশ্চিত করেছেন যে, তারা রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে আর ফিরে আসবেন না। রানী এই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে চিঠিতে বলেছেন, তাদের পক্ষে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন যখন সম্ভব হবে না, তখন তাদের পদবি ও সম্মান প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।

প্রিন্স হ্যারির বেশ কিছু সম্মানসূচক সামরিক খেতাব রয়েছে। পাশাপাশি তিনি কমনওয়েলথে নিয়োগ কর্মকর্তার দায়িত্বও পালন করছেন। এছাড়া বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন রাজপরিবারের পক্ষ থেকে। তার স্ত্রী মেগানও যুবরাজের স্ত্রী হওয়ার পর কিছু সম্মানসূচক দায়িত্ব ও পদবি পেয়েছেন।




খুলনায় ট্রাকচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

খুলনা মহানগরীর রূপসা সেতুর বাইপাস সড়কে ট্রাকচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্মাণাধীন নতুন কারাগারের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, রায়েরমহল বড় মসজিদ এলাকার মো, শহিদের ছেলে সাইফুল (৩৫) ও রায়েরমহল পশ্চিমপাড়া এলাকার মোল্লা শরিফুলের ছেলে মোল্লা নাঈম (২৬)। নিহত সাইফুল মোটরসাইকেল গ্যারেজের কর্মচারী ও নাঈম দিনমজুর ছিলেন।

হরিনটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, রায়েরমহল এলাকা থেকে মোটরসাইকেলটি খুলনার জিরো পয়েন্টের দিকে যাচ্ছিল। নির্মাণাধীন কারাগারের অদূরে বাইপাস সড়কে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয় যশোরগামী একটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই দুই আরোহী নিহত হন।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি দ্রুত পালিয়ে যায়। এছাড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।




ঢাকা-সিলেট ছয় লেন রাস্তার দরপত্র প্রক্রিয়া চলছে: পরিকল্পনামন্ত্রী

ঢাকা-সিলেট ছয় লেন রাস্তার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মূলত চার লেন নয়, দুটি সার্ভিস লেনসহ এটি ছয় লেন প্রকল্প। এই প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার মাদকদ্রব্য নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) সিলেট শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সিলেট কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে বিগত ১২ বছরে সারাদেশের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে মন্ত্রী বলেন, বহুল প্রত্যাশিত সিলেট-সুনামগঞ্জ রেল সংযোগ স্থাপন করা হবে। হাওরের মধ্য দিয়ে রেললাইন যাবে। প্রথমে সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ ও পরে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন বাড়ানো হবে।

সিলেট প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মানস কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং কাসমির রেজার পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিলেট লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য বনমালী ভৌমিক, বাংলাদেশ বেতার সিলেটের পরিচালক জাহিদ হোসেন, প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, জেলা কমিটির সভাপতি হেলাল আহমদ, দৈনিক জৈন্তা বার্তার সম্পাদাক ফারুক আহমদ, বিটিভির সিলেট জেলা প্রতনিধি মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, অমিতা বর্ধন, শাহনুর হোসেন প্রমুখ।