যারা আল্লাহর ভয়ে কাঁদে, তাদের সম্পর্কে নবীজি যা বলেন

প্রকাশঃ

Spread the love

আল্লাহর ভয়ে নির্গত চোখের পানির মূল্য আল্লাহর নিকট অনেক বেশি। হাদিসে এসছে, ‘আল্লাহর নিকট দুটি ফোঁটা ও দুটি চিহ্নের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কিছু নেই। এক. আল্লাহর ভয়ে নিঃসৃত অশ্রুফোঁটা। দুই. আল্লাহর রাস্তায় নির্গত রক্তের ফোঁটা।’ (তিরমিজি : ১৬৬৯)

যার চোখ থেকে আল্লাহর ভয়ে পানি নির্গত হয়, জাহান্নামের আগুন তাকে স্পর্শ করবে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারীর জাহান্নামে যাওয়া এমন অসম্ভব, যেমন দোহনকৃত দুধ পুনরায় ওলানে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আর আল্লাহর পথের ধুলা ও জাহান্নামের ধোঁয়া কখনও একত্রিত হবে না।’ (তিরমিজি : ১৬৩৩)

অন্য হাদিসে , ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না। এক. আল্লাহর ভয়ে যে চোখ ক্রন্দন করে। দুই. আল্লাহর রাস্তায় যে চোখ পাহারা দিয়ে বিনিদ্র রাত কাটায়।’ (তিরমিজি : ১৬৩৯)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, যে মুমিন বান্দার দুচোখ থেকে আল্লাহর ভয়ে পানি বের হয়, যদি তা মাছির মাথার পরিমাণও হয়, এবং তা চেহারা বেয়ে পড়ে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। (ইবনে মাজাহ, কিতাবুজ জুহুদ: ৪১৯৭) হাশরের কঠিন দিনেও আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারীর জন্য বিশেষ ঘোষণা রয়েছে হাদিসে। সেদিনের কঠিন পরিস্থিতিতে সাত শ্রেণির মুমিন আরশের নিচে আশ্রয় পাবেন। তাদের এক শ্রেণি সম্পর্কে রাসুল (স.) বলেন, ‘ওই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণের সময় তার দুই চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে।’ (বুখারি: ৬৬০; মুসলিম: ৭১১)

রাসুলুল্লাহ (স.) সাহাবিদের বেশি বেশি কান্না করার উপদেশ দিতেন। কেননা মহাপ্রতাপশালী আল্লাহ যেখানে গুনাহের শাস্তি হিসেবে বান্দাকে মুহূর্তেই ধ্বংস করে দিতে পারেন, সেখানে রহমত করছেন, বান্দাকে দিয়ে যাচ্ছেন অবারিত সুযোগ-সুবিধা; ভাবতেই তো মুমিনের চোখ দিয়ে পানি চলে আসার কথা। তাই তো রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন— ‘..আল্লাহর শপথ! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা খুব কম হাসতে, বেশি কাঁদতে এবং বিছানায় স্ত্রীদের উপভোগ করতে না, বাড়ী-ঘর ছেড়ে পথে-প্রান্তরে বেরিয়ে পড়তে এবং চিৎকার করে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে যে- আল্লাহর শপথ! হায়, আমি যদি একটি গাছ হতাম এবং তা কেটে ফেলা হত!’ (ইবনে মাজাহ: ৪১৯০; মেশকাত: ৫৩৪৭; সহিহাহ: ১৭২২)

অতএব আমাদের উচিত, মহান আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে কৃত গুনাহর জন্য ইস্তেগফার করা, তওবা করা। ইনশাআল্লাহ, এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ আমাদের সব পাপ সাফ করে দেবেন এবং জাহান্নাম হারাম করে দেবেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর অন্তরে তাঁর ভয় জাগ্রত করে দিন। তাঁর আদেশ নিষেধ পুরোপুরি মেনে চলার তাওফিক দিন। আমিন।

image_pdfimage_print

সর্বশেষ

মৌরতা‌নিয়ার ২১০ হজযাত্রীসহ বিমান বিধ্বস্তের বিষয়ে যা জানা গেল

0
মৌরতা‌নিয়ার ২১০ হজযাত্রীকে বহনকারী একটি বিমান লোহিত সাগরের উপকূলে বিধ্বস্ত হওয়ার খবরটি গুজব বলে দাবি করেছে মৌরতা‌নিয়ান এয়ারলাইন্স। মঙ্গলবার (২৭ মে) হঠাৎ বিমান বিধ্বস্তের খবর...

আসছে ৪৮তম বিশেষ বিসিএস, পরীক্ষা হবে ৩০০ নম্বরের

0
৪৮তম বিশেষ বিসিএসে মোট ৩০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। আর মৌখিক পরীক্ষা হবে ১০০ নম্বরের। মঙ্গলবার বিসিএস...

শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে স্কুল ভ্যানচালক আটক

0
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে রায়হান (৪২) নামে স্কুলের ভ্যানচালককে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয়রা অভিযুক্তকে আটক করে খবর দিলে...

‘নকল ঐশ্বরিয়া’ বলে কটাক্ষ, চটেছেন উর্বশী

0
এবার ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব শেষ হয়েছে সেই ২৪ মে। কিন্তু সমালোচনা যেন ছাড়ছে না বলিউডের জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলার। বছর দুয়েক ধরে কান...

ব্লাসফেমা ব্লগের প্রতিবাদে গ্রেফতারের ঘোষণা

0
সম্প্রতি ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা ইসলামবিরোধী সিলেটি ব্লগার মোসাম্মত আফসানা আহমেদ বুসরা এবং তার উস্কানিমূলক ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা...