বিশ্ব আসরে ‘ডার্ক হর্স’ তকমা নিউজিল্যান্ডের জন্য অপরিচিত নয়। কিন্তু দিন শেষে সবচেয়ে ধারাবাহিক দলগুলোর ছোট তালিকাতেই থাকে তারা। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ব্যতিক্রম নয়। শুধু ট্রফিটাই ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। সর্বশেষ তিনটি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলা একমাত্র দল নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ২০২১ সালে ফিরতে হয়েছে রানার্সআপ হয়ে। সেটাই এখন পর্যন্ত দলটির সেরা অর্জন।
এবারও ফেবারিট তকমা হয়তো সেভাবে নেই, তবে ভারসাম্যপূর্ণ দলটিকে কেউ হিসাবের বাইরে রাখতে চাইবেন না। নিউজিল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চারটি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন উইলিয়ামসন। চোট, বিশ্রাম আর পিতৃত্বকালীন ছুটি মিলিয়ে অবশ্য দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকে দূরে ছিলেন। ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নিউজিল্যান্ডের প্রথম ৩৫টি টি–টোয়েন্টির মধ্যে মাত্র দুটিতে খেলেছিলেন উইলিয়ামসন।
দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিউই নির্বাচকেরা যে অভিজ্ঞতাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন, সেটা সর্বশেষ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সঙ্গে এবারের দলটিকে মেলালেই বোঝা যায়। গত আসরের দল থেকে বাদ পড়েছেন মাত্র দুজন—মার্টিন গাপটিল আর অ্যাডাম মি। তাঁদের জায়গায় সুযোগ পাওয়া রাচিন রবীন্দ্র ও ম্যাট হেনরির এটাই হতে চলেছে প্রথম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
১৫ সদস্যের দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ টিম সাউদি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক সাউদি খেলবেন সপ্তম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অন্যদিকে সাউদির দীর্ঘদিনের বোলিং সঙ্গী ট্রেন্ট বোল্টের এটি হবে পঞ্চম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সাউদি–বোল্ট জুটির সঙ্গে লকি ফার্গুসন ও ম্যাট হেনরিকে নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ যেকোনো দলকে ঝামেলায় ফেলতে পারে। দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিমি নিশাম ও ড্যারিল মিচেলও ক্যারিবীয় কন্ডিশনে কার্যকরী হতে পারেন।
স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপসও বেশ ধারাবাহিক। ছন্দে আছেন লেগ স্পিনার ইশ সোধিও। চোটের কারণে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিস করা আরেক স্পিন অলরাউন্ডার মাইকেল ব্রেসওয়েলও দলে ফিরেছেন। শীর্ষ সারির ক্রিকেটাররা আইপিএলে ব্যস্ত থাকায় গত এপ্রিলে পাকিস্তান সফরে যায় দ্বিতীয় সারির দল, তাতে নেতৃত্ব দেন ব্রেসওয়েলই। পূর্ণ শক্তির পাকিস্তানের বিপক্ষে সে সিরিজ ড্র করে নিউজিল্যান্ড।
ব্যাটিং লাইনআপও বেশ শক্তিশালী। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত শুরু এনে দিতে পারেন ফিন অ্যালেন। রবীন্দ্রও পাওয়ারপ্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান তুলতে পারেন। চোটের কারণে আইপিএল মিস করা ডেভন কনওয়ে ফিরবেন বিশ্বকাপ দিয়ে। দলের প্রথম পছন্দের উইকেটকিপারও কনওয়ে। টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডারে দলের হাল ধরতে আছেন উইলিয়ামসন ও মিচেল। শেষ দিকে মার্ক চ্যাপম্যান, ফিলিপস, নিশামরা বদলে দিতে পারেন ম্যাচের গতিপথ। সাম্প্রতিক সময়ে ফিনিশারের ভূমিকায় দারুণ করেছেন চ্যাপম্যান, যা নিউজিল্যান্ডের জন্য বাড়তি পাওনা।