লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতার হত্যা মামলায় বিএনপির ১৯ নেতাকর্মী কারাগারে

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে যুবলীগ নেতা মিরাজ হোসেন পাটোয়ারীকে হত্যা মামলায় বিএনপির ১৯ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. এ কে এম আবুল কাশেম এ কারাদণ্ড দেন।
মামলার নথিপত্র গোপন রেখে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতে ওই আসামিদের জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি জসীম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, এ হত্যা মামলার আসামি রায়পুর উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজু, বিএনপি নেতা বাচ্চুসহ ১৯ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৯ অক্টোবর রাতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মিরাজ হোসেন পাটোয়ারীকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নিহতের মা রানী বেগম বাদী হয়ে ৪০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
পরে পুলিশ তদন্ত করে ৩৯জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে ২ মাসের জামিন পান আসামিরা। ২০১৩ সালের ১৭ জানুয়ারিতে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে আবারো জামিন চাইলে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে পুনরায় ৬ মাসের জামিন পান তারা। পরবর্তীতে আদালতে হাজির না হওয়ায় হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে একই আদেশ বহাল রাখে আদালত।




লক্ষ্মীপুরে জাতীয় স্যানিটেশন ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিত

 লক্ষ্মীপুর: ‘পরিচ্ছন্ন হাত, সুন্দর ভবিষ্যৎ’ এ স্লোগান নিয়ে লক্ষ্মীপুরের জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস-২০১৭ পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আয়োজনে বুধবার (২৫ অক্টোবর) র্যালি ও আলোচনা সভার মাধ্যমে পালন করা হয়। সকালে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে লক্ষ্মীপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।পরে ওই স্কুলের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নির্বাহী প্রকৌশলী জহির সোহেল এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোস্তফা খালেদ আহম্মদ,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম, উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) মীর শওকত হোসেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চাকমা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান প্রমুখ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল জাব্বার, কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রঞ্জিত কুমার পাল,জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর রামগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ, সদর উপজেলা প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন, রামগতি ও কমলনগর উপজেলা প্রকৌশলী বেগম মনিকা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীবৃন্দ।




জেএসসিতে আধা ঘন্টা আগে পরীক্ষার্থীদের হলে ঢুকতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী

আসন্ন জেএসসি ও জেডিসিতে সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে সম্পন্নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আধা ঘন্টা আগে হলে প্রবেশের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

সচিবালয়ে মঙ্গলবার (২৪শে অক্টোবর) শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত এবং ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভায় এ কথা বলেন তিনি।

সভায় জেএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত এবং ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, প্রশ্নপত্র পাসের গুজব ছড়ানো রোধ, ফেসবুকে প্রশ্ন সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রশ্নপত্র মুদ্রণ, বিতরণ, সংরক্ষণ ও পরীক্ষা গ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।

সভায় জানানো হয়, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে মোবাইল কোর্ট চালু থাকবে। পরীক্ষায় কোন অনিয়ম বা প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে।

সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার সকল শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর আধা ঘন্টা আগে পরীক্ষার হলে ঢুকতে হবে। সকল শিক্ষার্থী পরীক্ষার হলে ঢোকার পর প্রশ্নপত্র খোলা হবে। তিনি বলেন, পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা কোন ব্যক্তি কোন মোবাইল ফোন সাথে রাখতে পারবেন না। শুধুমাত্র পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব যোগাযোগের জন্য একটি সাধারণ ফোন সাথে রাখতে পারবেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ পরীক্ষায় যাতে কোন অনিয়ম, নকল বা প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা না ঘটে সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। এবার আরো উন্নত শৃঙ্খলা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান, বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানগণ, পুলিশ, র‌্যাব, সিআইডি ও এনএসআই প্রতিনিধি এবং জনপ্রশাশন, স্বরাষ্ট্র, তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন ।

এবারের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা ১ই নভেম্বর শুরু হবে এবং ১৮ই নভেম্বর শেষ হবে।




বিশ্ববাসীকে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতেই হবে : জর্ডানের রানি

জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ বলেছেন, শুধু মানবিক কারণে নয়, ন্যায় বিচারের স্বার্থে মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ববাসীকে দাঁড়াতেই হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে সে মানবিকতা দেখিয়েছে এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানায়।
একইসঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জর্ডান ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে পাশে থাকবে বলেও জানান তিনি।

কক্সবাজারে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন জর্ডানের রানি। এসময় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনকে গণহত্যা আখ্যায়িত করে জর্ডান সরকারের পক্ষ থেকে নিন্দা জানান তিনি।

সোমবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে সরাসরি উখিয়ার কুতুপালংয়ে পৌঁছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন জর্ডানের রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ। এসময় তিনি মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের অবস্থা দেখেন। পরে কুতুপালং এ জাতিসংঘের যেসব সংস্থা রোহিঙ্গাদের সাহায্য করছে, তাদের সাথে বৈঠকে করেন। রানি রানিয়া আল আবদুল্লাহ ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআরের পরিচালিত রোহিঙ্গা শিশুদের লার্নিং স্কুলও পরিদর্শন করেন। এছাড়া বিভিন্ন ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রম পদিরর্শন করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সর্বশেষ সহিংসতার শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।




কমলনগরের জলোচ্ছ্বাসে নিখোঁজ তিন রাখাল ভোলায় উদ্ধার

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলগনগরের মেঘনা নদীতে জেগে ওঠা চরকাঁকড়া থেকে জলোচ্ছ্বাসে নিখোঁজ ৩ জন রাখালকে উদ্ধার করা হয়েছে ভোলার ইলিশা থেকে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে কমলনগর মহিষ খামার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান স্বপন তাদের জীবিত উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে রোববার (২২ অক্টোবর) রাতে ওই তিন রাখালের সন্ধান পেয়ে খামার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদককে অবগত করেন তাদের স্বজনরা।

উদ্ধার হওয়া রাখালরা হলেন- উপজেলার পাটারিরহাট ইউনিয়নের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে আবদুর জাহের (৫০), চর ফলকন গ্রামের কালু পলোয়ানের ছেলে হান্নান (৩৫) একই গ্রামের দুলালের ছেলে মো. বাহার (২৫)।

স্বজনদের বরাত দিয়ে কমলনগর মহিষ খামার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান স্বপন বলেন, তারা জলোচ্ছ্বাসের মুখে পড়ে স্রোতের অনুকূলে ভাসতে ভাসতে ভোলার ইলিশার উপকূলে গিয়ে পৌঁছায়। শনিবার স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করেন।

এর আগে শুক্রবার (২০ অক্টোবর) নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মেঘনায় জেগে ওঠা চরকাঁকড়া থেকে ৬শ’ মহিষ, ১ শ’ গরুসহ ওই তিন রাখাল ভেসে যান।




খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে সুষমা

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর রবিবার রাত ৮টায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ বৈঠকে বসেন তিনি।

বৈঠকে খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. মইন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ৭ সদস্য উপস্থিত রয়েয়েছেন।

এর আগে, সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেন সুষমা। এছাড়া রাতে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গেও তার সাক্ষাতের কথা রয়েছে।




নিষেধাজ্ঞা শেষে ফের ইলিশ শিকারের প্রস্তুতি জেলেদের

লক্ষ্মীপুর: ইলিশ শিকারে সরকার নির্ধারিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রোববার (২২ অক্টোবর) রাত ১২টায়। প্রজনন মৌসুম শেষ হলে দেশের অন্য স্থানের মতো লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতেও জেলেদের মাছ শিকারে আর কোনো বাধা থাকবে না। ফের নদীতে ইলিশ শিকারে যাবে লক্ষ্মীপুরের প্রায় ৬০ হাজার জেলে।
ইতোমধ্যে জেলেরা বেশ প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন। অবসর সময়ে ঠিকঠাক করিয়েছেন জাল-নৌকাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রাত ১২টার পর থেকে জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে যাবেন।
১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ছিল ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম। এ ২২ দিন লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। নিষেধাজ্ঞা থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় মাছ ধরা বন্ধ ছিল। এসময় মাছ শিকার, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি ছিল নিষিদ্ধ। এ আইন আমান্য করায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকশ জেলের জেল-জরিমানা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করা হয়েছে লাখ লাখ মিটার কারেন্ট জাল।
সরেজমিনে ঘুরে ও বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। বিগত বছরের চেয়ে চলতি ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ নির্বিঘ্নে পোনা ছাড়তে পেরেছে। জেলেরা নদীতে নামেননি। প্রশাসন, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ ছিল অনেক বেশি তৎপর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিষিদ্ধ সময় মাছ ধরা থেকে বিরত থাকায় জেলেদের ভিজিএফ সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও লক্ষ্মীপুরের ৬০ হাজার জেলে তা পায়নি। এসময় জেলেরা ধার-দেনা করে সংসার চালিয়েছেন, তবুও নদীতে মাছ শিকারে যাননি।
স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেঘনা নদীতে মাছ ধরাই তাদের একমাত্র পেশা। নদীতে মাছ ধরতে না পারায় তাদের অলস সময় পার করতে হয়েছে। নির্ধারিত এই ২২ দিন তাদের সংসার কষ্টে কেটেছে। মহাজনদের কাজ থেকে তাদের টাকা নিতে হয়েছে। হাট-বাজার থেকে বাকিতে চাল-ডাল কিনেছেন।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জেলেরা বলেন, সুযোগ থাকলেও নদীতে নামিনি। গত কয়েক বছর ডিমওয়ালা ইলিশ না ধারায় নদীতে প্রচুর ইশিল পেয়েছি। অতীতের ধার-দেনাও পরিশোধ করেছি।
চর কালকিনি গ্রামের জেলে রইজল মিয়া বলেন, অভিযানের সময় যদি সরকার আমাদের চাল-ডাল দিয়ে সহযোগিতা করতো তাহলে কেউ ঝুঁকি নিয়ে নদীতে শিকারে যেতো না।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। এরই মধ্যে তারা নৌকা মেরামত, ছেঁড়া জাল ঠিকঠাক করে নবউদ্যোমে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেও জানান।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা যায়, আশ্বিন মাসের বড় পূর্ণিমার আগের চার দিন, পূর্ণিমার দিন ও পরের ১৭ দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশের প্রজনন সময়। এসময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ এসে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ডিম ছাড়ে। একটি বড় ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। বেশি ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যে নিবিঘ্নে যাতে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারে সে জন্যই ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্লাহ বলেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুমের নির্ধারিত সময় শেষ হবে ২২ অক্টোবর রাত১২ টায়। এর পর থেকে মাছ শিকারে কোনো বাধা থাকবে না। প্রজনন মৌসুমে আইন অআন্য করায় ১৪ জন জেলের জেল ও দুজনের জরিমানা করা হয়েছে।
খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ৩৭ হাজার ৩২৬ জন জেলেকে সরকার ভিজিএফ সহায়তা দেবেন বলেও জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।




প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘ মহাসচিবের ফোন

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।

শনিবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আন্তোনিও গুতেরেস টেলিফোনে প্রায় ২০ মিনিট কথা বলেন। তারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেন।

এ সময় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে তাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নিতে এবং তাদের নিরাপদ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ থেকে মিয়ানমারকে চাপ দিতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।

গেল মাসে জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দেয়া ৫টি প্রস্তাব বাস্তবায়নে জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া ফোন করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গা সংকটে ধারাবাহিকভাবে সম্পৃক্ত থাকা এবং সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবকে বলেন, আপনি যথেষ্ট সচেতন আছেন এই সমস্যার মূল মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও পাওয়া যাবে মিয়ানমারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং এর বাস্তবতা জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানাতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিউইর্য়ক সফর করবে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান খুঁজতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মিয়ানমার পাঠাচ্ছি।

এ সময় স্রোতের মতো লাখ লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে পালিয়ে আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সেবার জন্য বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের প্রশংসাও করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও বিশ্ব সম্প্রদায়কে পক্ষে আনতে ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।

সাম্প্রতিক সময়ে আসা ৬ লাখ সহ ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে এসব রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিয়েছে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় এনজিওগুলোকে কক্সবাজার এলাকায় কাজ করতে পুরোপুরি প্রবেশাধিকার দেয়ার কথা এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানান প্রধানমন্ত্রী।




কমলনগরে ৩ রাখাল নিঁেখাজ, ভেসে গেছে ৭০০ গরু-মহিষ

 

লক্ষ্মীপুর  : লক্ষ্মীপুরের কমলগনগরের মেঘনা নদীতে জেগে উঠা চর কাঁকরা থেকে জলোচ্ছ্বসে ৩ জন রাখাল নিখোঁজ হয়েছেন। এসময় ওই চর থেকে তীব্র জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে ৬০০ মহিষ ও  ১০০ গরু। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে গরু-মহিষ রাখার কিল্লা। নদীতে ভাসতে দেখা গেছে মৃত গরু ও মহিষের বাচ্চা।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের মেঘনা নদীতে জেগে উঠা কাঁকরার চরে ফিরোজ বাঘার মহিষ কিল্লা থেকে রাখাল ও গরু-মহিষ ভেসে যায়। এতে নিখোঁজ হয় তিন জন রাখাল।

নিখোঁজ রাখালরা হলেন- পাটারিরহাট ইউনিয়নের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে আবদুর জাহের (৫০), চর ফলকন গ্রামের কালু পলোয়ানের ছেলে হান্নান (৩৫) একই গ্রামের দুলালের ছেলে মো. বাহার (২৫)।

কমলনগর মহিষ খামার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজিরহাট উপকূল ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান স্বপন তিনজন রাখাল নিখোঁজ ও ৭০০ গরু-মহিষ নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

জানা গেছে পাটারিরহাট ইউনিয়নের মো. ফিরোজ বাঘার ২০০ মহিষ, ফলকন ইউনিয়নের শফিকুল ইসলামের ১০০ মহিষ, গরু ২০টি। একই গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ১০০ মহিষ, নুর নবী বাঘার ১০০ মহিষ, দুলাল বাতানের ৫০ মহিষ, ৩৫টি গরু, জসিমের ১০০ মহিষ, শাহ আলমের ২৫টি মহিষ, গরু ৩টি, সালাহ উদ্দিনের মহিষ ৫০টি, আলা উদ্দিনের ৩০ মহিষ ও গরু ৫টি, জামাল উদ্দিনের ২০টি মহিষ, গরু ৫টি জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায়। এর পর থেকে গরু ও মহিষগুলো নিখোঁজ রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত মহিষ মালিক ও চরে কিল্লা স্থাপনকারী মো. ফিরোজ বাঘা বলেন, জেগে ওঠা ওই চরে ৭ লাখ টাকায় নির্মিত কিল্লা তৈরী করে ১০জন মালিক প্রায়  ১ হাজার মহিষ ও দুইশতাধিক গরু লালন-পালন করে আসছেন। শুক্রবার গভীর রাতে জলোচ্ছ্বাসে কিল্লা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এসময় ৩ জন রাখাল ও প্রায় ৭০০ গরু মহিষ ভেসে যায়। এর পর থেকে ওই ৩ জন রাখাল নিঁেখাজ রয়েছে। ভেসে যাওয়া গরু মহিষেরও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

পাটারিরহাট, ফলকন  ও কালকিনি ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ের বাসিন্দারা জানান, জোয়ারের সাথে বেশ কিছু মহিষের মৃত বাচ্চা ও গরু ভেসে যেতে দেখা গেছে।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, এ ব্যাপারে কেউ এখনো থানায় জানায়নি।

 




অতিবৃষ্টি, তীব্র জোয়ারে কমলনগর-রামগতি প্লাবিত

 

লক্ষ্মীপুর : নিন্মচাপের প্রভাবে অতিবৃষ্টি ও তীব্র জোয়ারে রামগতি ও কমলনগরের অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে উপকূলীয় রাস্তাঘাট। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে ৪ হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৬ শতাধিক কাঁচা ঘর, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ২ শতাধিক পরিবার। তীব্র জোয়ারে মেঘনা জেগে উঠা চর আবদুল্লাহ থেকে ১৫০টি মহিষ নিখোঁজ হয়। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও উপড়ে পড়েছে গাছপাল। এদিকে মেঘনা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কমলনগর মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ পড়েছে মারাতœক হুমকির মুখে। ভাঙনের শিকার হয়েছে অন্তত ৫০টি পরিবার।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয়ে শনিবার (২১ অক্টোবর) বিকাল পর্যন্ত টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরের উপকূলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

 

অতিবৃষ্টি, ঝড় ও তীব্র জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম ইউনিয়নগুলো হলো-রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার, চর আলগী, চর আবদুল্লাহ, চর রমিজ, বড়খেরী, চর গাজী। কমলনগর উপজেলার চর ফলকন, সাহেবেরহাট, চর কালকিনি, পাটারিরহাট, চর মার্টিন, চর লরেন্স, হাজিরহাট, চর কাদিরা ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়। এসব ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ের প্রায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

রামগতি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ জানান, অতিবৃষ্টি, ঝড় ও তীব্র জোয়ারে রামগতির উপকূলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার চর আলগী, চর আবদুল্লাহ, চর রমিজ, বেড় খেরী ও চর গাজী ইউনিয়নের প্রায় ৬শ’ কাঁচা ঘর-বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। বসত ঘরের উপর গাছ চাপা পড়ে সুরাইয়া বেগম নামের এক নারী আহত হয়েছেন। চর আলগী ও রড়খেরী ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার দুইটি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। চর আবদুল্লাহ থেকে তীব্র জোয়ারের প্রায় ১৫০টি মহিষ ভেসে গেছে। এর মধ্যে ১১টি মহিষ উদ্ধার করে বড় খেরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানের জিম্মায় রাখা হয়। মাছ চাষিদের প্রায় শতাধিক মাছের ঘের জোয়ারে ভেসে গেছে। বেশ কিছু গাছ পালা উপড়ে পয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের মাঠ ও সবজি খেত।

এদিকে,কমলনগরের ফলকন, কালকিনি, পাটারিরহাট ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নে নদী ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত দুই দিনের ভাঙনে ৫০ পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। বিলীন হয়েছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। মারাতœক হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীর রক্ষা বাঁধ। আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে কমলনগরবাসী। এ উপজেলাতেও জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে দুই  হাজার পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে।

কমলনগরে চরফলকন ইউনয়িন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাজী হারুনুর রশিদ, সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, কালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফ উল্লাহ ও পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজু বলেন, অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ৪টি ইউনিয়নের সব কয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্ধি হয়েছে শত শত পরিবার।